১৯ নভেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ০৮:৪০:১০ অপরাহ্ন
সোনারগাঁ ও হবিগঞ্জে তিন মামলায় আসামি দেড় হাজার
  • আপডেট করা হয়েছে : ২২-০৮-২০২৩
সোনারগাঁ ও হবিগঞ্জে তিন মামলায় আসামি দেড় হাজার

কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসাবে গত শনিবার বিএনপির পদযাত্রার সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানায় একটি এবং হবিগঞ্জ সদর থানায় দুটি মামলা হয়েছে। এই তিন মামলায় বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের প্রায় দেড় হাজার নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। তিনটি মামলারই বাদী পুলিশ। সোনারগাঁ থানার মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতিকে। এসব মামলায় পুলিশ ১৯ জনকে গ্রেফতার করেছে।


সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) : ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ও সিলেট মহাসড়কের সোনারগাঁ উপজেলার কাঁচপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় রোববার মধ্যরাতে মামলা করেছেন সোনারগাঁ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফিরোজ আহমেদ। মামলায় বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের ১১৩ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাতনামা ৬০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। সোমবার দুপুরে সোনারগাঁ থানার ওসি মাহাবুব আলম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।


পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার বিকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুরে বিএনপির পদযাত্রায় নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ, ধাওয়া-পালটাধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এ সময় বিএনপি নেতা-কর্মীরা কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ, রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষে ১৭ জন গুলিবিদ্ধসহ কমপক্ষে ৪০ জন আহত হয়। ঘটনার পর কাঁচপুর এলাকাজুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করে।


মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিনকে। আরও আসামি করা হয়েছে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সোনারগাঁ থানা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান, সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেনসহ ১১৩ জনকে।


এদিকে মামলা দায়েরের পর পুলিশ সোনারগাঁ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিএনপির দুই নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে। তারা হলেন জামপুর ইউনিয়ন বিএনপির ধর্মবিষয়ক সম্পাদক মো. ইব্রাহিম (৬২) ও বিএনপি কর্মী সুরুজ মিয়া (৫৫)।


নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির একটি সূত্র জানায়, মামলার পর থেকে জেলার ৫টি উপজেলার বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের অধিকাংশ নেতাকর্মী গ্রেফতার আতঙ্কে এলাকা ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।


হবিগঞ্জ : হবিগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপির ৭০০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। সোমবার বিকালে সদর থানার দুজন এসআই বাদী হয়ে বিস্ফোরক এবং পুলিশ অ্যাসল্ট ধারায় দুটি মামলা করেন। মামলাগুলোতে বিএনপির কেন্দ্রীয় সমবায় বিষয়ক সম্পাদক জি কে গউছকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এ ঘটনায় বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ১৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।


সদর থানার ওসি তদন্ত বদিউজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এসআই ওয়াহেদ গাজী বাদী হয়ে বিস্ফোরক আইনে ৯০ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করেছেন। অন্যদিকে এসআই খোরশেদ আলম বাদী হয়ে ৯৭ জনের নাম উল্লেখ করে পুলিশ অ্যাসল্ট মামলাটি করেন। উভয় মামলায় অন্তত আরও ৬০০ থেকে ৭০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি রাখা হয়েছে। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, গত শনিবার কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসাবে জেলা বিএনপি পদযাত্রা কর্মসূচির আয়োজন করে। এতে কয়েক হাজার নেতাকর্মী অংশ নেন। শুরু থেকে কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ ছিল। কর্মসূচি শেষে স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এতে বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হন। আহত হন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অজয় চন্দ্র দেব। তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এসএম আওয়াল, যুবদল নেতা আমিন শাহ, নূর উদ্দিন, ছাত্রদল নেতা সৈয়দ আশরাফ আহমেদ, মনিরুজ্জামান, অলিউর রহমান, সাইফুল রহমান বাবু, সাবের আহমেদ ও অনিক হাসানকে সিলেটে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।


শেয়ার করুন