ঈদের আগের মাস সদ্যবিদায়ী ‘মে’ মাসে ২২৫ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে দেশে। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১১৭ টাকা ধরে) যার পরিমাণ ২৬ হাজার ৩২৫ কোটি টাকা। এটি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩২.৩৫ শতাংশ বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্যে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এর আগে এপ্রিলে রেমিট্যান্স এসেছিল ২০৪ কোটি ডলার। সে হিসাবে এক মাসের ব্যবধানে রেমিট্যান্স বেড়েছে ১০ দশমিক ২৯ শতাংশ। আর গত বছরের একই সময়ে (মে ২০২৩) রেমিট্যান্স এসেছিল ১৬৯ কোটি ডলার। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে রেমিট্যান্স বেড়েছে ৩৩ দশমিক ১৩ শতাংশ।
এক লাফে ডলারের দাম সাত টাকা বাড়িয়ে ১১৭ টাকা করা হয়েছে। রেমিট্যান্সের ডলার সর্বোচ্চ ১১৮ থেকে ১১৯ টাকা করে কিনছে অনেক ব্যাংক। এর সঙ্গে সরকারি প্রণোদনা রয়েছে আরও আড়াই শতাংশ। সবমিলিয়ে বিভিন্ন দেশে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা প্রতি ডলারে ১২০ টাকার বেশি পাচ্ছেন। অন্যদিকে চলতি জুন মাসেই রয়েছে মুসলমানদের দ্বিতীয় প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ। ফলে রেমিট্যান্স আসার প্রবাহটা অনেকাংশই বাড়বে এমন আশা খাত সংশ্লিষ্টদের।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগ বলছে, ডলারের মূল্যবৃদ্ধি প্রবাসীদের উৎসাহিত করছে। সেই সঙ্গে কোরবানির ঈদ থাকায় মে মাসে রেমিট্যান্স বেড়েছে, যেটা জুনেও অব্যাহত থাকবে।
সূত্রে জানা গেছে, ডলারের বিনিময়দর একদিনে সাত টাকা বাড়িয়ে ১১৭ টাকা করার পর থেকেই রেমিট্যান্সে সাড়া মিলছে। রেমিট্যান্সের ডলার সর্বোচ্চ ১১৮ থেকে ১১৯ টাকা করে কিনছে ব্যাংকগুলো। এর সঙ্গে আড়াই শতাংশ সরকারি প্রণোদনা যুক্ত হয়ে ডলারপ্রতি কমপক্ষে ১২০ টাকার বেশি করে পাচ্ছেন প্রবাসীরা।
গত ৮ মে ডলারের বিনিময় মূল্য নির্ধারণে ক্রলিং পেগ পদ্ধতি চালু করা হয়। এ পদ্ধতি চালু করেই ডলারের বিপরীতে টাকার বড় ধরনের অবমূল্যায়ন হয়। ক্রলিং পেগ পদ্ধতির আওতায় ডলারের মধ্যবর্তী একটি দাম নির্ধারণ করে ব্যাংকগুলোকে। ওই দরের আশপাশে লেনদেন করতে পারবে ব্যাংকগুলো। এ পদ্ধতিতে ডলারের মধ্যবর্তী দর নির্ধারণ করা হয়েছে ১১৭ টাকা। এর আগে ডলারের দাম বেঁধে দেওয়া ছিল ১১০ টাকা। ক্রলিং পেগ পদ্ধতি চালুর পর এক লাফে সাত টাকা বাড়ানো হয়। এতে বৈধ পথে ডলারের ভালো দাম পাওয়ায় প্রবাসীরা ব্যাংকের মাধ্যমে প্রবাসী আয় পাঠাতে বেশি বেশি উৎসাহিত হন।
চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই থেকে মে পর্যন্ত দেশে মোট প্রবাসী আয় এসেছে প্রায় দুই হাজার ১৩৭ কোটি ডলার। ২০২২-২৩ অর্থবছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল এক হাজার ৯৪২ কোটি ডলার। সে হিসাবে আগের অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরের উল্লিখিত সময়ে প্রবাসী আয় বেড়েছে ১৯৫ কোটি ডলার, এক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি ১০ শতাংশ।