চীনের কর্মকর্তাদের ওপর আরও একদফা ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরা তিব্বতে ১০ লাখেরও বেশি তিব্বতি শিশুকে জোর করে চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত বোর্ডিং স্কুলে আত্তীকরণের কার্যক্রমে জড়িত ছিলেন। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের বরাত দিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এক বিবৃতিতে এই নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তবে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী কোন কোন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে তা জানাননি। তবে বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, বেইজিংয়ের উচিত চীনের দূরবর্তী পশ্চিমাঞ্চলে এমন এ ধরনের ‘বলপ্রয়োগকারী’ বিধিমালা বাতিল করা।
বিবৃতিতে ব্লিঙ্কেন বলেছেন, ‘এ ধরনের বলপ্রয়োগকারী নীতিমালা মূলত তরুণ তিব্বতিদের মধ্য থেকে নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতি, ধর্ম ও ঐতিহ্য বিলুপ্ত করার লক্ষ্যে বানানো হয়েছে।’ বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চীনা কর্তৃপক্ষকে তিব্বতীয় শিশুদের সরকার পরিচালিত বোর্ডিং স্কুলে জবরদস্তিমূলক আত্তীকরণ বন্ধ করতে এবং তিব্বত ও চীনের অন্যান্য অংশজুড়ে দমনমূলক আত্তীকরণ নীতি বন্ধ করার আহ্বান জানাই।’
এর আগে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে জাতিসংঘের একদল বিশেষজ্ঞ উদ্বেগ প্রকাশ করেন যে বোর্ডিং স্কুলব্যবস্থা তিব্বতীয়দের সংখ্যাগরিষ্ঠ হান সংস্কৃতিতে আত্তীকরণের উদ্দেশ্যে একটি বাধ্যতামূলক বড় আকারের প্রকল্প হিসেবে কাজ করছে। তাঁরা আরও জানিয়েছিলেন, গ্রামীণ স্কুলগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই ব্যবস্থা প্রসারিত হচ্ছে এবং প্রায় ১০ লাখ শিশুকে এখন তাদের পরিবার থেকে আলাদা করে এ ধরনের প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করানোর লক্ষ্যে। এসব স্কুলে মান্দারিন চীনা ভাষায় পড়ালেখা করা বাধ্যতামূলক।
এই ভিসা নিষেধাজ্ঞা এমন একসময়ে এল, যখন যুক্তরাষ্ট্র চীনের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা করছে। এ লক্ষ্যে কিছুদিন আগেই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেন বেইজিং সফর করে গিয়েছেন। এ ছাড়া চীন এই সময়ে কোভিড-১৯-পরবর্তী অর্থনৈতিক ধাক্কা, উইঘুর মুসলিমসহ অভ্যন্তরীণ নানা সংকট কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে।
এর আগেও যুক্তরাষ্ট্র চীনের ওপর নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে; বিশেষ করে চীনের সেমিকন্ডাক্টর শিল্পের ওপর বেশ কয়েক দফায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ওয়াশিংটন। এর বাইরেও চীনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের নজিরও রয়েছে। যেমন স্টেট ডিপার্টমেন্ট এর আগে চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লি শ্যাংফুর ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে।