১৯ নভেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ০৮:৪২:৫৩ অপরাহ্ন
অন্ধের যষ্টি হবে স্মার্ট সাদাছড়ি
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৫-১০-২০২৩
অন্ধের যষ্টি হবে স্মার্ট সাদাছড়ি

দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের দিশারি হয়ে অচিরেই দেশের বাজারে প্রথমবারের মতো আসছে স্মার্ট সাদাছড়ি। এরই মধ্যে উৎপাদন প্রক্রিয়াসহ সব প্রস্তুতি শেষ। উদ্ভাবনকারীরা জানিয়েছেন, আগামী মাসে ২০ থেকে ২৬টি পরীক্ষামূলক স্মার্ট সাদাছড়ি তাদের হাতে আসবে। এরপর সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ডিসেম্বরেই সীমিত পরিসরে এই ছড়ি বাজারে পাওয়া যাবে। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের সামনে কোনো প্রতিবন্ধকতা থাকলে স্মার্ট সাদাছড়ি কাঁপতে থাকে বা সংকেত দেয়। এতে রয়েছে অটোমেটিক নাইট ভিশন ও সিকিউরিটি মুড। এ ছাড়া এই ছড়ি বাংলাসহ কয়েক ভাষায় কথা বলে বুঝিয়ে দেবে প্রতিবন্ধকতার উপস্থিতি ও মাত্রা।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং ইউএনডিপির সহায়তায় পরিচালিত এটুআই প্রকল্পের পক্ষ থেকে এই স্মার্ট সাদাছড়ি উদ্ভাবিত হয়েছে। বর্তমানে সাধারণ একটি ছড়ির দাম ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। তবে স্মার্ট ছড়ির একেকটির দাম পড়বে ৭ হাজার টাকা।


সরকারের সমাজসেবা অধিদপ্তরের হিসাব বলছে, দেশে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীর সংখ্যা চার লাখের বেশি। এসব মানুষকে স্বাধীন ও নিরাপদে পথ চলতে সহায়তা করছে সাদাছড়ি। এমন বাস্তবতায় আজ ১৫ অক্টোবর দেশে পালিত হবে বিশ্ব সাদাছড়ি নিরাপত্তা দিবস। দিনটি উপলক্ষে নানা কর্মসূচি পালন করবে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। কয়েক বছর ধরে জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও সংগঠনকে ভারত থেকে আনা ডিজিটাল সাদাছড়ি বিনামূল্যে দিচ্ছে। তবে দেশের রাস্তা দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীবান্ধব না হওয়ায় এ ছড়িতে খুব বেশি সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।


স্মার্ট সাদাছড়ির উদ্ভাবক আহসান হাবীব সমকালকে বলেন, ‘এটি আরও আগে বাজারে আসার কথা ছিল। বেশ কিছু জটিলতার কারণে আসতে একটু দেরি হচ্ছে। প্রথমে সীমিত পরিসরে ২০০ থেকে ৩০০টি স্মার্ট ছড়ি নিয়ে আসা হবে। পরে বিনিয়োগকারী পেলে বড় পরিসরে বাজারে আনার পরিকল্পনা রয়েছে। স্মার্ট সাদাছড়ি দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের পা থেকে মাথা বরাবর যে প্রতিবন্ধকতা থাকবে তা জানিয়ে দেবে। সামনে কোনো গর্ত থাকলে তার গভীরতা বেশি না কম, সেটাও জানা যাবে। হিউম্যান ডিটেক্টর বোতাম চালু করলে নিরাপত্তার বিষয়েও সংকেত পাওয়া যাবে। জায়গাটি অন্ধকার হলে ছড়িতে আলো জ্বলবে, যাতে অন্যরা ওই ব্যক্তিকে দেখতে পারেন। ছড়ি রেখে কোথাও গেলে এ সময়ে যদি অন্য কেউ এতে হাত দেয়, তাহলে সংকেতও দেবে। এমনকি দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তি যে ঘরে অবস্থান করছেন, সেখানে অন্য কেউ প্রবেশ করলেও ছড়ি থেকে সংকেত আসবে। এই স্মার্ট সাদাছড়ি ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বুঝতে হবে। তারা যখন এটা বুঝতে পারবেন তখনই এর ব্যবহার বাড়বে।’


স্মার্ট ছড়ি ভালো মানের হলেও এর দাম কমানো ও বিনামূল্যে বিতরণের পরামর্শ প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলমের। তিনি বলেন, দেশে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের আর্থিক অবস্থা ভালো না। স্মার্ট ছড়ি বিনামূল্যে বিতরণের ব্যবস্থা করলে তা অবশ্যই প্রশংসনীয় উদ্যোগ হবে।


শেয়ার করুন