পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ায় এক বৈঠকে ভয়াবহ বিস্ফোরণে কমপক্ষে ৭ জন নিহত হয়েছেন এবং ১৬ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সোমবার স্থানীয় সময় দুপুরের পর প্রদেশটির দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তান অঞ্চলে শান্তি কমিটির এক বৈঠকে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও ইরানী বার্তা সংস্থা মেহর এ তথ্য জানিয়েছে।
দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানের পুলিশ কর্মকর্তা উসমান ওয়াজির জানান, পেশোয়ার থেকে পাওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, ‘বৈঠক চলাকালীন বিস্ফোরণের ফলে ভবনের একটি অংশ ধসে পড়েছে’।
তবে এখনো পর্যন্ত এ হামলার পেছনে কে বা কারা দায়ী, সে বিষয়ে কিছুই জানা যায়নি বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
উসমান ওয়াজির বলেন, এখনো কেউ হামলার দায় স্বীকার করেনি। তদন্ত চলছে।
দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তান অঞ্চলটি দীর্ঘদিন ধরেই সন্ত্রাসবাদ ও বিচ্ছিন্নতাবাদী সহিংসতার কারণে অস্থিতিশীল। স্থানীয় শান্তি কমিটিগুলো সাধারণত উপজাতীয় প্রবীণ, স্থানীয় নেতা ও নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে এ ধরনের সহিংসতা দমন ও নিরাপত্তা বজায় রাখার কাজ করে থাকে। ফলে এসব কমিটি হামলার লক্ষ্যবস্তু হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে।
যার জেরে অতীতেও দক্ষিণ ও উত্তর ওয়াজিরিস্তানে শান্তি কমিটির সদস্যদের লক্ষ্য করে আত্মঘাতী হামলা ও আইইডি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, পাকিস্তানে সাম্প্রতিককালে জঙ্গি হামলা বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ হলো আফগানিস্তানের সঙ্গে সীমান্ত ব্যবস্থাপনার জটিলতা এবং নিষিদ্ধ সংগঠনগুলোর নতুন করে সংগঠিত হওয়া।
এদিকে, জিও নিউজের খবর অনুযায়ী, পাকিস্তানের সেনাবাহিনী রোববার জানিয়েছে, দেশটির উত্তর ওয়াজিরিস্তানের হাসান খেল এলাকায় পাক-আফগান সীমান্তে অনুপ্রবেশের প্রচেষ্টা রুখে দিয়ে কমপক্ষে ৭১ জন সন্ত্রাসীকে হত্যা করা হয়েছে।
এই ঘটনা সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের ইতিহাসে একক সংঘর্ষে ‘সর্বোচ্চ সাফল্যের’ রেকর্ড বলেও দাবি করেছে বাহিনীটি।
রোববার দেশটির আইএসপিআর এক বিবৃতিতে জানায়, ২৫ থেকে ২৭ এপ্রিল রাতের মধ্যে পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনী হাসান খেল এলাকায় অনুপ্রবেশের চেষ্টা লক্ষ্য করে দ্রুত ও সুনির্দিষ্ট প্রতিরোধমূলক হামলা চালায়। এতে অনুপ্রবেশকারী ৭১ জন ‘খারিজি’ নিহত হয়েছে।
উল্লেখ্য, পাকিস্তান সরকার রাষ্ট্রীয়ভাবে ‘খারিজি’ শব্দটি নিষিদ্ধ তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি) সদস্যদের বোঝাতে ব্যবহৃত হয়।