সরকারের নির্দেশনা মতো রাজধানীর বাড্ডা, ভাটারা ও গুলশানে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিংয়ের রুটিন (সময়সূচি) মানা যাচ্ছে না। জ্বালানি সাশ্রয়ে এলাকাভিত্তিক এক ঘণ্টার লোডশেডিংয়ের পরিপূর্ণ রুটিন মানতে পারেনি বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি ডেসকোর বারিধারা জোন (বাড্ডা, ভাটারা ও গুলশান)।
বিদ্যুত লাইনের ফ্রিকুয়েন্সি বেড়ে যাওয়ায় সিস্টেম পতন ঠেকাতে রুটিনের (সূচি) বাইরেও লোডশেডিং করতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ডেসকোর বারিধারা জোনের নির্বাহী প্রকৌশলী। গতকাল মঙ্গলবার ছিল সরকারের পরিকল্পিত লোডশেডিংয়ের প্রথম দিন। এদিন গুলশান, বাড্ডা ও ভাটারার কোথাও কোথাও দুই থেকে তিন ঘণ্টা লোডশেডিং হয়েছে।
বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাজধানীর দুটি বিতরণ কোম্পানি ডিপিডিসি ও ডেসকো গতকাল দিনে সর্বোচ্চ ৩০০ মেগাওয়াট করে বিদ্যুৎ ঘাটতি পেয়েছে। কোনো এলাকায় এক ঘণ্টা দিলেও অন্য এলাকায় একটু বেশি লোডশেডিং করতে হয়েছে ডেসকোর। রুটিন ব্যত্যয় হয়েছে বলে স্বীকারও করেছেন কোম্পানিটির বারিধারা জোনের নির্বাহী প্রকৌশলী।
ঢাকার গুলশান শাহজাদপুর এলাকার গ্রাহক সিকদার রাফি আহমেদ যুগান্তরকে জানান, রুটিন অনুসারে সন্ধ্যা ছয়টা থেকে সাতটা পর্যন্ত লোডশেডিং হওয়ার কথা। অথচ সন্ধ্যা ছয়টা থেকে সাতটা আবার রাত ১২টা থেকে সাড়ে ১২টা— দুইবার লোডশেডিং হয়েছে তার এলাকায়।
একই বিষয় নিয়ে ভাটারা থানার খিলবাড়িরটেক এলাকার গ্রাহক বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ প্রিয়াংকা হালদার শিখা যুগান্তরকে বলেন, গতকাল তিনবার লোডশেডিং হয়েছে আমার এলাকায়। যদিও সমস্যাটি শুধু আমাদের নয়, বৈশ্বিক একটি সমস্যা। লোডশেডিংয়ের জন্য আমাদের জীবন যাত্রায় অনেক পরিবর্তন আনতে হচ্ছে।
বাড্ডা এলাকার গ্রাহক ফাহাদুল ইসলাম ফরহাদ যুগান্তরকে বলেন, গরমের মধ্যে লোডশেডিং আমাদের কষ্টকে বাড়িয়ে দিয়েছে। বাচ্চাদের পড়ালেখার সমস্যা হচ্ছে। আশা করি, দ্রুত সময়ে এর সমাধান হবে।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) পূর্বাভাস বলছিল, গতকাল (মঙ্গলবার) দিনে সর্বোচ্চ চাহিদা হতে পারে ১৪ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট। একই সময়ে ১২ হাজার ৪৮২ মেগাওয়াট উৎপাদন হওয়ার কথা। এতে ঘাটতি হতে পারে ১ হাজার ৯১৮ মেগাওয়াট। যদিও বিদ্যুৎ বিভাগের দায়িত্বশীল সূত্র থেকে জানা গেছে, গতকাল সর্বোচ্চ উৎপাদন হয়েছে ১১ হাজার ৭৪২ মেগাওয়াট।
এক ঘণ্টা লোডশেডিং করে এ ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব নয়। বিদ্যুৎ বিভাগের হিসাবে এক ঘণ্টা লোডশেডিংয়ে বিদ্যুৎ সাশ্রয় হয় ৯৭৬ মেগাওয়াট। অবশ্য প্রকৃত চাহিদা আরও বেশি বলে লোডশেডিং বাড়ছে।