১৭ জুলাই ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ০৮:০৫:৪৭ অপরাহ্ন
ভারতের সঙ্গে শিগগিরই বাণিজ্য চুক্তি: ট্রাম্প
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৭-০৭-২০২৫
ভারতের সঙ্গে শিগগিরই বাণিজ্য চুক্তি: ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, দেশটি শিগগিরই ভারতের সঙ্গে একটি নতুন বাণিজ্য চুক্তিতে পৌঁছাতে যাচ্ছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন। ট্রাম্পের বক্তব্যের প্রাসঙ্গিকতা আরও দৃঢ় হয়েছে, কারণ এ সময় ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থান করছেন।


ব্লুমবার্গের বরাতে ইকোনমিক টাইমস জানিয়েছে, ভারত এখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এমন একটি চুক্তি চায়, যাতে প্রতিবেশী দেশ ইন্দোনেশিয়ার তুলনায় সে বেশি প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা পায়। যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে যে বাণিজ্য চুক্তি করেছে, সেখানে গড়ে ১৯ শতাংশ শুল্ক নির্ধারণ করা হয়েছে। ভারতের ক্ষেত্রে এই হার ২০ শতাংশের নিচে হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।


ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তির প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, 'তারা আমাদের ইন্দোনেশিয়ার বাজারে প্রবেশাধিকার দিয়েছে, যা আগে আমাদের ছিল না। এটি সম্ভবত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক। ভারতও এখন এই পথেই হাঁটছে।'


তিনি আরও বলেন, 'আমরা এখন ভারতের বাজারে প্রবেশের দ্বারপ্রান্তে। মনে রাখতে হবে, আগে আমাদের এসব দেশে ঢোকার সুযোগ ছিল না। আমাদের উদ্যোক্তারা সেখানে পণ্য পৌঁছাতে পারত না। এখন আমরা শুল্কনীতি পরিবর্তনের মাধ্যমে সেই সুযোগ পাচ্ছি।'


এর আগেও ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যচুক্তি প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এ বিষয়ে ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়াল এ সপ্তাহের শুরুতে বলেন, 'আলোচনা দ্রুত এগোচ্ছে।'


তবে এখনও কিছু ইস্যু নিয়ে দ্বন্দ্ব রয়েছে। যেমন, ভারত এখনো কৃষিপণ্য ও দুগ্ধজাত পণ্যে শুল্ক ছাড় দিতে রাজি নয়। এই দুটি খাত ভারতের জন্য অত্যন্ত সংবেদনশীল হওয়ায়, অতীতেও প্রতিটি আলোচনায় দেশটি এগুলোকে রক্ষা করেছে। ফলে যেকোনো সম্ভাব্য অন্তর্বর্তী চুক্তিতেও এই খাতগুলোর অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম।


অন্যদিকে ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়াম এবং গাড়ি আমদানিতে যুক্তরাষ্ট্র যে উচ্চ শুল্ক আরোপ করেছে—সেই বিষয়ে এখনও মতবিরোধ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ইস্পাতে ৫০ শতাংশ এবং গাড়িতে ২৫ শতাংশ শুল্ক ধার্য করেছে। ভারত এ বিষয়ে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) কাছেও অভিযোগ জানিয়েছে।


এর মধ্যে ট্রাম্প প্রশাসন সম্প্রতি একের পর এক দেশকে ‘শুল্ক চিঠি’ পাঠাচ্ছে, যেখানে তাদের রপ্তানিপণ্যের ওপর শুল্ক হার জানানো হচ্ছে। যদিও ভারত এখনো এমন কোনো চিঠি পায়নি। পূর্ব নির্ধারিত ৯ জুলাইয়ের পরিবর্তে পাল্টা শুল্ক কার্যকর হওয়ার তারিখ পিছিয়ে ১ আগস্ট নির্ধারণ করা হয়েছে।


যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে দেশটির সঙ্গে ভারতের পণ্য বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১২ হাজার ৯২০ কোটি মার্কিন ডলার। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে ৪ হাজার ১৮০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে, যা ২০২৩ সালের তুলনায় ৩ দশমিক ৪ শতাংশ বা ১৪০ কোটি ডলার বেশি। একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্র ভারত থেকে পণ্য আমদানি করেছে ৮ হাজার ৭৪০ কোটি ডলারের, যা আগের বছরের তুলনায় ৪ দশমিক ৫ শতাংশ বা ৩৭০ কোটি ডলার বেশি।


ফলে, ২০২৪ সালে ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৫৭০ কোটি ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ৫ দশমিক ৪ শতাংশ বা ২৪০ কোটি ডলার বেড়েছে।


শেয়ার করুন