গণপরিবহনে নারী যাত্রীদের হয়রানি বন্ধে রাজধানীর ১০০টি পাবলিক বাসে সিসি (ক্লোজ সার্কিট) ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী ৩০ জুনের মধ্যে এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন শুরু হবে।
সরকারের মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর আগামী এক বছরের জন্য এই পাইলট প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান দিপ্ত ফাউন্ডেশন এতে সহায়তা করবে।
বুধবার বিকালে ইস্কাটনের মহিলা ও শিশু বিষয়ক অধিদপ্তর মিলনায়তনে আয়োজিত এক সেমিনারে এমন তথ্য জানানো হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফরিদা পারভীন, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারি সচিব ও কর্মসূচি পরিচালক পাপিয়া ঘোষ, অতিরিক্ত সচিব এনডিসি মুহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান, যুগ্ম সচিব ফেরদৌস বেগম এবং দিপ্ত ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক জাকিয়া কে হাসান প্রমুখ।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, দেশে এই মুহূর্তে মোট জনগোষ্ঠির ৩৬ শতাংশ নারী কর্ম ক্ষেত্রে যাতায়াত করছে। তাদের মধ্যে ৮০ ভাগই গণপরিবহণ ব্যবহার করে। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির এক জরিপ প্রতিবেদন বলছে, শতকরা ৯৪ ভাগ নারী যাত্রী কোন না কোনভাবে গণপরিবহনে হয়রানীর শিকার হোন। সিসি ক্যামেরা বসলে এই হয়রানী কিছুটা কমে আসবে।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের যুগ্ম সচিব মোসা. ফেরদৌসী বেগম বলেন, গণপরিবহনে নারীদের বিভিন্নভাবে যৌন হয়রানী একটা স্বাভাবিক বিষয়ে পরিণত হয়েছে। কিন্তু এই হয়রানীর ব্যাপারে নারীদের দিকেই অভিযোগের আঙ্গুল তোলা হয়। এছাড়া পাবলিক বাসে মাত্র নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধীদের জন্য মাত্র ৯টা আসন বরাদ্দ থাকায় বাধ্য হয়ে অপরিচিতদের সঙ্গে আসন ভাগাগাগি করে বসতে হয়।
সেমিনারে মহিলা ও শিশু বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফরিদা পারভীন বলেন, নারী নির্যাতন প্রতিরোধে মাল্টি সেক্টরাল প্রোগ্রাম চালু আছে। গণপরিবহনে নারীদের নিরাপদ যাতায়াত ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নে সরকার বেশ তৎপর। প্রধানমন্ত্রীর স্লোগান অফিস ঘরে যাত্রা পথে, নারী থাকবে নিরাপদে। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রনালয় ও অধিদপ্তর নারীদের নিরাপত্তায় নানাভাবে কাজ করছে। প্রাথমিকভাবে দুই সিটি করপোরেশনের ১০০টি বাসে সিসি ক্যমেরা বসানো হচ্ছে। আগামীতে এই পরিধি আরও বড়ানো হবে।
দিপ্ত ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক জাকিয়া কে হাসান বলেন, নারী যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে এই প্রকল্প দুই বছর ধরে চলছে। যা চলতি বছরের ৩০ জুন শেষ হচ্ছে। সিসি ক্যামেরা বসানোর জন্য দুই সিটির একাধিক বাস চালক ও হেলপারদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। কেউ সমস্যায় পড়লে বিশেষ অ্যাপসের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সেন্ট্রাল মনটিরিং ও কনট্রোল রুমে জানাতে পারবে। প্রতি তিনমাস অন্তর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে কর্মকান্ডের প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।
সেমিনারে অংশ নিয়ে ঢাকার ট্রাফিক পুলিশের ডিআইজি সৈয়দ নূরুল ইসলাম বলেন, শিগগিরই ঢাকা সিটিতে রেশনালাইজ বাস চালু হচ্ছে। এসব বাসে সিসি ক্যামারে প্রতিস্থাপন করা হলে নারী যাত্রীদের হয়রনাী কমবে।