১৯ নভেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ১০:৪২:১২ পূর্বাহ্ন
রাজশাহীতে শিক্ষিকাকে কান ধরে ওঠবস করালেন প্রধান শিক্ষিকা
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৫-০৮-২০২২
রাজশাহীতে শিক্ষিকাকে কান ধরে ওঠবস করালেন প্রধান শিক্ষিকা

 রাজশাহীতে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকাকে কান ধরে ওঠবস করানোর অভিযোগ উঠেছে। ফেসবুকে ছবি দেওয়ায় প্রধান শিক্ষিকা তাঁকে এ শাস্তি দিয়েছেন। একই সঙ্গে তার ফোনটিও কেড়ে নেন প্রধান শিক্ষিকা। পবা উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের হাড়ুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।


ভুক্তভোগী শিক্ষিকা বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এ বিষয়ে সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।


লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, প্রধান শিক্ষিকা নাজমা ফেরদৌসী বুধবার সকালে তাঁর কার্যালয়ে ওই শিক্ষিকাকে ডেকে পাঠান। এ সময় প্রধান শিক্ষিকার স্বামী উপস্থিত ছিলেন। তিনি একটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক। এ ছাড়াও সেখানে বিদ্যালয়টির জমিদাতাও উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের উপস্থিতিতে প্রধান শিক্ষিকা ওই শিক্ষিকাকে কান ধরে ওঠবস করান।


এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোসা. রুনা লায়লাকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন। আগামী রোববার প্রতিবেদন দাখিল করবেন তিনি।


অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষিকা বলেন, ‘ওই শিক্ষিকা অন্য এক নারীর দেহের সঙ্গে আমার মুখমণ্ডল লাগিয়ে একটি ভিডিও তৈরি করেছেন। ভিডিওতে মেয়েটিকে নাচতে দেখা যাচ্ছে। তার সামনে দাঁড়িয়ে একজন পুরুষ মানুষ কথা বলছেন। ভিডিওটি সহকারী শিক্ষিকা তাঁর নিজের ফেসবুকের স্টোরিতে দিয়েছেন।’


কান ধরে ওঠবস করানোর ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি কান ধরে ওঠবস করাননি। সহকারী শিক্ষিকা যে অপরাধ করেছেন, তা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলার আওতায় পড়ে। মামলা থেকে বাঁচার জন্য এখন মিথ্যা অভিযোগ সাজিয়েছেন।


মামলা কেন করেননি জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষিকা বলেন, মেয়েটির স্বামী মারা গেছে। তাঁর প্রতি অনুকম্পা দেখিয়ে তিনি মামলা করেননি।


যোগাযোগ করা হলে ওই সহকারী শিক্ষিকা বলেন, তিনি প্রধান শিক্ষিকার মাথা জোড়া লাগিয়ে কোনো ভিডিও দেননি। তিনি প্রধান শিক্ষিকার বান্ধবীর সঙ্গে তোলা সুন্দর, ভদ্র একটি ছবি ফেসবুক স্টোরিতে দিয়েছিলেন। ওই ছবি প্রধান শিক্ষিকা নিজেই হোয়াটস অ্যাপে তাঁকে দিয়েছিলেন।


তিনি আরও বলেন, সে সময় প্রধান শিক্ষিকা তিন দিনের ছুটিতে ছিলেন। গত রোববার তিনি বিদ্যালয়ে এলে একজন শিক্ষিকা ছবি দেওয়ার বিষয়টি বলে দেন। সেদিনই প্রধান শিক্ষিকা তাঁর ফোনটি কেড়ে নেন। এখনো ফেরত দেননি। ছবি দেওয়ার অপরাধে বুধবার তাঁকে কান ধরে ওঠবস করান। তাঁকে অন্যায়ভাবে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। বাধ্য হয়ে তিনি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

শেয়ার করুন