রাজশাহী মহানগরীতে নারী দিয়ে ফাঁদ পেয়ে ব্যবসায়ীকে অপহরণ এবং প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চাঁদা আদায়ের অভিযোগে প্রতারক চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এসময় গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়া নগদ ১০ হাজার টাকা ও ৫টি মোবাইল ফোন উদ্ধার হয়।
গ্রেপ্তারকৃরা হলেন, রাজশাহী মহানগরীর রাজপাড়া থানার ডিঙ্গাডোবা এলাকার মশিউর রহমানের ছেলে মনিপ (২৭), মৃত আতাহার আলীর ছেলে কবির হোসেন খিচ্চু (৩৩), আব্দুল মমিনের ছেলে মুন্না ও মুন্নার স্ত্রী মোসা: হানিফা খাতুন (৩১) এবং কর্ণহার থানার ডাংগের হাট এলাকার মৃত দুলালের স্ত্রী মোসা: ফরিদা বেগম (৪০)।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, সোহাগ (ছদ্মনাম) সে একজন ভাংড়ি ব্যবসায়ী। গত ২৬ মে ২০২২ সন্ধ্যা সোয়া ৭ টায় অপরিচিত একটি মহিলা তাকে ফোন করে বলে তার নাম মোসা: হানিফা খাতুন তার স্বামী ঔষধ কোম্পানীতে চাকুরি করে। তিনি পরিবার-সহ রাজপাড়া থানার ডিঙ্গাডোবা ব্যাংক কলোনী এলাকায় ভাড়া থাকে। তার ভাড়া বাসায় ২-৩ টি নষ্ট ফ্যান, ১ টি পুরাতন সোফাসেট এবং অপ্রয়োজনীয় কিছু কাগজপত্র রয়েছে যা সে সোহাগের কাছে বিক্রি করতে চায়। সে সোহাগকে ঐ রাতেয় তার বাড়িতে আসতে বলে।
সোহাগ রাতে না গিয়ে দিনে যাবার কথা বললে, হানিফা তার স্বামীর সাথে আগামীকাল সকালে বগুড়া জেলায় বদলী সূত্রে চলে যাবে বলে তাই এখনি এসে মালামাল গুলো দেখে যেতে বলে। সোহাগ হানিফার কথা বিশ্বাস করে তার দেওয়া ঠিকানায় পৌঁছিলে আসামি সোহাগকে নিয়ে বাড়ির নিচ তলার একটি রুমে নিয়ে যায়। রুমে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গেই সোহাগকে জড়িয়ে ধরে এবং সেখানে পূর্ব থেকেই ওৎ পেতে থাকা প্রতারক চক্রের ৪ জন সদস্য রুমের মধ্যে প্রবেশ করে।
তারা হানিফার সাথে সোহাগের আপত্তিকর অবস্থায় ছবি তোলে। এরপর সোহাগকে চড়থাপ্পড়, হুমকী ও ফেসবুকে ছবি ছেড়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ৩ লক্ষ টাকা দাবি করে। পরবর্তীতে সোহাগের কাছ থেকে নগদ ৪ হাজার টাকা আদায় করে এবং রাতের মধ্যে আরো ৪০ হাজার টাকা দিতে বলে। বাসায় গিয়ে কোন উপায়ন্ত না পেয়ে সে ধার-দেনা করে আসামিদের ৩০ হাজার টাকা দেয়।
এ ঘটনায় সোহাগ ডিবি পুলিশের কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ প্রদান করেন। এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের সম্মানিত পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক মহোদয়ের নির্দেশনায়, রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার আরেফিন জুয়েলের সার্বিক তত্ত্বাবধায়নে অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি) আব্দুল্লাহ আল মাসুদের নেতৃত্বে পুলিশ পরিদর্শক আবুল কালাম আজাদ, এসআই রবিউল ইসলাম ও তার টিম আসামি গ্রেপ্তারে অভিযানে নামে। ডিবি পুলিশের ঐটিম সোহাগকে সাথে নিয়ে অভিযান পরিচালনার জন্য বাহির হয়।
এসময় আসামীরা সোহাগের মোবাইলে ফোন করলে সোহাগ বাকি টাকা কোথায় নিয়ে আসবে জানতে চায়। আসামিরা হানিফার ভাড়া বাসায় আসতে বলে। এরপর ডিবি পুলিশ সোহাগকে সাথে নিয়ে গত ৩ জুন বিকাল সোয়া ৪ টায় রাজপাড়া থানার ডিঙ্গাডোবা এলাকার হানিফার ভাড়া বাসা হতে আসামিদের হাতে-নাতে গ্রেপ্তার করে। এসময় গ্রেপ্তারকৃত আাসামীদের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়া নগদ ১০ হাজার টাকা ও ৫ টি মোবাইল ফোন উদ্ধার হয়। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।