১৯ নভেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ০৭:৩০:১৯ অপরাহ্ন
পালানোর পরে নিষেধাজ্ঞা পেলেন ছাগলকাণ্ডের সেই মতিউর
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৫-০৬-২০২৪
পালানোর পরে নিষেধাজ্ঞা পেলেন ছাগলকাণ্ডের সেই মতিউর

দেশের দুর্নীতিবাজ রাঘববোয়ালরা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর তাদের বিরুদ্ধে দেশত্যাগের নিষেধাজ্ঞা জারির ঘটনায় আরেকবার যথার্থতা প্রমাণিত হচ্ছে। যদিও অনেকে মনে করেন, দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ওইসব প্রভাবশালীকে ‘সেইফ এক্সিট’ বা নিরাপদে প্রস্থানের সুযোগ দেওয়ার পরই এসব নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

ছেলের ছাগলকাণ্ডে আলোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য মো. মতিউর রহমান, স্ত্রী লায়লা কানিজ ও ছেলে আহমদ তৌফিকুর রহমানের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। এর আগে তিনি দেশ ত্যাগ করেছেন বলে জানা গেছে।

সোমবার ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন এই আদেশ দেন।

এদিকে আদালতের নিষেধাজ্ঞার আগেই মতিউর রহমান অতিগোপনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সীমান্তপথ দিয়ে অবৈধভাবে ভারতের আগরতলায় প্রবেশ করেছেন বলে পরিবারের ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে। আর তার আগেই দ্বিতীয় স্ত্রী শাম্মী আখতার শিভলী, ছেলে মুশফিকুর রহমান ইফাত ও ইরফান পাড়ি জমিয়েছে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে। এ অবস্থায় অনুসন্ধান কাজ এগিয়ে নিতে মতিউর ও তার পরিবারের সদস্যদের সম্পর্কে তথ্য-উপাত্ত চেয়ে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ), জাতীয় রাজস্ব রোর্ড (এনবিআর) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশনসহ (বিএসইসি) বেশ কয়েকটি সংস্থায় চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। একই সঙ্গে তাদের বিদেশযাত্রা ঠেকাতে পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি) ইমিগ্রেশন শাখায় চিঠি পাঠানো হয়েছে।

অন্যদিকে সোমবার সোনালী ব্যাংকের পরিচালকের পদ থেকেও মতিউরকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তার জায়গায় নিয়োগ দেওয়া হয়েছে নতুন পরিচালক। এর আগে রোববার এনবিআরের কাস্টমস এক্সসাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট পদ থেকে তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে সংযুক্ত করা হয়েছে তাকে। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে উল্লিখিত তথ্য পাওয়া গেছে।

দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী মীর আহমেদ আলী বলেন, জাতীয় এনবিআর সদস্য মো. মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল সম্পদ অর্জনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে বিপুল অঙ্কের অর্থ পাচারের অভিযোগও আছে। এসব অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদকের তিন সদস্যের টিম। এ অবস্থায় মতিউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যরা বিদেশে পালিয়ে যেতে পারেন। এজন্য তাদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতে আবেদন করেছে দুদক। আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করেছেন।

দুদক সূত্র জানায়, মতিউর রহমানসহ পরিবারের তিন সদস্যের বিদেশযাত্রা ঠেকাতে এসবির ইমিগ্রেশন শাখায় চিঠি দিয়েছে দুদক। এই পরিবারের নামে থাকা বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের তথ্য চেয়ে বিএফআইইউকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া তাদের নামে দেশের কোন কোন এলাকায় জায়গাজমি রয়েছে সেসব দলিলসংক্রান্ত বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত চেয়ে নিবন্ধন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শকের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন অনুসন্ধান দলের প্রধান। বিএসইসি চেয়ারম্যানকে পাঠানো চিঠিতে যেসব কোম্পানিতে মতিউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে বিনিয়োগ আছে সেসব তথ্য জানাতে বলা হয়েছে।

শেয়ার করুন