১৯ নভেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ১১:৩৭:১৮ অপরাহ্ন
ডলার সংকট নিরসনে প্রবাসীদের পেনশন চালু করল মিসর
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৯-০৮-২০২৩
ডলার সংকট নিরসনে প্রবাসীদের পেনশন চালু করল মিসর

ডলার সংকট কাটাতে নতুন পদক্ষেপ নিয়েছে মিসর। প্রবাসীদের কাছ থেকে ডলার সরবরাহ বাড়াতে পেনশন, সামরিক সেবায় ছাড় এবং বিদেশিদের বিনিয়োগে প্রণোদনার মতো পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে মিসর সরকার।


বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৫ হাজার ডলার ফি দিয়ে প্রবাসীদের সামরিক সেবার বাধ্যবাধকতা থেকে মুক্ত করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। 


গত কয়েক মাসে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো ডলারে উচ্চ সুদের বন্ড বিক্রি শুরু করেছে। গত মে মাসে ঘোষিত এক নতুন আইনের আওতায় ন্যূনতম ৫০ হাজার ডলারের সম্পদ ক্রয় বা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে ৫০ হাজার ডলার আমানতের বিপরীতে বিদেশি নাগরিকদের অস্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি দেওয়া হবে।


২০২২ সালে প্রস্তাবিত স্কিম অনুসারে, ভূমি ও কারখানায় বৈদেশিক মুদ্রায় বিনিয়োগ বাড়াতে প্রবাসীদের নগদ অর্থে গাড়ি আমদানিতে কর ছাড় দেওয়া হবে। 


মিসরে বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় দুই বছর ধরে বৈদেশিক মুদ্রা কমে যাচ্ছে। করোনাভাইরাস মহামারি এবং ইউক্রেন সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে টান পড়েছে। 


এ ছাড়া দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার প্রধান উৎস রেমিট্যান্সেও ভাটা পড়েছে। দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চে রেমিট্যান্সের পরিমাণ গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ব্যাপকভাবে কমেছে।


আর্থিক নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের সোমবার দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, পেনশন প্ল্যানে প্রবাসী মিসরীয়রা ন্যূনতম ৫০০ ডলারের পেনশন ফান্ড করলে ৫০ বছর বয়স থেকে  ১০ থেকে ১৫ বছর পর্যন্ত প্রতি মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা পাবেন।


সামরিক সেবা ফাঁকি দিয়ে মিসরের বাইরে অবস্থান করছেন এমন নাগরিকদের গত সোমবার থেকে এক মাসের মধ্যে ৫ হাজার ডলার বা ৫ হাজার ইউরো পরিশোধের মাধ্যমে বাধ্যবাধকতা থেকে মুক্ত হওয়ার সুযোগ দেবে সরকার। এতেও বৈদেশিক মুদ্রা সরবরাহ উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। 


১৯ থেকে ৩০ বছরের প্রত্যেক মিসরীয় পুরুষকে সামরিক সেবায় যোগ দিতে হয়। অনেকে শিক্ষা ও চিকিৎসার জন্য বাইরে যাওয়ার জন্য সরকারের কাছ থেকে অস্থায়ী ছাড় পান। কিন্তু তাঁরা আর ফিরে আসেন না। যারা সামরিক সেবার শর্ত পূরণ করেন না তাঁদের পাসপোর্ট নবায়ন করা হয় না। 


সরকারের প্রস্তাব অনুসারে সামরিক সেবার শর্ত পূরণ করতে পারেননি এমন ৩০ বছরের বেশি বয়সের পুরুষেরা ৫ হাজার ডলার দিয়ে এ ছাড় পাবেন।


মিসরের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, ২০১৮ সালে দেশে অবস্থানরত নাগরিকের সংখ্যা ছিল ৯ কোটি ৭১ লাখ এবং বিদেশে ছিলেন ৮৯ লাখ। এরপর থেকে মিসরে বসবাসরত নাগরিকদের সংখ্যা বড়তে থাকে। বর্তমানে সে সংখ্যা ১০ কোটি ৫ লাখ।


কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে, গত মার্চের শেষ নাগাদ পর্যন্ত দেশটির বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ছিল ১৬ হাজার ৫৪০ কোটি ডলার। যেখানে ২০১৫ সালে ছিল ৪ হাজার কোটি ডলার। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে কমপক্ষে ৫ হাজার কোটি ডলার ঋণ পরিশোধ করতে হবে।


শেয়ার করুন