বড় স্বপ্ন দেখিয়ে এখনো খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে রাজশাহী হাইটেক পার্ক। অবকাঠামো থাকলেও নেই কাঙ্ক্ষিত কর্মসংস্থানের সুযোগ। গত বছরের ৫ আগস্টে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় এখনো কাটেনি বিনিয়োগকারীদের শঙ্কা। বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা ও পর্যাপ্ত প্রচারের অভাবে দিন দিন লোকসানের বোঝা হয়ে দাঁড়াচ্ছে হাইটেক পার্ক।
পদ্মা নদীর তীরে ৩১ একর জায়গায় নির্মিত হয় রাজশাহী হাইটেক পার্কের ১০ তলা সিলিকন টাওয়ার। ২০২৪ সালের ৩০ জুন কার্যক্রম শুরুর এক মাস না যেতেই ৫ আগস্ট হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটে বিপর্যস্ত হয় রাজশাহীর এ প্রযুক্তি কেন্দ্র।
হামলার এক বছর পেরিয়ে গেলেও ভবনের নিচতলা ও দোতলা এখনো বিধ্বস্ত। নতুন করে কিছু প্রতিষ্ঠান জায়গা নিলেও, ফাঁকা পড়ে আছে অনেক অংশ। উদ্যোক্তাদের মতে, এ মুহূর্তে সবচেয়ে বড় বাধা নিরাপত্তা শঙ্কা।
মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন টিম ও বিজনেস অটোমেশন লিমিটেডের ইনচার্জ মীর হুসাইন কবীর বলেন, `আমাদের কোম্পানিতে কমপক্ষে ১২০ জনকে কর্মসংস্থানের সুযোগ দেয়ার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে এখন মাত্র ৫০ জন কাজ করছে।'
নেত্র সিস্টেম লিমিটেডের এমডি ও সিইও আশিক মোহাম্মেদ বলেন, `হামলার পর বেশ কিছু কর্মী চাকরি ছেড়ে চলে গেছে। তখন মনে হয়েছিল হয়তো কোম্পানি আর টিকবে না। এখন কিছুটা স্থিতিশীলতা ফিরেছে।'
সুষ্ঠু পরিকল্পনা ছাড়াই হাইটেক পার্কের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৪ হাজার কর্মসংস্থানের লক্ষ্য। অথচ, বর্তমানে পার্কের দুই ভবনে কাজ করছেন মাত্র সাড়ে ৩শ জন। আইটি প্রশিক্ষণার্থী বলছেন, দেশে প্রযুক্তি খাতে দক্ষ জনশক্তি থাকলেও পর্যাপ্ত বিনিয়োগ টানতে ব্যর্থ হয়েছে সাবেক আওয়ামী লীগ সরকার। সিলিকন টাওয়ারের পাশাপাশি পার্কে আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার থাকলেও পূর্ণতা পায়নি কাঙ্ক্ষিত পরিকল্পনা। ফলে তরুণদের স্বপ্নের রাজশাহী হাইটেক পার্ক এখনো সম্ভাবনা আর হতাশার মিশ্র বাস্তবতায় টিকে আছে।
কর্তৃপক্ষ বলছে, সমস্যা অনেকটাই কাটিয়ে উঠেছে হাইটেক পার্ক। রাজশাহী হাইটেক পার্কের ডেপুটি ডিরেক্টর মাহফুজুল কবির অবশ্য দাবি করেছেন, ‘এখন আমরা প্যানিক কাটিয়ে উঠেছি। সাড়ে ৩০০ মানুষ এরমধ্যে কাজে যোগ দিয়েছেন। বিভাগীয় কমিশনার আমাদের সার্বিক সহযোগিতা দিচ্ছেন। বর্তমানে কোনো নিরাপত্তা সমস্যা নেই।'
উল্লেখ্য, রাজশাহী হাইটেক পার্ক নির্মাণে ব্যয় হয় ৩৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা।