তৃতীয় বারের মতো জাতীয়ভাবে নানা আয়োজনে একযোগে সারাদেশে এবং বিদেশি দূতাবাসে কাল বুধবার (১৮ অক্টোবর) পালিত হচ্ছে শেখ রাসেল দিবস। এই উপলক্ষে বুধবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ১১ জন শিশু-কিশোরকে পদক, স্মার্ট বাংলাদেশ অ্যাওয়ার্ডসহ একগুচ্ছ ডিজিটাল প্রকল্প উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ মঙ্গলবার আগারগাঁওয়ে আইসিটি টাওয়ারে বিসিসি অডিটোরিয়ামে এক সংবাদ সম্মেলনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এ তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কেউ যেন আর প্রতিষ্ঠিত করতে না পারে, সেজন্য শেখ রাসেলকে হত্যা করা হয়েছিল।
কিন্তু শেখ রাসেলকে হত্যা করেও রাসেলের আদর্শ ও স্মৃতি মুছে ফেলতে পারেনি। রাসেল সকলের স্মৃতিতে অমর হয়ে আছেন এবং সকলের স্মৃতিতে থাকবেন দুর্জয় হয়ে। শেখ রাসেলের নির্মল শৈশব, নির্ভীক, দুর্জয় এই প্রতিপাদ্যটির মাধ্যমে তাঁর ব্যক্তিত্ব আমরা তুলে ধরার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের শিশু ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য নিরাপদ করব।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দিবসটি উপলক্ষে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে ১৮ অক্টোবর সকালে স্ব স্ব মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর, সংস্থা, প্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গণে শেখ রাসেলের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হবে।
এছাড়াও দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে। সকাল ৮টায় আইসিটি অধিদপ্তর এবং শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদের যৌথ উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শেখ রাসেলের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হবে। সকাল সাড়ে ৮টায় আইসিটি অধিদপ্তর ও শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের যৌথ উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র প্রাঙ্গণে বর্ণাঢ্য র্যালি আয়োজন করা হয়েছে।
সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) শেখ রাসেল দিবসের উদ্বোধন করবেন এবং শেখ রাসেল পদক ও স্মার্ট বাংলাদেশ পুরস্কার প্রদান করবেন।
সংবাদ সম্মেলনে জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, দিবসটি উপলক্ষে শেখ রাসেল অ্যানিমেশন ল্যাব, শেখ রাসেল স্কুল অব ফিউচারের পাইথন প্রোগ্রামিং প্রশিক্ষণ, শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং ও ইনকিউবেশন সেন্টার, ১৩০টি উপজেলার ২৫ হাজার ১২৫ জন নারীর জন্য প্রশিক্ষণ কর্মসূচি এবং স্মার্ট ৩৩৩, স্মার্ট প্রেগনেন্সি মনিটরিং সিস্টেম, স্মার্টই-ট্রেড লাইসেন্স, শিক্ষার্থীদের সামষ্টিক মূল্যায়ন অ্যাপ ‘নৈপুণ্য’, সমন্বিত ই-টোলকালেকশন সেবা ‘একপাস’, কিশোর-কিশোরীদের সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে টোল ফ্রি হেল্প লাইন সেবা ১৩২১৯ এবং ইউনিভার্সিটি ইনোভেশন হাবের উদ্বোধন করবেন। এছাড়া ১০ হাজার শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব, রোবটিক্স কর্ণার, ৫৫৫টি জয় SET Center, DoICT#2041 SMART Tower এবং ইউনিভার্সিটি ইনোভেশন হাবের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।
অন্যদিকে, দেশের বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে শেখ রাসেলের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, র্যালি আয়োজন করা হয়েছে। শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদ চিত্রাংকন, দাবা, ফুটবল, সাংস্কৃতিক ও শুটিং আয়োজনের মাধ্যমে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে।
এছাড়াও জাতীয়ভাবে প্রদান করা হবে-শিক্ষা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, ক্রীড়া, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু-কিশোর, শিল্পকলা ও সংস্কৃতি, খুদে প্রোগ্রামার, খুদে উদ্ভাবক, খুদে লেখক, ডিজিটাল স্কুল, ডিজিটাল এক্সিলেন্স মোট ১০টি ক্ষেত্রে ১১জন শিশু-কিশোরকে শেখ রাসেল পদক প্রদান করা হবে।
পদক হিসেবে দেওয়া হবে এক ভরি ওজনের স্বর্ণ। অনুষ্ঠানে স্মার্ট বাংলাদেশ পুরস্কার ২০২৩ প্রদান করা হবে। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সাধারণ এবং কারিগরি ক্ষেত্রে জাতীয় পর্যায়ে ১২টি পুরস্কার এবং জেলা পর্যায়ে দেওয়া হবে আরো ১২টি পুরস্কার। শেখ রাসেল অনলাইন কুইজ প্রতিযোগিতা ২০২৩ এ অংশগ্রহণকারী ১০ জন বিজয়ীকে পুরস্কার হিসেবে কোর আই-৭, ১১ জেনেরেশনের ল্যাপটপ প্রদান করা হবে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব মো. সামসুল আরেফিনের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য দেন আইসিটি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোস্তাফা কামাল, শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার জাহাঙ্গীর হোসেন রনি। পরে প্রতিমন্ত্রী শেখ রাসেল দিবসের লোগো উন্মোচন করেন।