উজান থেকে নেমে আসা ঢলে বিভিন্ন স্থানে নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। সাঘাটা উপজেলার তিন ইউনিয়নে যমুনার ভাঙন তীব্র হয়েছে। অন্যদিকে ব্রহ্মপুত্র নদে বিলীন হয়েছে দেওয়ানগঞ্জের খোলাবাড়ী প্রধান সড়ক।
সাঘাটা (গাইবান্ধা) সংবাদদাতা জানান, পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সাঘাটা উপজেলার তিন ইউনিয়নে নদীভাঙন তীব্র হয়েছে। ইতিমধ্যেই ১৫০ পরিবারের ঘরবাড়ি ও বিস্তীর্ণ এলাকার ফসলি জমি বিলীন হয়েছে যমুনায়। ভাঙনকবলিত এলাকায় ভাঙনআতঙ্ক বিরাজ করছে। ভাঙনের শঙ্কায় এরই মধ্যে দুই শতাধিক পরিবার বাড়িঘর সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছে।
স্থানীয় ভুক্তভোগি লোকজন জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে যমুনা নদীর ডানতীর রক্ষা প্রকল্পে মূল ভূখণ্ড রক্ষার কাজ চললেও ভাঙন প্রতিরোধ হচ্ছে না। হলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য দক্ষিণ দীঘলকান্দি গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল হাই ও পাতিলবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মনির উদ্দিন জানান, আমাদের বাড়িঘর ভাঙনের কবলে পড়ায় তাড়াহুড়া করে সরিয়ে নিতে হয়েছে। হলদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম জানান, ঘরবাড়ি ও আবাদি জমি একের পর নদীতে বিলীন হচ্ছে। সাঘাটা ইউপি চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন সুইট জানান, এবার বর্ষা শুরু থেকে যমুনা নদীর তীরবর্তী তার ইউনিয়নের হাটবাড়ি ও মুন্সির হাট এলাকায় ভাঙনে এক মাসের ব্যবধানে শতাধিক পরিবারের ভিটেমাটি নদীতে চলে গেছে। গৃহহারা পরিবারগুলো বিভিন্ন স্থানে গিয়ে অস্থায়ীভাবে আশ্রয় নিয়ে জীবনযাপন করছে।
গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান জানান, যমুনা নদীর ডান তীর রক্ষার কাজে কোনো রকম অবহেলা বা গাফিলতি নেই। জোরালোভাবে কাজ চলছে। ভাঙন কমে আসবে।
দেওয়ানগঞ্জ (জামালপুর) সংবাদদাতা জানান, কয়েক দিনের টানা ভারী বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা ঢলে ব্রহ্মপুত্র নদে বিলীন হয়েছে দেওয়ানগঞ্জ খোলাবাড়ী প্রধান সড়ক। তিন দিনে যমুনা নদীর পানি ১৬ সে. মি. বৃদ্ধি পেয়ে উপজেলার নিম্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে চরম বিপাকে পড়েছে বাহাদুরাবাদ নৌ থানাসহ ১০ হাজার মানুষ। নদী ভাঙনের হুমকির মধ্যে রয়েছে প্রায় ছয়টি গ্রাম। জানা গেছে. সড়কটি গত বছর ব্রহ্মপুত্র নদে গর্ভে বিলীন হয়েছিল। পানি উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে ক্ষতিগ্রস্ত ভাঙনে বালি দিয়ে সড়কটি পুনরায় মেরামত করা হয়েছিল। চলতি বন্যায় পানি বৃদ্ধির ফলে দেওয়ানগঞ্জ-খোলাবাড়ী পাঁচ মিটার সংস্কারকৃত বালির বাঁধ ধসে সড়ক নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। সড়কটি ধসে যাওয়া উপজেলা শহরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, দশানি, জিঞ্জিরাম নদের পানি বৃদ্ধি পেয়ে উপজেলার চিকাজানি, ইউনিয়নে বিভিন্ন এলাকায় ভাঙন অব্যাহত রয়েছে।
ইউপি সদস্য আ. জলিল জানান, ২০২১ সালে সড়কটি নদীগর্ভে বিলীন হলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে বালি দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করা হয়। এ বছর বন্যার পানির স্রোতে বালির বাঁধ ধসে গিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে প্রায় ১০ হাজার মানুষের যোগাযোগ। চিকাজানি ইউপি চেয়ারম্যান মমতাজ উদ্দিন আহাম্মেদ জানান, বাহাদুরাবাদ নৌথানা, খোলাবাড়ী, মন্নে বাজার, ফারাজিপাড়া, কাজলাপাড়া, মন্ডল বাজার, গুচ্চ গ্রাম, ছয় গ্রামের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র সড়ক এটি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুন্নাহার শেফা জানান, দেওয়ানগঞ্জ খোলাবাড়ী সড়ক ভাঙনের বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডে রিপোর্ট করা হয়েছে। বন্যাদুর্গত পরিবারকে সহায়তার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সারিয়াকান্দি (বগুড়া) সংবাদদাতা জানান, গত কয়েক দিন ধরে বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে সারিয়াকান্দির কাছে যমুনা ও বাঙ্গালী নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে উপজেলার চালুয়াবাড়ী, কাজলা, বোহাইল, হাটশেরপুর, চন্দনবাইশা, সারিয়াকান্দি সদর ও কর্ণিবাড়ী ইউনিয়নের চরাঞ্চলের পাট, আউশ, বাদাম ফসল তলিয়ে যাচ্ছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল হালিম বলেন, ইতিমধ্যে ৫০০ হেক্টর জমির পাট ও ১৫০ হেক্টর জমির আউশ ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে ফসলের আরো ক্ষতি হবে।
ঢাকার সঙ্গে মোহনগঞ্জের ট্রেন চলাচল বন্ধ, নিখোঁজ যুবকের লাশ উদ্ধার
নেত্রকোনা প্রতিনিধি, দুর্গাপুর মোহনগঞ্জ মদন সংবাদদাতা জানান, বারহাট্টা উপজেলার অতীতপুরের রেল স্টেশনের কাছে ইসলামপুর গ্রামে ৩৬ নম্বর রেল সেতুটি বন্যার পানির তোড়ে ধসে গেলে ঢাকার সঙ্গে মোহনগঞ্জের ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রেল কতৃর্পক্ষ জানায়, পানির স্রোত না কমলে সেতু মেরামত করা যাবে না। ট্রেনও চলবে না। তবে নেত্রকোনা শহরের বড় রেল স্টেশন পর্যন্ত ট্রেন চালানো যায় কি না, তা দেখা হচ্ছে। এছাড়া জেলার সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এদিকে গতকাল বিকাল পর্যন্ত নেত্রকোনার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কোন উন্নতি হয়নি। জেলার সাতটি উপজেলার ৪০টি ইউনিয়ন এখন বন্যাকবলিত।
নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবার্হী প্রকৌশলী এম এল সৈকত জানান, নেত্রকোনার দুর্গাপুরে সোমেশ্বরী নদের পানি সামান্য কমলেও কলমাকান্দায় উব্ধাখালী, নেত্রকোনা ও মোহনগঞ্জে কংশ এবং খালিয়াজুরীতে ধনু নদের পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপত্সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। প্রাথমিক হিসাবে সাতটি উপজেলার কমপক্ষে ৫০০ বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। বন্যাকবলিত এলাকার সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। হাওর উপজেলা মোহনগঞ্জ এবং খারিযাজুরীর বন্যা পরিস্হিতির মারাত্মক অবনতি হয়েছে। সেখানে অনেকেই স্থানাভাবে আশ্রয় পাচ্ছে না। নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ নেত্রকোনা সদর ও বারহাট্টা উপজেলার কয়েকটি বন্যাদুর্গত এলাকা গতকাল দিনভর পরিদর্শন করে এই প্রতিনিধিকে জানান, বন্যা দুর্গতদের উদ্ধার করার সঙ্গে সঙ্গে ত্রাণ কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। ১৮৮টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে এবং সেখানে শুকনো খাবার ছাড়াও নগদ অর্থ দেওয়া হয়েছে। দুর্গতদের জন্য এ পর্যন্ত ৭৫ টন চাল এবং নগদ আড়াই লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
এদিকে নেত্রকোনার দুর্গাপুরে পানিতে ডুবে নিখোঁজ হওয়া যুবক আক্কাস আলীর (২৬) মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে নিখোঁজের প্রায় ২০ ঘণ্টা পরে লাশ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। শুক্রবার বন্যায় আক্কাসের আত্মীয় আব্দুল বারেকের বাড়িঘর ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এ খবর শুনে শুক্রবার বিকালে আক্কাস আলী লোকজন নিয়ে আব্দুল বারেকের বাড়ির দিকে রওনা হন। পথে পানির প্রবল স্রোতে তার সঙ্গে থাকা তিন জনসহ তিনি নিজে ডুবে যান। পরে ঐ তিন জন সাঁতার কেটে তীরে উঠলেও নিখোঁজ হন আক্কাস আলী। মোহনগঞ্জ পৌর মেয়র অ্যাডভোকেট লতিফুর রহমান রতন জানান, পৌরসভা নিয়ন্ত্রিত পানি শোধনাগারে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন এবং জেনারেটরও পানির নিচে চলে যাওয়ায় পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে।
ঝিনাইগাতীতে ঢলে নিখোঁজ দুই জনের লাশ উদ্ধার
ঝিনাইগাতী (শেরপুর) সংবাদদাতা জানান, ঝিনাইগাতীতে পাহাড়ি ঢলের পানিতে ডুবে নিখোঁজ দুই জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার সকালে পৃথক স্থান থেকে ঐ দুই জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহতরা হলেন ঝিনাইগাতী সদর ইউনিয়নের বৈরাগীপাড়া গ্রামের মৃত নফজ উদ্দিনের ছেলে কৃষক আশরাফ আলী (৬০) এবং ধানশাইল ইউনিয়নের বাগেরভিটা গ্রামের শেখ কাদের আলীর ছেলে রাজমিস্ত্রি আবুল কালাম (৩৩)।
কুড়িগ্রামে হুহু করে বাড়ছে ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার পানি, ভেঙেছে তিন বাঁধ
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি, নাগেশ্বরী, চিলমারী সংবাদদাতা জানান, কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র ও ধরলা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় প্রতি মুহূর্তে তলিয়ে যাচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। জেলার ৯টি উপজেলার বন্যাকবলিত ২৫টি ইউনিয়নের চরাঞ্চলের প্রায় ১৫০টি গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকার প্রায় দেড় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বানভাসি এলাকাগুলোতে শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি, গোখাদ্য ও জ্বালানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। শনিবার বিকালে চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ১৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে ২২ সেন্টিমিটার এবং সেতু পয়েন্টে ধরলা নদীর পানি ৭ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে ২২ সেন্টিমিটার বিপত্সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ভারী বর্ষণের কারণে রমনা-কুড়িগ্রাম রুটে কিছু কিছু স্থানে রেললাইনের মাটি ধসে যাওয়ায় ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। কুড়িগ্রাম সদর, রৌমারী, উলিপুর, চিলমারী উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির বেশি অবনতি ঘটায় বানভাসি মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। বন্যার কবলে ক্লাস রুম ও মাঠে পানি ওঠায় অন্তত ৬৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। জেলায় প্রায় ৬ হাজার হেক্টর পাট, তিল, ভুট্টা ও সবজি খেত তলিয়ে গেছে। কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, বন্যায় মানুষের দুর্ভোগের কথা বিবেচনায় ৯টি উপজেলার বন্যাদুর্গত মানুষের সহায়তার জন্য ২৯৫ টন চাল, নগদ ১৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা, শুকনা খাবার ১ হাজার প্যাকেট, শিশু খাদ্য ক্রয় বাবদ ১৮ লাখ ৯৫ হাজার টাকা এবং গোখাদ্য ক্রয় বাবদ ১৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এদিকে নাগেশ্বরীতে বন্যার পানির তোড়ে ভেঙেছে তিনটি বাঁধ, অনেক সড়ক। পরিদর্শনে গিয়ে ভাঙন ও বন্যাকবলিত নদী পাড়ের বিক্ষুব্ধ মানুষের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক কর্মচারী। টানা বৃষ্টি ও ঢলে স্ফীত হয় দুধকুমার, ব্রহ্মপুত্র, ফুলকুমার নদ ও গঙ্গাধর, শংকোষ নদীর পানি। পানির তোড়ে গত বুধবার বেরুবাড়ী ইউনিয়নের স্লুইসগেট-সংলগ্ন ইসলামপুরে, বৃহস্পতিবার বামনডাঙ্গার মালিয়ানীতে ও শুক্রবার একই ইউনিয়নের নামাহাইল্যায় ভেঙে যায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ।
আখাউড়ার বাঁধ ভেঙে ৩০ গ্রাম প্লাবিত
আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) জানান, আখাউড়ার সীমান্তবর্তী ৩০টি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। আকস্মিক এ বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে নানা ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। স্থানীয় এলাকাবাসী ও প্রশাসন সূত্রে জানা জানা গেছে, শুক্রবার সকাল থেকে টানা ভারীবর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে উপজেলার হাওড়া নদীর বাঁধ ভেঙে এবং স্থলবন্দর এলাকার পাশ দিয়ে বয়ে চলা কালন্দি খাল দিয়ে ঢলের পানি হুহু করে প্রবেশ করছে।
সিরাজগঞ্জে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত
সিরাজগঞ্জ প্র্রতিনিধি জানান, যমুনার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় শনিবার সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার পুঠিয়াবাড়ী, চর মালশাপাড়াসহ বাঁধ অভ্যন্তরে বাড়িঘর বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। প্রতিদিনই প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। গত ২৪ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে যমুনার পানি ৪৭ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপত্সীমার ৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কাজীপুর পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৬ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপত্সীমার ৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে। যমুনার পানি বাড়ায় সিরাজগঞ্জের কাজীপুর, বেলকুচি, শাহজাদপুর, চৌহালী ও সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নিম্নাঞ্চল ডুবে গেছে। এতে তিল, কাউন, বাদাম, পাট ও সবজিসহ বিভিন্ন ফসল ডুবে গেছে।
গাইবান্ধায় নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত
গাইবান্ধা প্রতিনিধি জানান, শনিবারও গাইবান্ধায় বিভিন্ন নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। পানি বৃদ্ধির কারণে জেলার নদী তীরবর্তী চারটি উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। গাইবান্ধা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরীফুল আলম বলেন, গত কয়েক দিনে উপজেলার কামারজানি ও মোল্লারচর ইউনিয়নের প্রায় ৩০০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ত্রাণসহায়তা দেওয়ার জন্য ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।
জামালপুরে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি
জামালপুর প্রতিনিধি জানান, জামালপুর জেলার সার্বিক বন্যার পরিস্থিতি ক্রমশই অবনতি ঘটেছে। পাউবো সূত্রে জানা গেছে গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনার বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে পানি ৮ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপত্সীমার ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলার দেওয়ানগঞ্জ, ইসলামপুর, মেলান্দহ, মাদারগঞ্জ, সরিষাবাড়ী, বকসিগঞ্জসহ জামালপুর সদর উপজেলার নিম্নাঞ্চল বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এ ব্যাপারে জামালপুরের জেলা প্রশাসক শ্রাবস্তী রায় বলেন, দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চুকাইবাড়ী ইউনিয়নের বন্যাকবলিত ৫০টি পরিবারকে রেলওয়ে স্কুলে আশ্রয়কেন্দ্রে আনা হয়েছে।
শিবালয় (মানিকগঞ্জ) সংবাদদাতা জানান, পদ্মা-যমুনার পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। যমুনার পানি আরিচা পয়েন্টে ২৪ ঘণ্টায় ৩৭ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে শনিবার ৭ দশমিক শূন্য ৪২ স্তরে প্রবাহিত হচ্ছিল। এর প্রভাবে আরিচা ঘাটের কাছে দক্ষিণ শিবালয়, ছোট আনুলিয়া, অন্বয়পুর, ঝড়িয়ারবাগ প্রভৃতি এলাকায় যমুনার প্রবল ভাঙনে অন্তত ২০০ বাড়ি ঝুঁকির মুখে পড়েছে।