লিভারপুল আর বরুসিয়া ডর্টমুন্ড। দলদুটোর মাঝে একটা মিল আছে। দুটো দলের হোম গ্রাউন্ড ইউরোপের সবচেয়ে কঠিন মাঠগুলোর একটা। সমর্থকদের গর্জনে শুরু থেকেই নাভিশ্বাস উঠে যায় প্রতিপক্ষের।
সে ইয়েলো স্ট্যান্ড আজ বার্সেলোনার বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে ফিরতি লেগে একটু বেশি করেই সরব থাকবে, অ্যানফিল্ডে যেমনটা হয়; তবে সে লিভারপুলের কাছ থেকে আরও একটা বিষয় খুব করে চাইবে। পাঁচ মৌসুম আগে এই বার্সেলোনার বিপক্ষে ৩-০ গোলে হেরেও ফিরতি লেগে ৪-০ গোলে জিতে ফাইনালে গিয়েছিল দলটা। আজ দ্বিতীয় লেগের ম্যাচের আগে সে লিভারপুলই হতে চাইল বরুসিয়া।
কথাটা বলেছেন খোদ কোচ নিকো কোভাচ। তিনি বিশ্বাস হারাননি। বললেন, ‘মিরাকল তো সব সময়ই হয়। আমরা লিভারপুলের সেই ম্যাচটা মনে করতে পারি – আমার সে ম্যাচটার কথা এখনও মনে আছে।’
ম্যাচটা মনে করার আরও একটা কারণ ম্যাচটা যে বার্সেলোনার বিপক্ষে! কামব্যাক কীভাবে করতে হয়, তা বড় পরিসরে বার্সাই দেখিয়েছিল, ২০১৬-১৭ মৌসুমে পিএসজির বিপক্ষে ৪-০ গোলে প্রথম লেগে হেরেও পরের লেগে ৬-১ গোলের জয় নিয়ে দলটা চলে গিয়েছিল কোয়ার্টার ফাইনালে। তবে এরপর থেকে বার্সা একের পর এক কামব্যাক হজমই করেছে। ২০১৭-১৮ মৌসুমে রোমা, ২০১৮-১৯ মৌসুমে অ্যানফিল্ড, কিংবা সবশেষ ২০২৩-২০২৪ মৌসুমে পিএসজির বিপক্ষে প্রথম লেগে জিতেও পরের লেগে ভজকট পাকিয়ে বাদ পড়েছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে।
তবে অতীতের সঙ্গে বর্তমানের মিলটা আছে সামান্যই। সেটা কোভাচও জানেন। তিনি বললেন, ‘কিন্তু ওটা ছিল তখন, আর এখন ২০২৪-২৫। আমরা জানি আমাদের অবস্থা কী। প্রথম লেগে আমরা ভালো খেলিনি।’
বার্সেলোনা চলতি বছরে একটা ম্যাচেও হারেনি। তাই কাজটা কঠিন। এমন দলের বিপক্ষে ৫-০ গোলের জয় নয়, যে কোনো ব্যবধানের একটা জয়ই প্রাথমিক লক্ষ্য বরুসিয়ার। নিকো কোভাচের কথা, ‘আমরা কালকে ভিন্ন একটা দল হতে চাই, আমরা জিততে চাই। কত গোলে জিতব, সেটা এখন বলা কঠিন। বার্সেলোনা ২০২৫ সালে এখনো কোনো ম্যাচ হারেনি, এটা কাজটা আরও কঠিন করে তুলেছে। সহজ হবে না।’
বার্সেলোনার সর্বশেষ হার ছিল বড়দিনের আগের দিন। এরপর হানসি ফ্লিকের দল ২০টি ম্যাচ জিতেছে, ড্র করেছে ৪টি। এমন দলের বিপক্ষে জিততে হলে সমর্থকদেরই সমর্থনটা বেশি দরকার, জানালেন ডর্টমুন্ডের মিডফিল্ডার ফেলিক্স ন্মেচা। বললেন, ‘আমাদের সমর্থকরা যদি পাশে থাকে, সবকিছু সম্ভব। আমাদের বিশ্বাস রাখতে হবে, আর আমরা বিশ্বাস রাখি।’
কোভাচ এই মৌসুমে ডর্টমুন্ডের তৃতীয় কোচ হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন জানুয়ারিতে। তিনি বার্সেলোনার আক্রমণভাগের প্রশংসা করেছেন। বিশেষ করে লামিন ইয়ামাল ও রাফিনিয়ার। তবে আলাদা করে বলেছেন রবার্ট লেভান্ডভস্কির কথা।
লেভান্ডভস্কি ডর্টমুন্ডে খেলে দুইবার বুন্দেসলিগা জিতেছিলেন, খেলেছিলেন ২০১৩ সালের চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালেও। এরপর তিনি আট বছর ছিলেন বায়ার্নে, যেখানে কোভাচ ছিলেন তার কোচ।
কোভাচ বলেন, ‘সে একজন অসাধারণ পেশাদার। আমি অনেক ভালো খেলোয়াড় দেখেছি। কিন্তু এই ছেলেটা? সে জীবন যাপন করে একজন প্রকৃত অ্যাথলেটের মতো। সে ফিট থাকতে যা যা করা দরকার, সব করে।’