১৮ মে ২০২৫, রবিবার, ১১:৪৮:৪৪ অপরাহ্ন
রাজশাহীতে ইউপি চেয়ারম্যানের মামলার তথ্য গোপনের অভিযোগ ইউএনওর বিরুদ্ধে
  • আপডেট করা হয়েছে : ২১-১১-২০২৩
রাজশাহীতে ইউপি চেয়ারম্যানের মামলার তথ্য গোপনের অভিযোগ ইউএনওর বিরুদ্ধে

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার পাকড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার আদালত কর্তৃক গৃহীত অভিযোগপত্রের তথ্য গোপন করার অভিযোগ উঠেছে নির্বাহী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে ওই অভিযোগপত্রের সাটিফাইড কপি ও মতামত চাওয়া হয়। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতিকুল ইসলাম সেটি গোপন করে রাখেন।


খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ০৮ অক্টোবর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারি সচিব জেসমিন প্রধানের স্বাক্ষরিত আদেশের কপি রাজশাহী জেলা প্রসাশকের কার্যালয়ে পাঠানো হয়। সেই আদেশের কপিতে উল্লেখ করা হয়েছে, গোদাগাড়ী উপজেলা পাকড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত জিআর মামলা নং ৯৩/২২ এর অভিযোগপত্র বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক গৃহীত হয়েছে কিনা, হয়ে থাকলে আদেশের সাটিফাইড কপি মতামতসহ প্রেরণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।


স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের এই আদেশের কপিটি জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে গত ২৫ অক্টোবর গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে পাঠানো হয়। এ নিয়ে নির্বাহী কর্মকর্তার মতামতসহ ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দায়ের করা ফৌজদারি মামলার গৃহিত অভিযোগপত্রের সার্টিপাইড কপি চাওয়া হয়। কিন্তু এক মাসেও সে প্রতিবেদন পাঠানো হয়নি।


এ বিষয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতিকুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়টি গোপনীয়। আমরা গোপনে কাজ করবো। আমরা প্রতিবেদন দিয়েছি কি দেয়নি সে বিষয়টি বলতে পারবো না। এ নিয়ে আমাদের কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেন বলে ফোন কেটে দেন।


জানা গেছে, ওই মামালার বাদী আজাহার আলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আতিকুল ইসলামের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করলে তাকে বলা হয়, আমরা আমাদের মত কাজ করছি; আপনি আপনার কাজ করেন। এভাবে দীর্ঘসময় পার হয়ে গেলেও উপজেলা নির্বাহী অফিসার সেই মামলার আদেশের সাটিফাইড কপি দীর্ঘদিন থেকে আটকে রাখার অভিযোগ করেন আজাহার আলী।


তিনি আরও বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিনে ইন্ধনে ওই এলাকায় জমি সংক্রান্ত বিরোধ লাগিয়ে দিয়ে চারটি খুনের ঘটনা ঘটেছে। চার খুনের মামলায় প্রায় ৮০ জন আসামীদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ১৬ জন গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওই চার খুনের মামলায় চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিনকে ১নং আসামী করে আদালতে মামলার আবেদন করা আছে। কিন্তু আদালত সেটি স্থগিত রেখেছে।


এছাড়াও ওই খুনের ঘটনার আগে ওই এলাকার তার হাতে গড়ে উঠা সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে একাধিক মারামারির ও হত্যা চেষ্টার ঘটনা ঘটে। এসব মারামারির ঘটনা নিয়ে চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে। তবে চেয়ারম্যান স্থানীয় প্রভাবশালী আওয়ামী লীগের নেতা হওয়ায় একটি মামলা ব্যাতিত অন্য মামলাগুলোতে অভিযোগপত্র থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন।


আজাহার আলী বলেন, এর আগেও একটি ফৌজদারি মামলায় চেয়ারম্যান জালালের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র আদালতে গৃহীত হলে জেলা প্রশাসক বরাবর তাকে বরখাস্ত করার আবেদন জানানো হয়। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক তৎকালীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানে আলমকে তদন্তের নির্দেশ দেয়। কিন্তু দেড় বছরেও তিনি তদন্ত প্রতিবেদক পাঠাননি। এরই মধ্যে চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিনের ইন্ধনে চারটি খুনের ঘটনা ঘটে। কিন্তু এখনো ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে গেছেন নিজ এলাকায় গডফাদার নামে পরিচিত জালাল চেয়ারম্যান।

শেয়ার করুন