একই দিনে দুবার সূর্যগ্রহণ—বিরল এই মহাজাগতিক দৃশ্য নজরে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার পাঠানো স্যাটেলাইট ‘সোলার ডাইনামিকস অবজারভেটরি’ বা এসডিও-র চোখে। গত ২৫ জুলাই এই স্যাটেলাইটটি মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে দু’টি সূর্যগ্রহণ পর্যবেক্ষণ করে এবং তা ছবিতে ধারণ করে।
২০১০ সালে মহাশূন্যে উৎক্ষেপণ করা এই স্যাটেলাইটটি সূর্যের সৌরশিখা, চৌম্বক ক্ষেত্র ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের জন্যই কাজ করছে। এটি জিওসিনক্রোনাস কক্ষপথে অবস্থান করে, ফলে প্রায় সর্বক্ষণ সূর্যের দিকে তাকিয়ে থাকতে পারে।
নাসার দেওয়া তথ্যমতে, ২৫ জুলাই বাংলাদেশ সময় সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে চাঁদ এসডিও ও সূর্যের মাঝখানে এসে পড়ায় প্রথম সূর্যগ্রহণ ঘটে। এরপর দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে পৃথিবী নিজেই এসডিওর দৃষ্টিকোণ থেকে সূর্যকে আড়াল করতে শুরু করে এবং বেলা ২টার আগে সূর্য পুরোপুরি পৃথিবীর আড়ালে হারিয়ে যায়।
এভাবে মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে ঘটে যায় দু’টি সূর্যগ্রহণ। এসডিও তখন চন্দ্র ও পৃথিবীর কারণে সৃষ্টি হওয়া এই দুটি ভিন্ন রকম গ্রহণ দৃশ্য স্পষ্টভাবে পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম হয়।
প্রথম গ্রহণটি ছিল আংশিক, যেটি ‘লুনার ট্রানজিট’ বা চাঁদের অতিক্রমণ হিসেবে পূর্বাভাস দিয়েছিল নাসা। এই সময় চাঁদ সূর্যের পৃষ্ঠের প্রায় ৬২ শতাংশ ঢেকে দেয় বলে ধারণা করা হয়েছিল। বাস্তবে দেখা যায়, চাঁদের ছায়া ধীরে ধীরে সূর্যকে অতিক্রম করে এবং কিছু সময়ের জন্য প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ সূর্য আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে।
এসডিওর আলট্রাভায়োলেট টেলিস্কোপ—‘এআইএ’ (অ্যাটমোসফেরিক ইমেজিং অ্যাসেম্বলি)—এই সময়কার দৃশ্য ধারণ করে। এতে সূর্যের নিম্ন বায়ুমণ্ডল এবং প্রান্তে থাকা উজ্জ্বল করোনাল লুপগুলো স্পষ্টভাবে দেখা যায়।
এসব মহাজাগতিক দৃশ্য শুধু বিজ্ঞানীদের গবেষণার জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং সৌরজগতের গতিপ্রকৃতি বুঝতেও এসব পর্যবেক্ষণ বড় ভূমিকা রাখে।