নওগাঁর রাণীনগরে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর ও ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার সন্ধ্যা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত উপজেলার তিন স্থানে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে দুই পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থীর আহত ৭ জন সমর্থকরা হলেন, রাণীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন (৫০) ও তার ভাই সাজেদুল (৫৫), রাণীনগর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মালেক (৩১), রবিউল ইসলাম (৩৩), আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক হোসেন (৪৫), ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মোশাররফ হোসেন মন্ডল (৪৭) ও সমর্থক মাহাবুর হোসেন সুমন (৪৬)।
এ ছাড়া নৌকার প্রার্থীর আহত তিনজন কর্মী হলো, আওয়ামী লীগ কর্মী বাদল হোসেন (৩৫), সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রাজ (৩৯) ও উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জনি (৩৫)।
আহতদের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ২ জন রাণীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও ২ জন নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। আর নৌকার কর্মী বাদল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছেন। এছাড়া আহত অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন বলে জানা গেছে।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ওমর ফারুক সুমনের সমর্থকরা নির্বাচনী প্রচারণার জন্য বের হন। সন্ধ্যার দিকে তারা উপজেলার কাশিমপুর চাড়াপাড়া মোড়ে যান। এ সময় চাড়াপাড়া মোড়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ও নৌকার প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এরপর সন্ধ্যার ৭টার দিকে উপজেলা সদরের বাসট্যান্ড এলাকায় হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর রাত ৮টার দিকে আবারও রাজাপুর গ্রামে সংঘর্ষ হয়।
স্বতন্ত্র প্রার্থী এ্যাড. ওমর ফারুক সুমন বলেন, নির্বাচনের শুরু থেকেই নৌকার লোকেরা আমার প্রচারনার কাজে বাধার সৃষ্টি করে আসছে। সমর্থকদের ভয়ভীতি প্রদান অব্যাহত রয়েছে। সোমবার বিকালে আমার স্ত্রী নির্বাচনী প্রচারনার কাজে কাশিমপুর চারাপাড়া মোড়ে গেলে নৌকা প্রার্থীর লোকজন বাধা দিয়ে আটকে রাখে। আমি সেখানে গিয়ে স্ত্রীসহ অন্যদের উদ্ধার করার সময় নৌকার লোকেরা আমার সমর্থকদের উপর হামলা করে। ফলে কয়েকজন সমর্থক আহত হলে তাদের উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে আবারো নৌকার লোকজনেরা হামলা করে। এছাড়া বাসট্যান্ড ও রাজাপুর এলাকায় আমার ৪ জন সমর্থককে নৌকার লোকজনেরা পিটিয়ে আহত করেছে।
নৌকার প্রার্থী আনোয়ার হোসেন হেলাল বলেন, আমরা শান্তিপূর্ন পরিবেশে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে আসছি। কিন্তু রবিবার রাতে স্বতন্ত্র প্রার্থী সুমনের সমর্থকরা আমার একটি নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর করেছে। এরপর সোমবার সন্ধ্যায় স্বতন্ত্র প্রার্থী সুমনসহ তার সমর্থকরা পুলিশের উপস্থিতিতে আমার কয়েকজন কর্মীকে মারপিট করে আহত করে। তিনি আরও বলেন, আমার কর্মীদের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মারপিট করার যে অভিযোগ তোলা হয়েছে তা সম্পূর্ন মিথ্যা।
এ ব্যাপারে রাণীনগর থানার ওসি আবু ওবায়েদ বলেন, ঘটনার পৃথক পৃথক স্থান পরিদর্শন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিবেশ শান্ত রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত থানায় কেউ কোন লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।