রাজশাহীর বাগমারায় উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে উর্দ্ধতন কর্তৃকক্ষ। আনিসুর রহমান গত ৬ ফেব্রুয়ারি বাগমারায় উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। বাগমারায় যোগদানের পর থেকে বিভিন্ন অনিয়ম করে আসছিল। সমাজসেবা কর্মকর্তার অনিয়ম নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলে নড়চড়ে বসে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের সূত্র ধরে তদন্ত শুরু হয়েছে।
বুধবার উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত করেন জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের পক্ষ থেকে গঠিত তিন সদস্যের একটি তদন্ত টিম। সমাজসেবা কর্মকর্তা ছুটিতে থাকায় সরাসরি তাঁর সাথে কথা বলতে পারেননি তদন্ত টিমের সদস্যগণ। তদন্তের স্বার্থে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সহ উপজেলা সমাজসেবা অফিসে কর্মরত কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেন। সকাল সাড়ে ১০ থেকে প্রায় দুপুর ২ টা পর্যন্ত বাগমারায় অবস্থান করেন তদন্ত টিমের সদস্যগণ।
সমাজের অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর লোকজনদের স্বাভাবিক ভাবে জীবন যাপনের জন্য সরকারী ভাবে যে ভাতার ব্যবস্থা করা হয়েছে সেই কাজে অর্থ আদায় করে আসছিল। খোলামেলা ভাবে এক প্রচার জোর করেই আদায় করতেন উপহার ভোগীদের নিকট থেকে। সমান্য কয়েক দিনের মধ্যে সমাজসেবা কর্মকর্তার এমন অস্বাভাবিক কর্মকান্ড নিয়ে বিব্রত হয়ে পড়ে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিগণ। এক পর্যায়ে জনপ্রতিনিধিগণের নিকট থেকে ভাতার বিনিময়ে টাকাদাবী করা হয়। বিষয়টি নিয়ে উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভায় চলে নানা গুঞ্জন।
বর্তমানে অনলাইন ব্যবস্থার কারনে ভাতা প্রাপ্তিতে কোথায় অর্থ দিতে হয় না। যে সকল ব্যক্তি এই ভাতা পাওয়ার যোগ্য তাদের দোড় গড়ায় সেবা পৌঁছে দিচ্ছেন সরকার। বিনামূল্যে ভাতার ব্যবস্থা করলেও অসাধু সমাজসেবা কর্মকর্তা অর্থ আদায় করতে থাকে। টাকা না দিলে কোন ভাতার বইয়ে স্বাক্ষর পর্যন্ত করতেন না বলে অভিযোগ তুলেছিলেন জনপ্রতিনিধিগণ।
এমন ঘটনায় গত ২৭ মার্চ উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভায় জনপ্রতিনিধি সহ প্রশাসনের তোপের মুখে পড়েছিলেন সমাজসেবা কর্মকর্তা আনিসুর রহমান। বৃহৎ এই উপজেলায় হাজারো লোকজন সমাজসেবা কার্যালয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকার ভাতা পেয়ে থাকে। নতুন নতুন ভাতার পাশাপাশি মৃত ভাতা ভোগীর নাম পরিবর্তন করে সেখানে অন্য ব্যক্তির নাম সংযোজন করা হয়ে থাকে। সমাজসেবা কর্মকর্তা আনিসুর রহমান যোগদানের পর থেকেই নতুন প্রতিবন্ধী এবং মৃত ব্যক্তির নামের স্থানে অন্য ব্যক্তির নাম সংযোজন করতে জনপ্রতিনিধিদের নিকটে টাকা দাবী করে আসছিল। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিবন্ধী ভাতার এবং নাম পরিবর্তনের ক্ষেত্রে ২ হাজার টাকা নিচ্ছিলেন।
এ ঘটনায় উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আনিসুর রহমানের নিকট মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি কিছু দিন পূর্বে যোগদান করেছি। সমাজসেবা অফিসে আগে থেকেই বেশকিছু অনিয়ম রয়েছে। আমার বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ উঠেছে তা ঠিক না। তিনি নিয়মের বাইরে কোন কাজ করতে পারবেন না বলেও জানিয়েছেন। এটা যেহেতু অফিসের অভ্যন্তরীণ বিষয় তাই গণমাধ্যম কর্মীদের সামনে খোলাখুলি কোন তথ্য প্রকাশ করেননি তদন্ত কর্মকর্তাগণ।