০৬ অগাস্ট ২০২৫, বুধবার, ০২:০৪:৫১ অপরাহ্ন
সিডনি সুইনি-বিতর্ক নিয়ে যা বলল আমেরিকান ঈগল
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৬-০৮-২০২৫
সিডনি সুইনি-বিতর্ক নিয়ে যা বলল আমেরিকান ঈগল

শেষ পর্যন্ত মুখ খুলেছে আমেরিকান ফ্যাশন ব্র্যান্ড আমেরিকান ঈগল। শুধু মুখই খোলেনি, ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর ইউফোরিয়া খ্যাত অভিনেত্রী সিডনি সুইনিকে ঘিরে তৈরি হওয়া বিতর্কে তার পক্ষেই অবস্থান নিয়েছে। 


ব্র্যান্ডটির সাম্প্রতিক বিজ্ঞাপনী প্রচারণা ঘিরে বর্ণবাদ-সম্পর্কিত ইঙ্গিতপূর্ণ বার্তা ছড়ানোর অভিযোগ ওঠে। যা সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়।


এই বিতর্কিত প্রচারণার শিরোনাম ছিল ‘Sydney Sweeney Has Great Jeans’, যেখানে ২৭ বছর বয়সি সুইনিকে আমেরিকান ঈগলের শরৎকালীন সংগ্রহের পোশাকে মডেল হিসেবে দেখা যায়।


তবে, অনেক সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারী এই শ্লোগানটির ‘great jeans’ শব্দ যুগলকে ‘great genes’ (সুৎকৃষ্ট বংশগত বৈশিষ্ট্য)-এর সঙ্গে মিলিয়ে বর্ণবাদী বা ইউজেনিকস-ভিত্তিক (জাতিগত শুদ্ধতা) ইঙ্গিত হিসেবে ব্যাখ্যা করেন। যা এক ধরনের শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্বের ধারণাকে প্রশ্রয় দিতে পারে বলে দাবি করা হয়।


সেলন (Salon) নামে যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রকাশনা তাদের এক প্রতিবেদনে দাবি করেছে, এ ধরনের ভাষা অতীতে ‘শ্বেতাঙ্গতা, রোগা শরীর এবং চেহারাগত আকর্ষণীয়তা’ উদযাপনের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হতো এবং আমেরিকান ঈগলের প্রচারণাকে ‘একটি সংবেদনশীলতা-বিবর্জিত বিপণন কৌশল’ হিসেবে চিহ্নিত করে। 


বিতর্ক চরমে ওঠার পর গত ১ জুলাই আমেরিকান ঈগল তাদের অফিসিয়াল ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে প্রচারণার উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করে।


ব্র্যান্ডটি জানায়, ‘Sydney Sweeney Has Great Jeans’ – এ কথাটি সবসময়ই জিন্সকে ঘিরেই ছিল।এটা ওর জিন্স, ওরই গল্প’।


‘আমরা সবসময় উদযাপন করব কীভাবে সবাই আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে তাদের মতো করে AE জিন্স পরিধান করেন। ভালো জিন্স সবার জন্যই ভালো।’


এদিকে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠা সেই ভিডিওতে দেখা যায়, সুইনি একটি বিছানায় শুয়ে জিন্স পরছেন। ভিডিওতে তার কণ্ঠে শোনা যায়- 


‘Genes পিতামাতার কাছ থেকে সন্তানের মধ্যে যায় এবং তা চুলের রঙ, ব্যক্তিত্ব বা চোখের রঙের মতো বৈশিষ্ট্য নির্ধারণে ভূমিকা রাখে। আর আমার jeans (জিন্স)– নীল।’


এরপর ভিডিওতে এক বর্ণনাকারী বলেন- ‘Sydney Sweeney has great jeans.’


এ বিষয়ে ব্র্যান্ডের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই বিজ্ঞাপনটি ছিল ‘একটি মজার শব্দ খেলা বা পানের (pun)-এর’ অংশ। তবে অনলাইন প্রতিক্রিয়া ছিল অনেক বেশি কঠোর। 




এক ভাইরাল পোস্টে অভিযোগ করা হয়, ‘সিডনি সুইনি ও আমেরিকান ঈগল যেন ইউজেনিকস ও আর্য জাতি প্রচারের নাৎসি প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে—এটা ২০২৫ সালের আমার কল্পনায়ও ছিল না।’


প্রসঙ্গত, ইউজেনিকস (eugenics) একটি বিতর্কিত মতবাদ, যেখানে মানুষকে ‘উন্নত’ করতে বংশগত নির্বাচনের মাধ্যমে বাছাই করার কথা বলা হয়। এই মতবাদটি নাৎসি শাসনের সময় সাদা জাতি শ্রেষ্ঠত্বের নীতিকে বৈধতা দিতে ব্যবহৃত হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথ (এনআইএইচ) ইউজেনিকসের সংজ্ঞায় বলেছে, ‘মানবজাতিকে ‘উন্নত’ করতে বংশগত নির্বাচনের ব্যবহার।’


যাইহোক না কেন, সিডনি সুইনি এখনো এ বিতর্ক নিয়ে কোনো প্রকাশ্য প্রতিক্রিয়া দেননি। তবে আমেরিকান ঈগলের বিবৃতি ইঙ্গিত দেয় যে, ব্র্যান্ডটি তার পাশে রয়েছে এবং ভবিষ্যতেও তাদের প্রচারণায় বহুত্ববাদ ও ব্যক্তিগত প্রকাশের স্বাধীনতা তুলে ধরতে চায়।সূত্র: সিএনএন


শেয়ার করুন