২৮ এপ্রিল ২০২৪, রবিবার, ০৩:১৮:০৬ পূর্বাহ্ন
রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করল তালেবান
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৮-০৮-২০২৩
রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করল তালেবান

আফগানিস্তানে তালেবানের ক্ষমতায় আসার দুই বছর পূর্তি হয়েছে দুই দিন আগে। এ দুই বছরে নানা নিষেধাজ্ঞা, বিশেষ করে কন্যাশিশু ও নারীর ওপর আরোপ করে পশ্চিমা বিশ্বের কড়া সমালোচনায় রয়েছে দেশটি। এরই মধ্যে গত বুধবার দেশটিতে নিষিদ্ধ করা হলো সব রাজনৈতিক দল। এর অর্থ হলো, দেশটিতে এখন থেকে রাজনৈতিক দলগুলো কোনো কর্মকাণ্ড করতে পারবে না। 


তালেবানের দাবি, রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ড শরিয়াহ বা ইসলামি আইনের বিরোধী। খবর ডনের। 


অন্তর্বর্তীকালীন বিচারমন্ত্রী শেখ মৌলভি আবদুল হাকিম শারাই সংবাদ সম্মেলনে বলেন, দেশে রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মকাণ্ড পুরোপুরি বন্ধ করা হয়েছে। কারণ হলো, শরিয়তে এগুলোর কোনো অবস্থান নেই, কোনো স্থান নেই। এই দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় স্বার্থ জড়িত নয়। এমনকি জাতি এগুলো পছন্দ পর্যন্ত করে না। 


এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে এটি অন্তত স্পষ্ট, আফগানিস্তানে ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে চাইছে তালেবান। আরও বিস্তারিতভাবে বললে, এ মুহূর্তে তারা দেশটিতে রাজনৈতিক বহুত্ববাদ চাইছে না। তবে, এটি এখনো পরিষ্কার নয়, নিষেধাজ্ঞাটি কখন থেকে কার্যকর করা হয়েছে। 

ভয়েস অব আমেরিকার খবরে বলা হয়, ক্ষমতায় আসার দুই বছর পূর্তির এক দিন পরই আফগানিস্তানের নেতারা কার্যত এ ঘোষণা দিয়েছেন। 


উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১৫ আগস্ট সবশেষ যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী পুরোপুরি আফগানিস্তান ত্যাগ করে। একই দিনে দেশটির তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। সেদিনই কাবুলসহ সারা দেশে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে তালেবান। ইসলামি আইন কায়েমের ঘোষণা দিয়ে প্রতিষ্ঠা করে ইসলামি আমিরাত। 


আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতা দখলের আগে দেশটির বিচার মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধিত ছিল ছোট-বড় মিলিয়ে ৭০টির বেশি রাজনৈতিক দল। তবে এখন সেগুলোর উপস্থিতি দেখাই যায় না। 


এমনিতেও আফগানিস্তানে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড করতে দিচ্ছিল না তালেবান সরকার। এখন তা করা হলো আনুষ্ঠানিকভাবে। 

বলা হচ্ছে, অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠনে আন্তর্জাতিক বিশ্বের চাপে রয়েছে আফগানিস্তান। এমন এক প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের এই ঘোষণা এল। তালেবানের যুক্তি হলো, তাদের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে নৃতাত্ত্বিক সব জাতিগোষ্ঠী ও উপজাতির প্রতিনিধি রয়েছেন। 


তালেবান সবচেয়ে বেশি সমালোচিত হয়েছে নারীদের ওপর গ্রহণ করা বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে। দেশটিতে নারী শিক্ষা কার্যত বন্ধ করা হয়েছে। বিভিন্ন সংস্থা ও পশ্চিমা বিশ্বের দাবি, নারীদের বিভিন্ন মৌলিক অধিকার হরণ করেছে তালেবান। 


তালেবান শাসনের আওতায় আসার পর আফগান গণমাধ্যমের অবস্থা খারাপ হয়েছে। বিপুলসংখ্যক নিউজ চ্যানেল ও সংবাদমাধ্যম বন্ধ করেছে তালেবান সরকার। দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন শত শত সাংবাদিক।


শেয়ার করুন