দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ থাইল্যান্ডে সড়ক দুর্ঘটনায় ১১ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে দুইজন শিশু। চন্দ্র নববর্ষের ছুটিতে থাইল্যান্ডের মধ্যাঞ্চলে একটি যাত্রীবাহী ভ্যান দুর্ঘটনার কবলে পড়ার পর আগুন ধরে গেলে দুই শিশুসহ ওই ১১ জন দগ্ধ হয়ে মারা যান।
থাইল্যান্ডের পুলিশের বরাত দিয়ে সোমবার (২৩ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
পুলিশ কর্নেল ইংগিওস পোলদেজ বলেছেন, ১২ যাত্রীকে বহনকারী ওই ভ্যানটি উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় আমনাত চারোয়েন প্রদেশ থেকে ব্যাংককের দিকে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে শনিবার রাতে ভ্যানটি মধ্যাঞ্চলীয় নাখোন রাতচাসিমা প্রদেশের একটি হাইওয়ে থেকে ছিটকে পড়ে।
ইংগিওস এএফপিকে বলেছেন, দুর্ঘটনার পর একজন ব্যক্তি জানালা ঝাঁপ দিতে সক্ষম হলেও অন্য যাত্রীরা আগুনে আটকে পড়ে এবং মারা যায়।
বেঁচে যাওয়া ওই যাত্রীর নাম থানাচিট কিংকাউ। ২০ বছর বয়সী এই শিক্ষার্থী বলছেন, দুর্ঘটনার সময় তিনি ঘুমিয়ে ছিলেন তবে অন্যদের চিৎকার শুনে তিনি জেগে উঠেন। তার ভাষায়, ‘আমি জেগে উঠলাম এবং ভ্যানটি উল্টে গেছে বলে বুঝতে পারি। আমি দেখতে পাইনি কি হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘দুর্ঘটনার পর, আগুন পেছন থেকে শুরু করে পুরো ভ্যানটিকে গ্রাস করতে শুরু করে। আমি জানালাতে লাথি মারতে শুরু করি এবং একটি ছোট গর্ত দিয়ে হামাগুড়ি দিয়ে বের হতে আসতে পেরেছিলাম। এর পরপরই, ভ্যানটি বিস্ফোরিত হয়।’
স্থানীয় উদ্ধারকারী দলের স্বেচ্ছাসেবক নিখোম সিউন বলেন, ভ্যানটি আগুনে পুড়ে যাওয়ার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই বিস্ফোরণ ঘটে। তিনি বলেন, ‘আগুন পুরো ভ্যানটিকে গ্রাস করতে ৩০ সেকেন্ডেরও কম সময় লেগেছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার কাছে থাকা অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র দিয়ে আমি কিছুই করতে পারিনি। ভ্যানটি তখন তিন থেকে চারবার বিস্ফোরিত হয়।’
পুলিশ কর্নেল ইংগিওস বলেন, ভ্যানটি জ্বালানি তেল এবং কমপ্রেসড গ্যাস উভয়ই ব্যবহার করত। তবে প্রাথমিক রিপোর্টে দেখা গেছে, ভ্যানের গ্যাস ট্যাংকটি ফুটো হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে জ্বালানির কারণে ভ্যানটিতে আগুন লেগে যায়।
এএফপি বলছে, থাইল্যান্ডে সড়ক দুর্ঘটনা খুবই সাধারণ বিষয়। দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির সড়ক নিরাপত্তা রেকর্ডও বেশ খারাপ। বিশেষ করে ব্যস্ত সরকারি ছুটির দিনগুলোতে থাইল্যান্ডে প্রায়ই সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে থাকে।