১৯ নভেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ১০:৩৯:৩০ পূর্বাহ্ন
বিদ্যুৎ খাত লুটপাটের স্বর্গরাজ্য
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৯-০৫-২০২৪
বিদ্যুৎ খাত লুটপাটের স্বর্গরাজ্য

আওয়ামী লীগ জবাবদিহিহীন রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছে। লুটপাটের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছে বিদ্যুৎ খাতকে। এ খাতে লুটপাটে আইনি ভিত্তি দেওয়া হয়েছে। 


শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) ‘বিদ্যুৎ : আলো থেকে অন্ধকারে যাত্রা’ বিষয়ক সেমিনারে এ কথা বলেন বক্তারা। 


নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নার সভাপতিত্বে সেমিনারে বক্তৃতা করেন, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, পাওয়ার সেলের সাবেক মহাপরিচালক বিডি রহমতুল্লাহ, সমকালের উপদেষ্টা সম্পাদক আবু সাঈদ খান প্রমুখ। 


নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুলাহ কায়সারের সঞ্চালনায় সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নাগরিক ঐক্যের সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব আনোয়ার।


বক্তারা বলেন, বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার দুর্নীতি, লুটপাট ও দুঃশাসনের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এনে দাঁড় করিয়েছে। ২০১৪ সাল থেকে পরপর তিনবার জনগণের ভোট ছাড়া অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে বাংলাদেশকে লুটপাটের রাজ্যে পরিণত করেছে। এর জন্য সংসদে আইন পাশ করে লুটপাটের ভিত্তি দেওয়া হয়েছে। 


তারা বলেন, ’৯০-এর দশক থেকে বিদ্যুৎ চাহিদা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেলেও ২০০৮ সাল পর্যন্ত সরকারগুলো কোনো পরিবর্তন আনতে পারেনি। ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০’ এর ৩নং ধারা অনুযায়ী, কোনো ধরনের দরপত্র আহ্বান ছাড়াই কারও সঙ্গে আলোচনা করে চুক্তি করার ক্ষমতা নেয় সরকার। 


এর মধ্য দিয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত ‘পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন ২০০৬’ অনুসরণ করার বাধ্যবাধকতাকে পাশ কাটানোর ব্যবস্থা করা হয়। এমনকি ৯ ধারায় বলা হয় ‘এই আইনের অধীন কৃত, বা কৃত বলে বিবেচিত কোনো কাজ, গৃহীত কোনো ব্যবস্থা, প্রদত্ত কোনো আদেশ বা নির্দেশের বৈধতা সম্পর্কে কোনো আদালতের কাছে প্রশ্ন উত্থাপন করা যাবে না।’ 


বক্তারা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের গত ১৫ বছরের শাসনামলে ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধ করা হয়েছে এক লাখ ছয় হাজার ৭৮৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এর মধ্যে ২০০৮-৯ থেকে ২০১৭-১৮ অর্থবছর পর্যন্ত ১০ বছরে ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধের পরিমাণ ছিল ৪৩ হাজার ৩৩৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। দফায় দফায় তাদের চুক্তির মেয়াদ বাড়িয়ে জনগণের ঘাড়ে ভর্তুকির বোঝা চাপানো হয়েছে। 


বক্তারা বলেন,  বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) ভারতের সরকারি ও বেসরকারি যে পাঁচটি কোম্পানি থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করে তাদের মধ্যে বাকি কোম্পানিগুলোর তুলনায় আদানির বিদ্যুতের দাম প্রায় ৮১ শতাংশ বেশি। ২০২২-২৩ অর্থবছরে চারটি কোম্পানি থেকে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ কিনতে খরচ পড়েছে ৪ দশমিক ২২ থেকে ৯ দশমিক ৯৫ টাকা। 


অন্যদিকে আদানির প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের জন্য বাংলাদেশকে গুনতে হয়েছে ১৪ টাকারও বেশি। দুর্ভাগ্যের বিষয় সরকার দেশে প্রতিষ্ঠিত রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে বিদ্যুতের দামের সঙ্গে যে ক্যাপাসিটি চার্জ দিয়েছে সেটা যোগ করলে কোনো কোনো বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে কেনা বিদ্যুতের দাম ইউনিটপ্রতি ৫০ টাকাও ছাড়িয়ে যায়। সরকারের অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে আদানির সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তারা।


শেয়ার করুন