২১ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৯:৩৪:৩২ অপরাহ্ন
ব্যক্তিমালিকানাধীন ভবনে সরু কোটি টাকার সেতুর সংযোগ সড়ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৯-০৯-২০২৩
ব্যক্তিমালিকানাধীন ভবনে সরু কোটি টাকার সেতুর সংযোগ সড়ক

শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার কীর্তিনাশা নদীর ওপর ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৯৮ মিটার দীর্ঘ একটি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণ করতে গিয়ে জমির মালিকানা নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে। নকশা অনুযায়ী যে অংশে সড়ক হওয়ার কথা, সেখানে গড়ে উঠেছে ব্যক্তিমালিকানাধীন একটি বহুতল ভবন। ওই জমির মালিকানার বিষয়ে মীমাংসা হওয়ার আগেই ভবনের জন্য জায়গা ছেড়ে দিয়ে সেতুর চেয়ে সরু সংযোগ সড়ক নির্মাণ শুরু করেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি)।


নড়িয়ার নশাসন ইউনিয়নের মাঝিরহাট এলাকায় সেতুটি নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করছে সদর উপজেলা এলজিইডি। শরীয়তপুর-ঢাকা মহাসড়ক থেকে প্রায় ৫০ মিটার দূরে সেতুটি। সদর এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, তিন জেলা প্রকল্পের আওতায় ২০১৭ সালে সেতু নির্মাণপ্রক্রিয়া শুরু হয়। তখনকার নকশা অনুযায়ী পূর্ব পাশের সংযোগ সড়কের অংশে কোনো ভবন ছিল না। ২০২১ সালে মূল নির্মাণকাজ শুরু হয়। ৯৮ মিটার দীর্ঘ ও ৭ দশমিক ৩২ মিটার প্রস্থ সেতুটি নির্মাণে মোট বরাদ্দ ১০ কোটি ৩ লাখ ৪৮ হাজার ৯২৩ টাকা।


এরই মধ্যে মূল সেতু ও পশ্চিম পাশের সংযোগ সড়ক নির্মাণ শেষ হয়েছে। বিপত্তি দেখা দিয়েছে পূর্ব পাশের সংযোগ সড়ক নির্মাণ নিয়ে। 

পূর্ব পাশে সেতু বরাবর অংশের ভবনটির মালিক স্থানীয় বাসিন্দা গিয়াসউদ্দিন। তাঁর দাবি, তিনি কেনা জমিতে ভবন করেছেন। সেতু নির্মাণের ক্ষেত্রে জায়গা নির্বাচনে এলজিইডি অনিয়ম করেছে। তিনি সরকারি জমিতে ভবন নির্মাণ করেননি।


স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গিয়াসউদ্দিন এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি। তাঁর দুই ছেলে পুলিশে চাকরি করেন। তবে তাঁদের পদবি স্থানীয় বাসিন্দারা নিশ্চিত করতে পারেননি। গিয়াসউদ্দিনও এ নিয়ে তথ্য দেননি। সেতু নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরুর পরপরই ভবন নির্মাণ শুরু হয়। কিন্তু তখন ভূমি নিয়ে জটিলতার মীমাংসা করা হয়নি। এটি না করেই সেতুর কাজ চালিয়ে যাওয়া নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের কেউ কেউ।


এ বিষয়ে এলজিইডির সদর উপজেলার প্রকৌশলী আব্দুস সাত্তার বলেন, তাঁর আগের কর্মকর্তারা ম্যাপ অনুযায়ী সেতুর নকশা করেছেন। সে নকশা অনুযায়ীই সেতু নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। পূর্ব পাশে ভবন থাকায় সেটি পাশ কাটিয়ে যতটুকু জায়গা আছে, তাতে সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে।


ভূমি জটিলতার মীমাংসার আগেই সড়ক নির্মাণ শুরুর বিষয়ে আব্দুস সাত্তার বলেন, ‘আমাদের করার কিছু নাই।’ ভূমির মালিকানার বিষয়ে নড়িয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. পারভেজ বলেন, বিষয়টি জানার পর যাচাই-বাছাই শুরু করেছেন। সরকারি জমি দখল করে ভবন নির্মাণ করা হয়েছে কি না, তা দেখা হচ্ছে। এরই মধ্যে সংশ্লিষ্টদের চিঠি দেওয়া হয়েছে। ২০ সেপ্টেম্বর ভূমি জরিপ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


সেতুটি নির্মাণের বিষয়ে তাঁর বক্তব্য জানতে গতকাল সোমবার রাতে একাধিকবার জেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী শাজাহান ফরাজীকে কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। 


শেয়ার করুন