রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার জাহানাবাদ ইউনিয়নের তেঘর মাড়িয়া গ্রামে গভীর নলকূপের দখল আধিপত্যকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসীর দুপক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধ চলে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১২ সেপ্টেম্বর আবু বক্কর ও মুনসুর রহমান গ্রুপের মধ্যে ছোটখাটো মারামারির ঘটনা ঘটে। এঘটনায় আবু বক্কর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধিন রয়েছেন।
তিনি হাসপাতাল থেকেই প্রতিশোধ গ্রহণের উদ্দেশ্যে তার লোকজনকে উস্কে দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এরপর ১৬ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সকালে আবু বক্করের লোকজন গ্রামের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে গিয়ে মুনসুরের লোকজনের উপর অতর্কিত হামলা চালায়।
এ খবর প্রচার হলে দু’পক্ষের মধ্যে মারামারি তিব্রতর হয়। হামলায় উভয় পক্ষের আবু তাহের, বেলাল এবং সুরুজ, আমিনুল, সবুজ, মেরাজুল সহ ৮/১০ গুরুতর ভাবে আহত হন বলে জানা গেছে। আহতদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানা গেছে। ঘটনার খবর পেয়ে মোহনপুর থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করতে ঘটনাস্থল হতে কয়েক জনকে আটক করে। সরজমিনে শুক্রবার বিকেলে তেঘর মাড়িয়া গ্রামে গিয়ে নারী, শিশু ও অসুস্থ্য মানুষ ছাড়া পুরুষ মানুষের সাক্ষাত মেলেনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তেঘর মাড়িয়া মৌজার-১ গভীর নলকূপটি রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে দীর্ঘদিন ধরে নিজের কুক্ষিগত করে রাখেন আবু বক্কর ও মুনসুর। এতে খরা মৌসুমে পানি সেচের অভাবে পুড়ে মরতো বোরো ধান। পরবর্তীতে কৃষকদের কঠোর দাবীর মুখে ওই গভীর নলকূপটি কৃষকদের তদারকিতেই চলতো। আবু বকর ও মুনসুর পুনরাই গভীর নলকূপটি হস্তগত করার পাঁয়তারা করছিলেন এবং গ্রামবাসীর মধ্যে ফ্যাসাদ সৃষ্টি করেই রাখছিলেন।
জাহানাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হযরত আলী বলেন, ইতোপুর্বে দুপক্ষকে নিয়ে মিমাংসার চেষ্টা করা হয়। তারা মেনে নিতেও চাই তবে পরবর্তীতে পশুর মতো আচরণ করে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। তারা এখন হামলা-মামলার ভয়ে গ্রামে নাই। সকল কিছুর পরেও এলাকায় শান্তির লক্ষে উভয় পক্ষের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করছি, তারা চাইলে ইউনিয়ন পরিষদে বসে বিষয়টির অবসান ঘটাতে পারে।
এবিষয়ে মোহনপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ওই গ্রামে শান্তি শৃংখলা রক্ষার লক্ষে একটি কমিটি রয়েছে। তারা সঠিক দায়িত্ব পালন করেনি। এর আগে মারামারিতে বাক্কার পক্ষের একটি অভিযোগ দায়ের হয়। এঘটনায় পুলিশ আসামীদের ধরার জন্য চেষ্টা চালিয়ে আসছিলো। শুক্রবার হঠাৎ করে তারা মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন। পরিস্থিতি শান্ত করতে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে কয়েক জনকে আটক করে। পরবর্তীতে খোঁজ নিয়ে মারামারির সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততা না থাকায় ছেড়ে দেয়া হয়। তবে তদন্ত সাপেক্ষে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।