রাজশাহীর তানোর উপজেলায় একটি বাড়ির প্রধান ফটকে বাহির থেকে তালাবদ্ধ অথচ ভেতরে একটি ঘরের বারান্দা থেকে এক যুবকের অর্ধগলিত লাশ ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলার তানোর উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরের পশ্চিম পাশের সিমানা প্রাচীর সংলগ্ন ওই বাড়ি থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত যুবকের নাম আমিনুল ইসলাম বাবু (৪৫)। তিনি চাঁপাইনাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার বালক্যা পাড়া গ্রামের এমদাদুল হকের ছেলে বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশের ধারনা, ওই বাড়িতে কোনো লোক বাস করতো না। হয়তো কেউ তাকে হত্যা করে বাড়ির বারান্দায় লাশ ঝুলিয়ে দিয়ে বাড়ির প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে চলে গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বুধবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলা চত্ত্বরের আশেপাশে কয়েকটি বাড়ির লোকজন নিহত যুবকের মরদেহ যেই বাড়িতে ( মৃত মোস্তাফা মিস্ত্রীর বাড়ি) ছিলো সেই বাড়ি থেকে দুর্গন্ধ পায়। এমন দুর্গন্ধের খবর তানোর থানা পুলিশকে অবহিত করেন স্থানীয় লোকজন। খবর পেয়ে তানোর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ওসমান গণি পুলিশের একটি টিম নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। বাড়িটির প্রধান ফটকের তালা ভেঙ্গে ভেতরে গিয়ে ঘরের বারন্দায় রশিতে ঝুলন্ত অবস্থায় ওই ব্যক্তির অর্ধগলিত লাশ দেখতে পায়। লাশটি সেখান থেকে উদ্ধার মরে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী আলমগীর হোসেন নামের এক ব্যক্তি বলেন, বাড়িটি মৃত মোস্তফা মিস্ত্রির। তার তিন মেয়ে। পাশাপাশি তাদের তিন বোনের বাড়ি। কিন্তু কেউই ওই বাড়ি তিনটিতে থাকেন না। চাকরি কিংবা ব্যবসা-বাণিজ্যের সুবাদে রাজশাহী শহরেই তারা বসবাস করেন। তাদের তিন বোনের মধ্যে একজনের তালাবদ্ধ বাড়ির ঘরের বারান্দায় লাশটি ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল।
তানোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান মিয়া বলেন, ‘বাড়ির প্রধান ফটক যেভাবে তালাবদ্ধ ছিলো তাতে ওই বাড়ির সীমানা প্রাচীর টকপিয়ে ওই ব্যক্তি বাড়ির অভ্যন্তরে প্রবেশ করে আত্মহত্যা করেছে এমনটি আসলে ভাবনাতে আসছে না। তাই প্রাথমিকভাবে আমরা ধারনা করছি, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড হতে পারে। লাশটি ২-৩ দিন আগের। লাশের পুরো শরীর ফুলে যাওয়ার পাশাপাশি কিছু কিছু জায়গা গলে পচন ধরেছে। যার কারণে ওই বাড়ি থেকে প্রচণ্ড দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিলো। তবে এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা সে বিষয়ে আমরা নিশ্চিত নই। মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রামেক হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে। নিহত ব্যক্তির পরিবারের খোঁজ পেয়ে তাদেরকে খবর পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয়েছে। নিহত ব্যক্তির আত্মীয়-স্বজনদের সাথে কথা বলা গেলে কিছুটা তথ্য পাওয়া যাবে। সবকিছু মিলেই পুলিশ বিষয়টি গভীরভাবে খতিয়ে দেখছে।’