১৯ নভেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ০৮:৫৪:১৬ অপরাহ্ন
যে কারণে বন্ধ গভীর সমুদ্র থেকে তেল খালাস
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৮-০৭-২০২৩
যে কারণে বন্ধ গভীর সমুদ্র থেকে তেল খালাস

শুরুতেই হোঁচট খেয়েছে তলদেশ দিয়ে গভীর সমুদ্র থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল খালাস প্রক্রিয়া। গত সোমবার সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে তেল খালাস শুরু হয়। এর মাধ্যমে তেল খালাসে নতুন যুগে প্রবেশ করে বাংলাদেশ। কিন্তু শুরুর মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ফেটে যায় পাইপলাইন। ফলে বন্ধ হয়ে যায় বহুল প্রতীক্ষিত এই তেল খালাস কার্যক্রম।

এ বিষয়ে ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. লোকমান বলেন, প্রথমবারের মতো গত সোমবার সকাল সোয়া ১০টায় দেশে সরাসরি জাহাজ থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে সমুদ্রের তলদেশ দিয় তেল খালাস শুরু হয়। কিন্তু ওই দিনই বিকাল ৩টার দিকে পাইপলাইনে ত্রুটি দেখা দিলে বন্ধ হয়ে যায় তেল খালাস। যা পুনরায় চালু করা সম্ভব হয়নি।

তিনি বলেন, প্রকল্পটি এখনো পরীক্ষামূলক। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে আমরা এখনো বুঝে নিইনি। যে কারণে ত্রুটি সেরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আমাদের বুঝিয়ে দেবে। এ পদ্ধতিতে জাহাজ থেকে ৭-৮ হাজার টনের মতো তেল খালাস হয়। জাহাজ থেকে বাকি তেল আগের পদ্ধতিতে শিপিং করপোরেশনের লাইটার ট্যাংকারে করে পতেঙ্গার গুপ্তাখাল প্রধান ডিপো এবং ইস্টার্ন রিফাইনারির ট্যাংকে নিয়ে যাওয়া হবে।

তবে আরেকটি সূত্রে জানা গেছে, জাহাজ থেকে খালাস হওয়া তেলের চাপে পাইপলাইন ফুটো হয়ে যায়। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, পাইপলাইনের ত্রুটির কারণেই এমনটা হয়েছে। পাইপলাইন বেয়ে বেশ কিছু তেল সাগরেও মিশেছে। যে কারণে তড়িগড়ি করে তেল খালাস কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ জাহাজ এমটি হোরে ৮২ হাজার টন অপরিশোধিত তেল (ক্রুড অয়েল) নিয়ে সৌদি আরব থেকে মাতাবাড়িতে পৌঁছে গত ২৪ জুন। বৃহদাকার অয়েল ট্যাংকারটি ২২৯ মিটার লম্বা এবং সাড়ে ১২ মিটার ড্রাফটের। ২৫ জুন তেল খালাস শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বৈরী আবহাওয়ার কারণে ২৮ জুন পর্যন্ত কমিশনিং কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়।

এর পর গত রোববার চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে দ্বিতীয় দফায় কমিশনিংয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়। পর দিন সোমবার সকাল সোয়া ১০টা থেকে মাদার ভেসেল থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে তেল খালাস শুরু হয়।

এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল সাংবাদিকদের বলেন, অনেক উন্নত দেশকে টেক্কা দিয়ে গভীর সাগর থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে তেল খালাসের যুগে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ। সৌদি আরব থেকে আমদানি করা ৮২ হাজার টন ক্রুড অয়েলের পরীক্ষামূলক খালাস শুরু হয় গভীর বঙ্গোপসাগরে। ১১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ পাইপলাইন দিয়ে এই তেল আসবে চট্টগ্রামের ইস্টার্ন রিফাইনারিতে। ৮ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পের কারণে তেল খালাসের সিস্টেম লস ও খরচ কমার পাশাপাশি সময় ২৫ দিন কমে মাত্র দুই দিনে নেমে আসবে।


শেয়ার করুন