০৫ অগাস্ট ২০২৫, মঙ্গলবার, ০২:১৯:৪৩ পূর্বাহ্ন
রাজশাহীতে বৃষ্টির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সবজির দাম
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৪-০৮-২০২৫
রাজশাহীতে বৃষ্টির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সবজির দাম

রাজশাহীতে বর্ষাকালে বৃষ্টির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে কাঁচা সবজির দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে সবজিভেদে প্রতি কেজিতে দাম বেড়েছে ১০ থেকে ৩০ টাকা। কেবল আলুর দাম কেজিতে ৫ টাকা কমে ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।


আজ সোমবার সকালে নগরের সাহেববাজার মাস্টারপাড়া কাঁচাবাজারে কথা হয় রাজমিস্ত্রির জোগালি মনির হোসেনের সঙ্গে। এক কেজি পটোলের দাম ৫০ টাকা শুনেই তিনি মাথা নেড়ে বললেন, ‘এই পানিতে ঢ্যাঁড়স-পটোল সবকিছুরই দাম তো আগুন রে ভাই। কয় দিন আগেও দেড় শ ট্যাকা লইয়া বাজারে গিয়া ব্যাগ ভরা তরকারি লইয়া আনতাম। এখন ওই দামে তিনডা জিনিসও জোটে না। ওপর থেইক্য বৃষ্টি, নিচ থেইক্য দাম।’


পটোলের দাম আগের তুলনায় ২০ টাকা বেড়েছে বলে জানালেন মনির। তাঁর দাবি, দুই দিন আগেই তিনি পটোল কিনেছেন ৩০ টাকায়।


নগরের সাহেববাজার, নিউমার্কেট ও বিনোদপুর কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, এক সপ্তাহে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচের দাম ১২০ থেকে বেড়ে ১৫০ টাকা, প্রতি কেজি পেঁপে ২০ থেকে বেড়ে ৩৫ টাকা, পটোল ৩০ থেকে বেড়ে ৫০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৩০ থেকে বেড়ে ৫০ টাকা, বেগুন ৬০ থেকে বেড়ে ৭০ টাকা, করলা ৫০ থেকে বেড়ে ৬০ টাকা, কচুর লতি ৫০ থেকে বেড়ে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।


বাজারে এসেছে কিছু মৌসুমি নতুন সবজি। প্রতি কেজি মুলা বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, আর ফুলকপি কেজিপ্রতি ১০০ টাকা দরে। তবে ক্রেতার স্বস্তির খবর, একমাত্র আলুর দাম ৫ টাকা কমে এখন কেজিতে ২০ টাকা।


রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আল-আমিন আজ সকালে বাজারে এসে কিছুটা হতাশ। বিনোদপুর বাজারে তিনি বললেন, ‘বেগুনের দাম তো হাই ছিলই। সেটা খাওয়া বাদ অনেক দিন ধরে। ঢ্যাঁড়স আর পটোলের দামও বেড়ে গেছে। একটি ছোট লাউও ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।’


বাজারে সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বেড়েছে বলে জানালেন কাঁচাবাজার ব্যবসায়ী আবদুস সাত্তার। তিনি বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে অনেক সবজি মাঠেই পইচা গেছে। সরবরাহ কম। এই কারণে দাম বাড়ছে। তবে গত বছরের তুলনায় এখনো কিছু কিছু আইটেম সস্তা আছে। কিন্তু বৃষ্টি চলতে থাকলে দাম আরও বাড়ব।’


শুধু সবজি নয়, ডিমের দামও বেড়েছে। প্রতি হালি সাদা ডিম এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়, আর লাল ডিম ৪৪ টাকায়। তিন দিন আগেও এর দাম প্রতি হালিতে ৪ থেকে ৫ টাকা কম ছিল। ডিম ব্যবসায়ী আহমেদ হাদি বলেন, ‘এই কয় দিন আগেও ডিম ৩৪ থেকে ৩৮ টাকায় বিক্রি হইত। এখন আবার বাড়ছে। ৪০ থেকে ৪২ টাকায় থাকলে স্বাভাবিক। কিন্তু এর বেশি হইলে কষ্ট হয় মানুষের।’


এদিকে সোনালি মুরগির দামও কেজিতে ২০ টাকা বেড়েছে। তবে অন্য প্রজাতির মুরগির দামে তেমন হেরফের হয়নি। মাছ, গরু ও খাসির মাংস ও চালের দামও প্রায় একই রয়েছে।


রাজশাহীতে এ বছর বর্ষাকালের শুরু থেকেই বৃষ্টি হচ্ছে। আষাঢ় মাসের প্রায় প্রতিদিনই বৃষ্টি হয়েছে। শ্রাবণ মাসেও সেই ধারা অব্যাহত আছে। অতিবৃষ্টির কারণে খেতের ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।


রাজশাহী আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহীতে এবার আষাঢ়ে প্রায় প্রতিদিনই বৃষ্টি হয়েছে। আষাঢ়ের শেষ দিনে সবচেয়ে বেশি ৯১ মিলিমিটারের অধিক বৃষ্টিপাত হয়। শ্রাবণেও প্রায় প্রতিদিনই অব্যাহত আছে। গত সোমবার রাত থেকে গতকাল রোববার পর্যন্ত ৬০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হয়েছে। গতকাল রোববার রাতেও ২০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হয়েছে।


শেয়ার করুন