চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাই এবং দ্বিতীয় মাস আগস্টে টানা দুই বিলিয়ন ডলার করে রেমিট্যান্স এসেছিল। এরপর টানা ৬ মাস দুই বিলিয়ন ডলারের মাইলফলকে পৌঁছায়নি রেমিট্যান্স। তবে অর্থবছরের নবম মাস মার্চে আবারও ঘুরে দাঁড়ায় প্রবাসীদের পাঠানো এ আয়। এ মাসে অতিক্রম করে দুই বিলিয়ন ডলার।
চলতি মাস এপ্রিলেও রেমিট্যান্স প্রবাহের এ ধারা অব্যাহত আছে। এপ্রিলের প্রথম ৭ দিনে ব্যাংকিং চ্যানেলে ৪৭ কোটি ৬৮ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে দেশে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৫ হাজার ১০৩ কোটি টাকা (প্রতি এক ডলার ১০৭ টাকা ধরে)। অর্থাৎ দৈনিক গড়ে এসেছে ৬ কোটি ৮১ লাখ ২৭ ডলার বা ৭২৯ কোটি টাকা। এ ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি মাস শেষে রেমিট্যান্স ২ বিলিয়ন বা ২০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
চলতি অর্থবছরের নবম আর চলতি বছরের তৃতীয় মাস মার্চে রেকর্ড ২ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স আসে। স্বাধীনতার এ মাসে ২০১ কোটি ৭৬ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার এসেছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ২১ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকার বেশি। এ মাসে প্রতিদিন গড়ে আসে ৬ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার বা ৬৯৬ কোটি টাকা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, চলতি মাস এপ্রিলের প্রথম সাত দিনে মোট ৪৭ কোটি ৬৮ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলারের প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স এসেছে। এর মধ্যে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৬ কোটি ১২ লাখ ১০ ডলার। বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে এক কোটি ২৮ লাখ ৪০ হাজার ডলারের প্রবাসী আয় এসেছে। বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ৪০ কোটি ১৪ লাখ ডলার এবং বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে এক দশমিক ৪৪ মিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স।
তবে আলোচিত সময়ে ৭ ব্যাংকের মাধ্যমে কোনো প্রবাসী আয় আসেনি। ব্যাংকগুলোর মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক বা বিডিবিএল, বিশেষায়িত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক বা রাকাব, বেসরকারি ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে বেঙ্গল কমার্সিয়াল ব্যাংক, কমিউনিটি ব্যাংক, বিদেশি খাতের হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান এবং স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া।
চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই ও আগস্ট) টানা দুই বিলিয়ন ডলার করে রেমিট্যান্স এসেছিল। কিন্তু সেপ্টেম্বর থেকে টানা ছয় মাস দেড় বিলিয়ন ডলারের ঘরেই থেমে যায়। চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসে (জুলাই) এসেছিল ২০৯ কোটি ৬৩ লাখ ডলার, আগস্টে আসে ২০৩ কোটি ৬৯ লাখ ডলার, সেপ্টেম্বরে এসেছিল ১৫৩ কোটি ৯৬ লাখ মার্কিন ডলার, অক্টোবরে ১৫২ কোটি ৫৫ লাখ ডলার, নভেম্বরে ১৫৯ কোটি ৪৭ লাখ ডলার, ডিসেম্বরে ১৬৯ কোটি ৯৬ লাখ মার্কিন ডলার। এরপর জানুয়ারি মাসে এসেছে ১৯৫ কোটি ৮৮ লাখ মার্কিন ডলার, ফেব্রুয়ারি মাসে আসে ১৫৬ কোটি ১২ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স। মার্চ মাসে এসেছে ২০১ কোটি ৭৬ লাখ ডলারের বেশি।
এর আগে ২০২১-২২ অর্থবছরে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে মোট ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ (২১.০৩ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। এটি তার আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৫ দশমিক ১১ শতাংশ কম। ২০২০-২১ অর্থবছরে ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ (২৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন) ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল।