১৯ নভেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ০৪:৩৯:১১ অপরাহ্ন
দুর্নীতিবাজদের ডিসি হিসাবে নিয়োগ, যা বললেন সচিব
  • আপডেট করা হয়েছে : ১২-০৯-২০২৪
দুর্নীতিবাজদের ডিসি হিসাবে নিয়োগ, যা বললেন সচিব

নতুন নিয়োগ পাওয়া ৫৯ জন জেলা প্রশাসকের (ডিসি) বেশির ভাগই সদ্য বিদায়ি আওয়ামী লীগ সরকারের অতি ঘনিষ্ঠজন ছিলেন। এর মধ্যে অনেকে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, মেয়র এবং তৎকালীন সরকারের আস্থাভাজন দলবাজ সচিবদের পিএস (একান্ত সচিব) হিসাবে কাজ করেছেন। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত সরকারের কাছে সরবরাহ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। এমন পরিস্থিতিতে ৫৯ জন ডিসি নিয়োগ সংক্রান্ত পৃথক দুটি প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবি জানিয়েছেন গত সাড়ে ১৫ বছর ধরে গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ ও পদোন্নতিবঞ্চিত কর্মকর্তারা। 


তাদের মতে, এ বঞ্চিতদের মধ্য থেকে অপেক্ষাকৃত দক্ষ, মেধাবী ও সৎ কর্মকর্তাদের ডিসি পদে নিয়োগ দেওয়া হোক। জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগে অনিয়মের বিষয় স্বীকার করে গত দুই দিনে ৯ জনের নিয়োগ বাতিল করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি চারজন ডিসির জেলা পরিবর্তন করে দেওয়া হয়েছে। ডিসি নিয়োগে বঞ্চিত কর্মকর্তাদের হট্টগোল বিশৃঙ্খলা ও অশোভন আচরণ হিসাবে গণ্য করে তা তদন্তে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব এম এ আকমল হোসেন আজাদকে প্রধান করে এক সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে সুপারিশসহ প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়। কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।


বুধবার এত সব যাচাই-বাছাইয়ের পরও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা কি পদোন্নতি কিংবা ডিসি হিসাবে নিয়োগ পায়-এমন প্রশ্নের জবাবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমান বলেন, আমরা কি সবাই ভালো মানুষ। আমাদের ভুল তথ্য দিয়েছে কিংবা সঠিক তথ্য গোপন করেছে। আমরা সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছি। যথেষ্ট সচেতন। তারপরও মানুষ হিসাবে ভুল হতেই পারে। কোথাও কোনো অনিয়ম থাকলে ধরিয়ে দেবেন, ব্যবস্থা নেব।


জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বলেন, গণমাধ্যম এবং এজেন্সির প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে আমরা ৮ জন ডিসির নিয়োগ বাতিল করেছি। এর আগে মঙ্গলবার একজন ডিসির নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে। তারা কর্মস্থলে যোগদানের আগেই নিয়োগ বাতিল করা হলো। তাদের বিষয়ে নিয়োগ কমিটিতে সঠিক তথ্য উপস্থাপন করা হয়নি। আমাদের মধ্যে দুষ্ট লোকের তো অভাব নেই।


সচিব আরও বলেন, গত মঙ্গলবার দুপুরে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ডিসি পদে নিয়োগ বঞ্চিতদের করা হট্টগোল একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। তিনি বিষয়টিকে বিশৃঙ্খলা ও অশোভন আচরণ হিসাবে আখ্যায়িত করে বলেন, এ ধরনের ঘটনা কেন ঘটল তার কারণ জানতে ওই কমিটি করা হয়েছে। কমিটিকে সুপারিশসহ প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। তারপর বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


সচিব আরও বলেন, বুধবার মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সভাপতিত্বে ডিসি নিয়োগ-পূর্ব সাক্ষাৎকার গ্রহণ কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই বৈঠকের সিদ্ধান্তের আলোকে ৮ জন ডিসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ২০ দিন যাবত যাচাই-বাছাই শেষে ডিসি নিয়োগ দেওয়া হলো, তারপরও কেন এমন ঘটনা ঘটল এমন প্রশ্নে জনপ্রশাসন সচিব বলেন- তথ্যে বিভ্রান্তি, কমিউনিকেশর গ্যাপ তাই এমনটি হয়েছে। যাকে যে তথ্য দিতে বলা হয়েছে, সে সঠিক তথ্য দিতে পারেননি। অথবা ডিসি হিসাবে নিয়োগ দেওয়ার পর ওই তথ্য আমাদের হাতে এসেছে।


সাবেক সরকারের সময় তৈরি করা ফিটলিস্টের ছয়জন কর্মকর্তাকে ডিসি হিসাবে কীভাবে পদায়ন করা হলো-এমন প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, যারা আমাদের সাচিবিক সহায়তা দেয় এসব তাদের কাজ। তারা এসব করে। যাচাই-বাছাই করে আমরা ১০৬ জনের ফিটলিস্ট তৈরি করেছি। এর মধ্যে যদি কারও কোনো খারাপ তথ্য আমাদের দেবেন, আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।


শেয়ার করুন