১৫ জুন ২০২৫, রবিবার, ০৩:৪০:৫৫ পূর্বাহ্ন
ইরানের শাসনব্যবস্থা বদলাবে ইসরায়েল?
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৪-০৬-২০২৫
ইরানের শাসনব্যবস্থা বদলাবে ইসরায়েল?

শুক্রবার (১৩ জুন) ইরানজুড়ে অতর্কিত হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। এতে ইরানের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা, কমান্ডারসহ অন্তত ৭৮ জন নিহত হয়েছে। সেই সঙ্গে আহত হয়েছে তিন শতাধিক। ইসরায়েল দাবি করেছে, তারা ইরানের সামরিক ঘাঁটি, ক্ষেপণাস্ত্র কারখানা, বিমানঘাঁটিসহ, ইউরেনিয়াম মজুদের প্রধান অবকাঠামোতেও হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েল সরকার ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি প্রতিহতের অজুহাতে দেশটিতে অতর্কিত হামলা শুরু করেছে, তবে বিশ্লেষকরা বলছেন এই হামলার নেপথ্যে রয়েছে ভিন্ন কিছু। 


বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বড় লক্ষ্য নিয়েই ইরানে শুক্রবার হামলা শুরু করেছে। তার অন্যতম একটি উদ্দেশ্য হচ্ছে, ইরানের শাসনব্যবস্থা বদলে ফেলা।


বার্তাসংস্থা রয়টার্স লিখেছে, ইরানে ইসরায়েলের আকস্মিক আক্রমণের একটি স্পষ্ট লক্ষ্য ছিল- তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে ব্যাপকভাবে ব্যাহত করা এবং দেশটির পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির প্রক্রিয়াকে দীর্ঘায়িত করা। 


কিন্তু ইরানে ইসরায়েলের আক্রমণের পরিধি ও হামলার লক্ষ্যবস্তু এবং ইসরায়েলি রাজনীতিবিদদের ভাষ্য যেটির বার্তা দিচ্ছে তা হলো, ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের লক্ষ্য- ইরানের শাসনব্যবস্থা পরিবর্তন করা।  


শুক্রবার ইসরায়েল শুধু ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা ও ক্ষেপণাস্ত্র কারখানাতেই হামলা চালায়নি, দেশটি তেহরানের সামরিক বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তা ও ছয়জন পরমাণু বিজ্ঞানীকে হত্যা করেছে।


বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটির লক্ষ্য হলো ইরান এবং তার মিত্রদের মধ্যে দেশটির বিশ্বাসযোগ্যতা হ্রাস করা- যা ইরানি নেতৃত্বকে অস্থিতিশীল করতে পারে।  


ওয়াশিংটন ইনস্টিটিউটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের অধীনে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মাইকেল সিং বলেছেন, ইসরায়েলের এমন পদক্ষেপের একটি কারণ হলো তারা ইরানের শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন দেখতে আশা করছে। 


ইরানের জনগণকে সরকাররের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার আহ্বান নেতানিয়াহুরইরানের জনগণকে সরকাররের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার আহ্বান নেতানিয়াহুর

এদিকে ইরানের হামলার পরেই নেতানিয়াহু একটি ভিডিও বার্তা প্রকাশ করেছেন। ভিডিওতে তিনি ইরানের শাসকদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের আহ্বান জানান। তিনি বলেছেন, ইরানের মিত্র হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে ইসরায়েলি পদক্ষেপে লেবাননে নতুন সরকার হয়েছে এবং সিরিয়াতেও আসাদ শাসনের পতন ঘটেছে। 


ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এখন ইরানের জনগণেরও সুযোগ আছে, আমি বিশ্বাস করি আপনাদের বিজয়ের দিন সন্নিকটে। এবং যখন এটি ঘটবে, তখন আমাদের দুই প্রাচীন জনগণের মধ্যে মহান বন্ধুত্ব আবারও বিকশিত হবে। 



বিবিসি তাদের প্রতিবেদনে বলছে, বহুদিন থেকেই ইরানের জনগণের অনেকেই তাদের অর্থনীতির অবস্থা, সীমিত বাকস্বাধীনতা, নারী অধিকার ও সংখ্যালঘুদের অধিকার নিয়ে অসন্তুষ্ট। এমন পরিস্থিতিতে ইসরায়েলের এই হামলা ইরানের নেতৃত্বের জন্য সত্যিকারের হুমকি হয়েই এসেছে। 


এর আগে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে ইরানের নীতি পুলিশের হাতে মাশা আমিনির মৃত্যু ঘিরে দেশটিতে ব্যাপক সরকারবিরোধী বিক্ষোভ দেখা দিয়েছিল। তবে সেইসময় সেই বিক্ষোভ সামলে নেয় ইরান সরকার। 


শেয়ার করুন