১০ অগাস্ট ২০২৫, রবিবার, ০২:২৮:৩৯ পূর্বাহ্ন
১৫ আগস্ট পুতিনের সঙ্গে দেখা করবেন ট্রাম্প
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৯-০৮-২০২৫
১৫ আগস্ট পুতিনের সঙ্গে দেখা করবেন ট্রাম্প

ইউক্রেন যুদ্ধের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে আগামী শুক্রবার (১৫ আগস্ট) আলাস্কায় বসছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। শুক্রবার (৮ আগস্ট) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ বৈঠকের ঘোষণা দেন ট্রাম্প। পরে ক্রেমলিনও বিষয়টি নিশ্চিত করে জানায়, রাশিয়ার সান্নিধ্যের কারণে আলাস্কা ‘যৌক্তিক স্থান’।


ক্রেমলিন আরও জানিয়েছে, ট্রাম্পকে ভবিষ্যতে রাশিয়ায় দ্বিতীয় শীর্ষ বৈঠকের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তবে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি।


বৈঠকের ঘোষণা আসে এমন এক দিনে, যখন ট্রাম্প ইঙ্গিত দেন, ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানে কিছু অঞ্চল রাশিয়ার হাতে ছাড়তে হতে পারে। হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “তিন বছরের বেশি সময় ধরে এসব অঞ্চলে লড়াই চলছে। অনেক রুশ ও ইউক্রেনীয় প্রাণ হারিয়েছে। কিছু জায়গা ফেরত আসবে, কিছু জায়গা অদলবদল হবে দুই পক্ষেরই মঙ্গলের জন্য।”


যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিবিএস নিউজ জানায়, আলোচনায় যে প্রস্তাব উঠতে পারে, তার আওতায় রাশিয়া দনবাসের পুরো অঞ্চল ও ক্রিমিয়া রাখবে, আর খেরসন ও জাপোরিঝঝিয়া অঞ্চল (যার আংশিক নিয়ন্ত্রণ রাশিয়ার হাতে) ছেড়ে দেবে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, পুতিন সম্প্রতি মস্কোয় ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফকে একই ধরনের প্রস্তাব দিয়েছেন।


তবে এ ধরনের সমঝোতা নিয়ে ইউক্রেন ও ইউরোপীয় দেশগুলোর অবস্থান পরিষ্কার নয়। প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, সীমান্ত ছাড়ের কোনো শর্ত তিনি মেনে নেবেন না।


মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বৈঠকের পরিকল্পনা এখনো চূড়ান্ত হয়নি, এবং কোনো পর্যায়ে জেলেনস্কিও এতে যুক্ত হতে পারেন। বর্তমানে রাশিয়া ইউক্রেনের প্রায় ২০ শতাংশ ভূখণ্ড দখলে রেখেছে। তিন দফা সরাসরি আলোচনা হলেও মস্কো ও কিয়েভের মধ্যে শান্তিচুক্তি নিয়ে ফারাক কমেনি।


রাশিয়ার শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে, ইউক্রেনকে নিরপেক্ষ রাষ্ট্রে পরিণত করা, সামরিক শক্তি কমানো, ন্যাটোতে যোগদানের আকাঙ্ক্ষা ত্যাগ, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, এবং দক্ষিণ–পূর্বের চারটি অঞ্চল থেকে ইউক্রেনীয় সেনা প্রত্যাহার।


ট্রাম্প অবশ্য দাবি করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সামনে এখনো ত্রিপক্ষীয় শান্তি চুক্তির সুযোগ আছে। তার ভাষায়, “ইউরোপীয় নেতারা শান্তি চান, পুতিন চান, জেলেনস্কিও চান। সই করার জন্য জেলেনস্কির যা দরকার, তা তিনি পাচ্ছেন এবং প্রস্তুতি নিচ্ছেন।”


গত মাসে বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প স্বীকার করেছিলেন, অন্তত চারবার তিনি ভেবেছিলেন রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে চুক্তি হতে পারে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ক্রেমলিনের প্রতি তার অবস্থান কিছুটা কঠোর হয়েছে; তিনি ৮ আগস্টের মধ্যে যুদ্ধবিরতির আল্টিমেটাম দেন, না হলে কঠোর নিষেধাজ্ঞার হুমকি দেন। তবে শুক্রবার হোয়াইট হাউস নতুন কোনো নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেনি।


২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আগ্রাসনের পর এটাই হবে দুই নেতার প্রথম মুখোমুখি বৈঠক। শেষবার কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন ২০২১ সালে, সুইজারল্যান্ডের জেনেভায়—তখন ছিলেন জো বাইডেন।


শেয়ার করুন