ফ্রান্সে পুলিশের তরুণ হত্যার ঘটনায় শুরু হওয়া বিক্ষোভ পঞ্চম দিনে গড়িয়েছে। মঙ্গলবার দেশটির রাজধানী প্যারিসের উপকণ্ঠের শহর নঁ তে পুলিশের গুলিতে নাহেল মারজোউক (১৭) নামের এক কিশোর নিহত হন। শনিবার প্যারিসের কাছে নিজ শহর নঁ তে দাফন করা হয় নাহেলকে। নাহেল হত্যার পরপরই বিক্ষোভে নেমেছে ফ্রান্সের তরুণ-তরুণীরা। দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে প্রকট আকার ধারণ করছে বিক্ষোভ। বিক্ষোভকারীদের এক রাতেই ৫৭৭ বাড়িতে আগুন দেওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
রোববার ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে। বিক্ষোভে সংঘর্ষ চলাকালীন প্রায় ৪৫ জন পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন বলেও জানানো হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও জানায়, ৭৪টি ভবন ও রাস্তাসহ অন্যান্য জনসমাগমস্থলের ৮৭১টি জায়গায় আগুন দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। এছাড়া ২০টিরও বেশি পুলিশ স্টেশনে তারা হামলা চালান।
শহরে শহরে চলছে পুলিশ-বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ। শনিবার রাত থেকে রাস্তায় জড়ো হওয়া শুরু করেন বিক্ষোভকারীরা। রাতভর চালায় ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ। এ সময় পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ শুরু হয়। এদিন সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ সংঘটিত হয়েছে দক্ষিণের শহর মার্সেইতে। বিক্ষোভকারীদের থামাতে পুলিশ সেখানে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। মার্সেই থেকে গ্রেফতার হয় ৫৬ জন। তবে রাজধানী প্যারিসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করায় পঞ্চম রাতে বিক্ষোভের মাত্রা কিছুটা কম ছিল।
বিবিসি জানিয়েছে, মার্সেইতে শনিবার সন্ধ্যা থেকেই পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ শুরু হয়। বিক্ষোভকারীদের বড় একটি অংশ শহরের সবচেয়ে বড় এভিনিউ লা ক্যানবেরেতে জড়ো হয়। কয়েক ঘণ্টা চলে এই সংঘর্ষ। প্যারিসের বিক্ষোভকারীদের আইকনিক চ্যাম্পস-এলিতে জড়ো হওয়ার আহ্বান জানানো হয়। তবে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন থাকায় তারা সেখানে আর জড়ো হতে পারেননি। সাবধানতা অবলম্বনে স্থানীয় সময় রাত ৯টা থেকেই রাজধানীতে সব ধরনের বাস ও ট্রাম চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।
উত্তর দিকের শহর লিল-এ পুলিশ সদস্যরা রাস্তায় অবস্থান নেন। শহরটির কয়েকটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। গ্লোবাল টাইমস জানিয়েছে, ৩০ জুন সন্ধ্যা থেকে ১ জুলাই সকাল পর্যন্ত ২৫০০-এর বেশি অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে ফ্রান্সে।
এর মধ্যে ১৩৫০টি গাড়ি এবং ২৩৪টি ভবনে আগুন দেওয়া হয়েছে। বিক্ষোভ ও সংঘর্ষের ঘটনায় এ পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছেন ২৮০০ জন।