১৯ নভেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ১০:১৫:১৫ পূর্বাহ্ন
রাজশাহী-১ আসনে ফারুক, মাহি ও রাব্বানীর লড়াই
  • আপডেট করা হয়েছে : ৩০-১২-২০২৩
রাজশাহী-১ আসনে ফারুক, মাহি ও রাব্বানীর লড়াই

রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের হেভিওয়েট প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরীর সাথে এবার লড়বেন তিন নারীসহ ১১ প্রার্থী। এ আসনের টানা তিনবারের এমপি, সাবেক শিল্পপ্রতিমন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরী। তিনি এবারও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হয়ে নৌকা প্রতীক নিয়ে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণায় ভোটের মাঠ চুষে বেড়াচ্ছেন। তার বাড়ি তানোর উপজেলায়।


তবে, এবার ট্রাক প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে ফারুক চৌধুরীর শক্ত প্রতিদ্বন্ধি হয়েছেন বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও রাজশাহী বিভাগের আহবায়ক ঢাকাই সিনেমার চিত্রনায়িকা শারমিন আক্তার নিপা ওরফে মাহিয়া মাহি। তাঁর বাবার বাড়ি নাচোল উপজেলায়। তবে, তাঁর নানা-নানীর বাড়ি তানোর উপজেলার মুন্ডুমালা পৌরসভা পাঁচন্দর গ্রামে। এ সুবাদে তিনি এই আসনে এমপি ভোট করছেন।


অপরদিকে, তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও মুন্ডুমালা পৌরসভার সাবেক মেয়র গোলাম রাব্বানী। তিনিও স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। কাঁচি প্রতীক নিয়ে তিনি ভোটের মাঠে লড়ছেন।


ফারুক চৌধুরী বলছেন, মানুষ নৌকা প্রতীক দেখে এবারও তাকে ভোট দেবেন। এছাড়ও নৌকার ভোট ব্যাংক তো রয়েছেই। তিনি বলেন, মাঠের অবস্থা আগের চেয়ে অনেক ভালো। আমি মনে করি, এই সময়ের মধ্যে বিএনপি ও জামায়াতের সন্ত্রাসি কর্মকান্ড মানুষ উপলব্ধি করতে পেরেছে। আর গত ১৫ বছরে সরকারের যে উন্নতি এবং উন্নয়ন কর্মকান্ড, তা মানুষ নিজের চোখে দেখছে। ফলে মানুষ মনে করে, এই সরকারের পুনরাবৃত্তি বা ক্ষমতায় দরকার। তাই তিনি আবারও এ আসনে এমপি নির্বাচিত হবেন বলে আশা করছেন।


মাহিয়া মাহি বলছেন, তিনি ভোটের মাঠে নতুন মুখ হলেও নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় সারা জাগিয়েছেন। জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে তার ট্রাক প্রতীকে ভোট দেবেন। বিশেষ করে গ্রামের মেয়েরা তাদের নির্বাচনের আহবান গ্রহণ করছেন। জনগণের স্বতঃস্ফূর্ততা দেখে বোঝা যায় যে, তাদের সমর্থনটা কোন দিকে আছে। পরিবেশ স্বাভাবিক। এ আসন থেকে তিনিই এমপি নির্বাচিত হবেন বলে আশাবাদী।


গোলাম রাব্বানী বলছেন, এই আসনে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ে প্রার্থীতা বাতিল হয়ে গিয়েছিল তার। পরে উচ্চ আদালতের রায়ে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন। তাই তিনি কাঁচি প্রতীক নিয়ে ভোট করছেন। তার বাড়ি তানোর উপজেলায়। তিনি মনে করেন শুধু আ.লীগের বিদ্রোহী নয়, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তাকে ভোট দেবেন বিএনপি-জামায়াতের বড় একটি অংশ।


এদিকে, তানোর উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি শামসুদ্দিন মন্ডল লাঙল প্রতীক নিয়ে মাঠে ভোট প্রার্থনা করে বেড়াচ্ছেন। তারও বাড়ি তানোর উপজেলায়। শেষ মুহূর্তে ভোটারদের মন জয়ে দিনরাত ছুটছেন পাড়াগাঁয়ে। শামসুদ্দিন বলেন, জনগণ আমাকে চায়, আর আমিও তাদের পাশে থেকে এমপি হতে চাই।


বিএনএম’র প্রার্থী শামসুজ্জোহা বাবু তিনি গরীব ও মেহনতি মানুষের নেতা। তাই তিনি এ আসনে নোঙ্গর প্রতীক নিয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে ভোট প্রার্থনা করছেন। তার বাড়ি গোদাগাড়ী উপজেলায়। শুষ্ঠু নির্বাচনে তারই জয় হবে বলে দাবি করেন তিনি।


অপরদিকে, আইনি লড়াই শেষে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সহধর্মীনি ও আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক উপকমিটির সদস্য শাহনেওয়াজ আয়েশা আখতার জাহান ডালিয়া। তার প্রতীক বেলুন। বাড়ি চারঘাট উপজেলায়। নানা-নানীর বাড়ি গোদাগাড়ী উপজেলায় হবার সুবাদে তিনি এ আসন থেকে এমপি ভোটে নির্বাচন করছেন। তিনিও জয়লাভ করবেন বলে আশাবাদী।


এ আসনের আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা আখতারুজ্জামান আকতার। তার প্রতীক ঈগল। তিনিও ফারুক চৌধুরীর বিরোধী হিসেবে পরিচিত। গোদাগাড়ী উপজেলার দেওপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি গোদাগাড়ী উপজেলার বাসিন্দা। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটের মাঠে ঘুরছেন। শুষ্ঠু নির্বাচনে তিনিই বিজয়ী হবেন বলে আশা করছেন।


এছাড়াও বাংলদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের মনোনীত প্রার্থী বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর বশির আহম্মেদ ছড়ি প্রতীক আর এনপিপির প্রার্থী নুরুন্নেসা। তাঁর প্রতীক আম। এই দুই প্রার্থীর বাড়ি গোদাগাড়ীতে। তারাও এমপি নির্বাচিত হবেন বলে আশাবাদী।


এই ভিআইপি আসনে এবার মোট ১১ জন প্রার্থী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দীতা করছেন। এসব ১১ জন প্রার্থীর মধ্যে রয়েছেন বিএনএফ দলের প্রার্থী আল-সাআদ টেলিভিশন ও তৃণমূল বিএনপি থেকে জামাল খান দুদু। তার প্রতীক সোনালী আঁশ। তারাও এমপি নির্বাচিত হবেন বলে আশা করছেন।


শেয়ার করুন