১৫ মে ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ০৫:৫৫:৪০ অপরাহ্ন
নিজ গ্রামে আবেগঘন সময় কাটালেন প্রধান উপদেষ্টা
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৫-০৫-২০২৫
নিজ গ্রামে আবেগঘন সময় কাটালেন প্রধান উপদেষ্টা

চট্টগ্রামে দিনের কর্মব্যস্ততা শেষে নিজ গ্রামে ফিরে পাড়া-প্রতিবেশী, আত্মীয়স্বজন ও গ্রামবাসীর সঙ্গে আবেগঘন সময় কাটালেন প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। 


গতকাল বুধবার বিকালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে অংশ নেওয়ার পর তিনি সোজা চলে যান হাটহাজারী উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের বাথুয়া গ্রামে। গ্রামের সাধারণ মানুষ তাদের প্রিয় ইউনূসকে সামনে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। একসময় যাদের সঙ্গে তিনি খেলেছেন, পথ হেঁটেছেন, তাদের অনেকেই উপস্থিত ছিলেন সেই মুহূর্তে। গ্রাম জুড়ে যেন উৎসবের আমেজ। সেখানে তিনি তার দাদা-দাদিসহ প্রয়াত স্বজনদের কবর জিয়ারত করেন। এরপর গ্রামের খোলা মাঠে উপস্থিত গ্রামবাসীর উদ্দেশে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন।


চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলার সময় ড. ইউনূস ফিরে যান হারিয়ে যাওয়া শৈশবের দিনগুলোতে। যেখানে ছিল গ্রামের মাঠ, পাঠশালা, ছোটবেলার দুষ্টুমি আর পরম আপনজনদের ছায়া। এ সময় তিনি তার শৈশবস্মৃতি, চাটগাঁর আঞ্চলিক ভাষায় ছড়া আর হাস্যরসের মধ্য দিয়ে তিনি মুগ্ধ করেন গ্রামের মানুষদের। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তনে এসেছিলাম, ভাবলাম এই সুযোগে আপনাদের সঙ্গে একটু দেখা করে যাই। আপনাদের ভালোবাসা পেয়েই আমি আজকের জায়গায় এসেছি। সবার দোয়া চাই। 


তিনি বলেন, ছেলেমেয়েদের অনেকেই বড় হয়ে গেছে। তাদের এখন চিনতে পারছি না। চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় তিনি বলেন, ছোটবেলায় আমরা ছড়ার মতো বলতাম, ‘আব্দুর রশীদ ঠেণ্ডলের ঠাট, নজু মিয়া হাট, দুলা মিয়ার দাদার বাড়ি, শোলক মিয়ার মোটর গাড়ি।’ 


তিনি বলেন, তখন আমাদের দাদারা মোটর গাড়ি নিয়ে আসতেন। এ কথা চিন্তা করতেও কেমন লাগছে। দেশে তখন মোটর গাড়ি কেউ চিনতও না। এসব কথা মনে পড়ছে। একের পর এক পরিবর্তন হচ্ছে। পরে শুনলাম ‘নজু মিয়া হাট বলে শ’র অই গেইয়ে। শ’র বলে বিলাত অই গেইয়ে।’ (নজু মিয়া হাট নাকি শহর হয়ে গেছে। শহর নাকি বিলাত হয়ে গেছে।) এখন তো নজুমিয়া হাট শহর হয়ে গেছে মনে হচ্ছে। আপনাদের শহর মনে হচ্ছে? আরও হবে। 


ড. ইউনূস বলেন, খুব ভালো লাগছে সবাইকে দেখে। আজ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন সভায় এসেছিলাম। বললাম, বাড়ির কাছে এসেছি, কোনো রকমে বাড়ির দিকে নিয়ে যেতে পারো কি না দেখ। নড়াচড়া করা মুশকিল, অনেক আয়োজন লাগে। সবার সঙ্গে দেখা করে গেলাম। আশাকরি, ভবিষ্যতে আরও আসা-যাওয়া হবে। আমার জন্য দোয়া রাখবেন।         


এর আগে ড. ইউনূস হাটহাজারীতে গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত প্রথম শাখা এবং ‘জোবরা জাদুঘর’ পরিদর্শন করেন, যা তার কর্মজীবনের অন্যতম সূতিকাগার। চট্টগ্রামে কর্মব্যস্ত দিনের শেষে সন্ধ্যায় ঢাকায় ফিরে যান ড. ইউনূস।  


শেয়ার করুন