আজ (০৫ সেপ্টেম্বর) রশ্রেষ্ঠ শহীদ ল্যান্স নায়েক নূর
মোহাম্মদ শেখের ৫১তম শাহাদতবার্ষিকী । ১৯৭১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর যশোর
জেলার গোয়ালহাটি গ্রামে শাহাদাত বরণ করেন তিনি। এদিন পাকিস্তানি হানাদার
বাহিনীকে প্রতিরোধ এবং দলীয় সঙ্গীদের জীবন ও অস্ত্র রক্ষা করতে গিয়ে শহীদ
হন নূর মোহাম্মদ। যশোরের শার্শা উপজেলার কাশিপুরে তাকে সমাহিত করা হয়।
নূর মোহাম্মদ ১৯৩৬ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি নড়াইল সদর উপজেলার চন্ডিবরপুর
ইউনিয়নের মহিষখোলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা মোহাম্মদ আমানত শেখ ও মা
জেন্নাতুন্নেছা, মতান্তরে জেন্নাতা খানম। বাল্যকালেই বাবা-মাকে হারান
তিনি। সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেন। তবে, মতান্তর রয়েছে। মহিষখোলার
নাম পরিবর্তন করে ২০০৮ সালের ১৮ মার্চ নূর মোহাম্মদ নগর করা হয়।
মুক্তিযুদ্ধকালীন ৮নম্বর সেক্টরের কমান্ডার কর্নেল (অব.) আবু ওসমান
চৌধুরী নূর মোহাম্মদ নগরের উদ্বোধন করেন। নূর মোহাম্মদের কর্মময় জীবন
থেকে জানা যায়, ১৯৫৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি পূর্ব পাকিস্তান রাইফেলসে
(ইপিআর) যোগদান করেন তিনি। বর্তমানে ‘বর্ডার গার্ড অব বাংলাদেশ’ (বিজিবি)
হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। এই বাহিনীতে দীর্ঘদিন দিনাজপুর সীমান্তে চাকরি করার
পরে ১৯৭০ সালের ১০ জুলাই যশোর সেক্টরে বদলি হন তিনি। পরবর্তীতে ল্যান্স
নায়েক হিসেবে পদোন্নতি পান।
১৯৭১ সালে যশোর অঞ্চল নিয়ে গঠিত ৮নম্বর সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন।
এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত ৮নম্বর সেক্টর কমান্ডার ছিলেন কর্নেল (অব.)
আবু ওসমান চৌধুরী ও সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মেজর এস এ মঞ্জুর।
নূর মোহাম্মদ যশোরের শার্শা উপজেলার কাশিপুর সীমান্তের বয়রা অঞ্চলে
ক্যাপ্টেন নাজমুল হুদার নেতৃত্বে পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে দেশ
শত্রুমুক্ত করেন।
এদিকে ২০১৮ সালের ২১ নভেম্বর নূর মোহাম্মদ শেখের স্ত্রী বেগম
ফজিলাতুন্নেসা (৮০) বার্ধক্যজনিত কারণে ইন্তেকাল করেন। নূর মোহাম্মদের
তিন মেয়ে ও এক ছেলে নড়াইল এবং যশোর শহরে বসবাস করেন।
বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের ৫১তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে আজ (৫
সেপ্টেম্বর) সকালে নূর মোহাম্মদ নগরে কোরআনখানি, স্মৃতিস্তম্ভে
পুষ্পমাল্য অর্পণ, পুলিশ কর্তৃক সশস্ত্র সালাম, দোয়া মাহফিল এবং
শিক্ষার্থীদের কুইজ প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে
জানা গেছে।#