২১ জুলাই ২০২৫, সোমবার, ০৬:৫২:২১ অপরাহ্ন
বেরোবিতে ছাত্ররাজনীতির প্রতিবাদে শাড়ি-চুড়ি নিয়ে প্রক্টর কার্যালয়ে শিক্ষার্থীরা
  • আপডেট করা হয়েছে : ২১-০৭-২০২৫
বেরোবিতে ছাত্ররাজনীতির প্রতিবাদে শাড়ি-চুড়ি নিয়ে প্রক্টর কার্যালয়ে শিক্ষার্থীরা

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীদের একাংশ। তারা লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতির প্রতিবাদ জানিয়ে রোববার (২০ জুলাই) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টার দপ্তরে শাড়ি ও চুড়ি রেখে প্রতীকী প্রতিবাদ জানান।


এ ঘটনায় নারীদের অবমাননার অভিযোগ তুলে তাৎক্ষণিকভাবে বিক্ষোভ করেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। তারা উপাচার্যের কাছে আলটিমেটাম দিয়ে বলেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সোমবার দুপুরের মধ্যে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।


প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেলে প্রশাসনিক ভবনের দক্ষিণ গেটে কয়েকজন শিক্ষার্থী জড়ো হয়ে ছাত্ররাজনীতির বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। পরে তারা শাড়ি ও চুড়ি হাতে প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রবেশ করেন এবং দপ্তরপ্রধানরা উপস্থিত না থাকায় তাদের চেয়ারে শাড়ি মুড়িয়ে ও টেবিলে চুড়ি রেখে আসেন।


বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক শামসুর রহমান জানান, ২০২৪ সালের ২৮ অক্টোবর সিন্ডিকেট সভায় লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র ও শিক্ষক রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু এরপরও ছাত্রশিবিরের কমিটি প্রকাশ এবং ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে সদস্য সংগ্রহ ফরম বিতরণ করা হয়। তিনি বলেন, ‘প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তায় শিক্ষার্থীরা প্রতীকী প্রতিবাদ করেছেন।’


অপর শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান বলেন, ‘আবু সাঈদের হত্যাকাণ্ডের পর ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হলেও প্রশাসন তা কার্যকর করতে ব্যর্থ হয়েছে।’


বিকেলে এই ঘটনার পর মূল ফটকে বিক্ষোভ করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল। তাদের অভিযোগ, ‘সাধারণ শিক্ষার্থী’ পরিচয়ে কিছু শিক্ষার্থী নারীদের প্রতি অবমাননা করেছে।


বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক আল আমিন বলেন, ‘কয়েকজন শিক্ষার্থী প্রশাসনকে ব্যবহার করে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের পক্ষে কাজ করছে। মূলত তারা ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠার পথ তৈরি করছে।’ পরবর্তীতে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা উপাচার্যের কার্যালয়ে গিয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সময়সীমা বেঁধে দেন।


এদিকে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এক জরুরি নোটিশে জানায়, ক্যাম্পাসে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ রয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ব্যবহার করে কেউ যেন এ ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে।


এ বিষয়ে উপাচার্য শওকাত আলী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিকেল পাঁচটার দিকে বসার কথা ছিল; কিন্তু তাঁরা আগেই এটা করেছেন। তাঁর দাবি, যদি কেউ ছাত্ররাজনীতি করেন, সে ক্ষেত্রে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে করা হয়েছে। কমিটি বিষয়গুলো দেখছে। এরপর প্রমাণস্বরূপ তাঁদের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’


শেয়ার করুন