ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের নতুন ভবনের নির্মাণকাজ শেষ হলেও ভাড়া বাসায় চলছে অফিসের কার্যক্রম। এতে ভাড়া বাবদ গুনতে হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা।
ভবনে ফার্নিচার নিয়ে গণপূর্ত বিভাগ ও মন্ত্রণালয়ের মধ্যে চিঠি চালাচালিতেই কেটে গেছে এক বছর। নষ্ট হচ্ছে দলিলসহ গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র।
সাব-রেজিস্ট্রি অফিস ও প্রকৌশলী কার্যালয় সূত্র জানায়, নতুন ভবন নির্মাণের জন্য সরকার বরাদ্দ দেয় প্রায় দুই কোটি টাকা। নির্মাণকাজের দায়িত্ব পান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ভূঁইয়া বিল্ডার্স ও মৃধা ট্রেডার্স। কার্যাদেশ অনুযায়ী ২০১৮ সালে শুরু হওয়া কাজ নিদিষ্ট সময়ে কাজ শেষ না করে কয়েক দফা সময় বৃদ্ধি করে এক বছর আগে ভবন হস্তান্তর করে ঠিকাদার।
এদিকে ২০১৮ সাল থেকে পাশের একটি ভবনে মাসে ২০ হাজার টাকা করে ভাড়া নিয়ে চলছে অফিস। নতুন ভবনে ফার্নিচার না থাকায় সেখানে চালু করা যাচ্ছে না অফিসের কার্যক্রম। অথচ ভাড়া বাবদ গুনতে হয়েছে যে পরিমাণ অর্থ তা দিয়েই কেনা যেত অফিসের আসবাবপত্র। স্থায়ী ও অস্থায়ী সব মিলিয়ে অফিসের মোট কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে ৪৩ জন; যাদের সবাইকে বসতে হয় গাদাগাদি করে।
সরেজমিন দেখা গেছে, ভাড়া বাসায় মানুষের ভিড়, যেন তিল ধারনের ঠাঁই নেই। সাব-রেজিস্ট্রারের এজলাসের সামনে মানুষের ধাক্কাধাক্কি। এদের অধিকাংশই বয়স্ক মানুষ। জমি বিক্রি কিংবা মৃত্যুর আগে পরিবারের সদস্যদের মাঝে বণ্টন করার জন্য এ চেষ্টা।
সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দলিল করতে আসা বৃদ্ধ লোকমান মিয়া বলেন, আমার বয়স এখন ৭৫। কখন মারা যাই ঠিক নেই। তাই সন্তানদের মধ্যে জায়গা বণ্টন করে দিতে আসছি। কিন্তু এখানে এত ভিড়; শান্তিমতো কাজটি করব সে সুযোগ নেই।
এ ব্যাপারে দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ভানু চন্দ্র দেব বলেন, ভাড়া বাসায় অফিস করতে আমাদের অনেক সমস্যা হয়। অনেক সময় কারও টয়লেটের প্রয়োজন হলে বিপাকে পড়তে হয়। তা ছাড়া বয়স্ক, অসুস্থ ও নারীদের বসার জায়গা নেই। ফলে পোহাতে হয় অনেক দুর্ভোগ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা রেজিস্ট্রার সরকার লুতফুর কবীর বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ভাড়া বাসায় কার্যক্রম চলছে। নতুন ভবনে ফার্নিচার নেই। আমাদের সমস্যার বিষয়টি আমি ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।