০৬ জুলাই ২০২৫, রবিবার, ০৭:৫২:০৬ অপরাহ্ন
নবী নন্দিনী ফাতেমা (রা.)-এর সন্তানগণ
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৬-০৭-২০২৫
নবী নন্দিনী ফাতেমা (রা.)-এর সন্তানগণ

মহানবী (সা.)-এর সর্বকনিষ্ঠ কন্যা ফাতেমাতুজ জাহরা (রা.)। রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁকে অত্যন্ত স্নেহ করতেন। অবয়ব ও আচরণে তিনি মহানবী (সা.)-এর সদৃশ ছিলেন। সাইয়েদা ফাতেমা (রা.) রাসূল (সা.) এর নবুয়ত লাভের পাঁচ বছর আগে মক্কায় জন্মগ্রহণ করেন।



দ্বিতীয় হিজরিতে বদর যুদ্ধের পর আলী ইবনে আবি তালিব (রা.)-এর সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। আলী ও ফাতেমা (রা.)-এর ঔরসে মোট পাঁচটি সন্তান হয়। তাঁদের পরিচয় তুলে ধরা হলো—

১. হাসান বিন আলী (রা.) : তিনি তৃতীয় হিজরির রমজান মাসে জন্মগ্রহণ করেন। নবীজি (সা.) নিজে তাঁর নাম রাখেন এবং মেষ দ্বারা আকিকা করেন।


নবী কারিম (সা.)-এর সঙ্গে তাঁর অবয়বগত মিল ছিল। হাদিসের ভাষ্য মতে, তিনি হবেন জান্নাতি যুবকদের নেতা। রাসুলুল্লাহ (সা.) দোয়া করেছিলেন, ‘হে আল্লাহ! আমি তাঁকে ভালোবাসি। সুতরাং তুমিও তাঁকে ভালোবাসো।


যে তাঁকে ভালোবাসবে তুমিও তাঁকে ভালোবাসবে।’ আল্লাহ তাআলা হাসান (রা.)-এর পরিবারে বরকত দান করেছিলেন। তিনি মোট চারটি বিয়ে করেছিলেন এবং তাঁর সন্তানের সংখ্যা ছিল ২৩ জন। তাদের মধ্যে ১৫ জন ছেলে এবং আট জন মেয়ে। ৫ রবিউল আউয়াল ৪৯ হিজরিতে তিনি ইন্তেকাল করেন।

তাঁর বয়স হয়েছিল মাত্র ৪৬ বছর। তাঁকে জান্নাতুল বাকিতে তাঁর মায়ের পাশে দাফন করা হয়।

২. হুসাইন বিন আলী (রা.) : তিনি চতুর্থ হিজরির শাবান মাসে জন্মগ্রহণ করেন। হাদিসে তাঁকেও জান্নাতি যুবকদের নেতা বলা হয়েছে। তাঁর সঙ্গেও মহানবী (সা.)-এর অবয়বগত মিল ছিল। হুসাইন (রা.) মোট পাঁচটি বিয়ে করেন এবং তাদের গর্ভে তাঁর ছয় সন্তানের জন্ম হয়। যাদের মধ্যে চারজন ছেলে এবং দুজন মেয়ে। তিনি ১০ মহররম ৬১ হিজরি কারবালার ময়দানে শহীদ হন। তাঁর শাহাদাত বরণকে মুসলিম ইতিহাসের অন্যতম বেদনাদায়ক ঘটনা মনে করা হয়।


৩. মুহসিন বিন আলী : তিনি জন্মের পর খুব অল্প বয়সে ইন্তেকাল করেন।


৪. জয়নব বিনতে আলী (রা.) : তিনি ষষ্ঠ হিজরিতে জন্মগ্রহণ করেন। ভাই-বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়। সমকালীন নারীদের ভেতর তাঁকে অত্যন্ত বিচক্ষণ ও বুদ্ধিমান মনে করা হতো। আবদুল্লাহ বিন জাফর (রা.)-এর সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়েছিল। তাদের ঔরসে পাঁচ সন্তানের জন্ম হয়। যাদের ভেতর চারজন ছেলে এবং একজন মেয়ে। ধারণা করা হয়, ভাইয়ের সঙ্গে তিনিও কারবালার ময়দানে উপস্থিত ছিলেন। ১৫ রজব ৬২ হিজরি তিনি ইন্তেকাল করেন। তাঁর ইন্তেকালের স্থান নিয়ে ঐতিহাসিকদের ভেতর মতবিরোধ রয়েছে।


৫. উম্মে কুলসুম বিনতে আলী (রা.) : তিনি নবীজি (সা.)-এর ইন্তেকালের আগেই জন্মগ্রহণ করেছেন। সাক্ষাৎ পেলেও তিনি রাসুলুল্লাহ (সা.) থেকে কোনো হাদিস বর্ণনা করেননি। খলিফা ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.)-এর সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। জায়েদ ও রুকাইয়া নামে তাদের দুটি সন্তানও হয়। ওমর (রা.)-এর ইন্তেকালের পর জাফর ইবনে আবি তালিব (রা.)-এর দুই ছেলের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। তাঁর মৃত্যুর সন ও স্থান নিয়ে ঐতিহাসিকদের প্রচণ্ড মতবিরোধ রয়েছে।


সূত্র : সিয়ারু আলামিন নুবালা : ২/১১৯;


শেয়ার করুন