১৯ নভেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ০৪:২৯:২৫ অপরাহ্ন
পুঠিয়ায় নায়েবের ঘুষ গ্রহণের ভিডিও ভাইরাল, ছাড় পায় না ভিক্ষুকরাও
  • আপডেট করা হয়েছে : ০২-১০-২০২৩
পুঠিয়ায় নায়েবের ঘুষ গ্রহণের ভিডিও ভাইরাল, ছাড় পায় না ভিক্ষুকরাও

রাজশাহীর পুঠিয়ার ইউনিয়ন ভূমি অফিসগুলো যেনো ঘুষের স্বর্গ রাজ্য, টাকা ছাড়া কোনোভাবেই মেলে না সেবা। এমনকি জমির খাজনা দিলেও গুণতে হয় অতিরিক্ত টাকা। অন্যান্য সেবা দিতেও দরদাম করে নেওয়া হয় ঘুষের টাকা। ঘুষের টাকা ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তার মনমত না হলে ঘুরতে হয় দিনের পর দিন, মাসের পর মাস।


অনুসন্ধানের ভিত্তিতে উপজেলার মঙ্গলপাড়া, মোল্লাপাড়া এবং ধোপাপাড়া এলাকার পাইকপাড়া ভূমি অফিসের এমন চিত্র উঠে এসেছে।


উপজেলার পাইকপাড়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের অবস্থা খুব বেশি করুন। ওই অফিসের আওতায় সকল কৃষকরা এক প্রকার জিম্মি হয়ে পড়েছেন নায়েব কামরুজ্জামানের নিকট। পাইকপাড়া ভূমি অফিসের নায়েব কামরুজ্জামানের খোলামেলা ঘুষ গ্রহণের এমন একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এমনকি একই জমির মালিক দুইজনকে দেখিয়ে খাজনা গ্রহণ করার মত ঘটনাও ঘটেছে।


উপজেলার এলাকার দুলাল নামের এক ব্যক্তি বলেন, আমার কাছে খাজনা বাবদ ২৯০০ টাকা দাবি করে। দুইদিন পরে ৬০ টাকার খাজনা চেক দিয়ে ৫০০ টাকা নেয়।


ঝলমালিয়া এলাকার কলিমুদ্দিন মোল্লা তার দুইটি চেকে ৩৩০ টাকা খাজনার রসিদ দেয় অথচ নেয় ১০০০ হাজার টাকা, আরো ১০০০ টাকা দাবি করে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমি মোট ৩টি চেক নিতে যাই। আমার কাছে ১০০০ টাকা ছিল। ২০০০ টাকা না থাকায় ১টি চেক আটকে দেওয়া হয়েছে। আরো ১০০০ টাকা দিলে ওই চেক দিবে।


উপজেলার হাতিনাদা এলাকার অহেদ মোল্লা বলেন, তার নিকট থেকে ৩০ টাকার চেকের রসিদ দিয়ে ২০০ নেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, জোর করে আমাকে ৩০ টাকার রসিদ দিয়ে ২০০ টাকা নিয়েছে।


এ বিষয়ে বড় সেনবাগ এলাকার আব্দুল হাই পিতা আব্দুর রহমান এর কাছ থেকে নেয়া হয়েছে মোটা অংকের টাকা।


এমনকি পাইকপাড়া ভূমি অফিসের নায়েব কামরুজ্জামানের হাত থেকে রক্ষা পায়নি গুচ্ছগ্রামে বসবাস করা অতি দরিদ্র ভিক্ষুকরাও। তাদের নিকট থেকেও নেয়া হয়েছে  ১০০ টাকা আবার কারো নিকট থেকে ১২০ টাকা করে। অথচ উপজেলা ভূমি অফিস থেকে জানা যায়, মাত্র ১০ থেকে ২০ টাকা খাজনা নেয়ার কথা রয়েছে তাদের কাছে।


পাইকপাড়া অফিসে কর্মরত নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক পাইকপাড়া অফিসে কর্মরত একজন বলেন, এই কামারুজ্জামানের কারণে সত্যিই এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে আমরা তার ভয়ে কোন প্রতিবাদ করতে পারিনা। সংবাদ কর্মীরা যদি কিছু করতে পারেন তাহলে অফিসটির খুবই ভালো হতো।


এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে পাইকপাড়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের নায়েব কামরুজ্জামান , ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমার ভুল হয়েছে এই অফিসে আর কোনদিন কারো কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণ করবো না। এমনকি যা খাজনা তাই নেব, আর কোনদিন কাউকে হয়রানি করবো না।


এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুঠিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ বসাক বলেন, এসব বিষয়গুলো আমার জানা ছিল না। আপনাদের মাধ্যমে জানতে পেলাম। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


শেয়ার করুন