৩০ এপ্রিল ২০২৫, বুধবার, ০২:২০:২৫ পূর্বাহ্ন
এস আলমের স্টিল ও ব্যাগ কারখানা বিক্রি করবে ইসলামী ব্যাংক
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৯-০৪-২০২৫
এস আলমের স্টিল ও ব্যাগ কারখানা বিক্রি করবে ইসলামী ব্যাংক

৮২ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ আদায়ে এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন এস আলম স্টিলস, এস আলম ব্যাগ ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি লিমিটেড এবং রাজধানীর ধানমন্ডির চারতলা দালানসহ ৪১ দশমিক ৭৫ শতাংশ জমি নিলামে তুলেছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি। 


মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ নিলামের ঘোষণা দেয় ব্যাংকটির চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ কর্পোরেট শাখা।


বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এস আলম স্টিলস লিমিটেডসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তিদের নামে চলতি বছরের ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত সুদ ও লভ্যাংশসহ মোট ৮১ কোটি ৮০ লাখ ৪৮ হাজার ৪৩০ টাকা ৯২ পয়সা পাওনা রয়েছে। অর্থঋণ আদালত আইন, ২০০৩-এর ১২ (৩) ধারা অনুযায়ী ওই সম্পত্তি বিক্রির লক্ষ্যে আগ্রহী ক্রেতাদের কাছ থেকে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।


এতে আরও বলা হয়, ঋণগ্রহীতাদের তালিকায় রয়েছেন- এস আলম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাইফুল আলম মাসুদ, চেয়ারম্যান মো. আবদুস সামাদ, শেয়ারহোল্ডার মো. রাশেদুল আলম, ফারজানা পারভীন, মো. আবদুল্লাহ হাসান, প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক ওসমান গনি, শওকত সাদেক হোসেন ও শাহেল্লা রশিদসহ একাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান।


এর আগে, চলতি মাসের ২০ এপ্রিল ৯৯৪৮ কোটি টাকা আদায়ে এস আলম গ্রুপের একটি চিনিকলসহ প্রায় ১১ একর জমি এবং ২৭ এপ্রিল ২১৮০ কোটি টাকা আদায়ে একটি স্টিল মিল, বিদ্যুৎকেন্দ্র, ভোজ্যতেল কারখানা ও ১১৪৯ শতাংশ জমি নিলামে তোলে ইসলামী ব্যাংক।


‘জামায়াতমুক্ত’ করার নামে ২০১৭ সালে বিতর্কিত শিল্পগ্রুপ এস আলম পরিকল্পিতভাবে শেয়ার কিনে এবং ব্যবস্থাপনায় অনুগত পরিচালক বসিয়ে ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের নিয়ন্ত্রণ নেয়। ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ নীতিমালা উপেক্ষা করে গ্রুপটির বিভিন্ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানের নামে নেওয়া হয় বিপুল অঙ্কের ঋণ।


একাধিক তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা গেছে, এস আলম গ্রুপ এবং সংশ্লিষ্টদের নামে উত্তোলন করা ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ১ লাখ ৩১ হাজার কোটি টাকা, যা ব্যাংকটির মোট ঋণের প্রায় অর্ধেক। এসব ঋণের বিপরীতে জামানত রাখা হয়েছিল মাত্র ৪ হাজার ৩৫৯ কোটি টাকা।


ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারের পতন হয়। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংক ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়ে গঠন করে নতুন অন্তর্বর্তীকালীন বোর্ড। একইসঙ্গে এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন শেয়ার হস্তান্তর ও বিক্রির ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকটির নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করে এবং ব্যাংকটির স্বচ্ছতা ও আর্থিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা শুরু হয়।


শেয়ার করুন