০১ মে ২০২৪, বুধবার, ১১:৪৪:৩৪ পূর্বাহ্ন
চিনি দিয়ে তৈরি হচ্ছে খেজুর গুড়!
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৪-০১-২০২৪
চিনি দিয়ে তৈরি হচ্ছে খেজুর গুড়!

রাজশাহীতে দিন দিন কমছে খেজুর গাছের সংখ্যা। যে গাছগুলো আছে তাতেও তেমন রস মিলছে না। ফলে বাজারে খেজুর গুড়ের ব্যাপক চাহিদা থাকলেও গুড় তৈরির কাঁচামাল খেজুর রসের সংকট রয়েছে। আর এ অধিক চাহিদাকে কেন্দ্র করে গুড়ে মেশানো হচ্ছে ভেজাল। জেলার চারঘাট, বাঘা ও পুঠিয়া উপজেলাজুড়ে অসংখ্য ছোট-বড় ভেজাল গুড় তৈরির কারখানা গড়ে উঠেছে।


এ তিন উপজেলা সংলগ্ন রাজশাহীর সবচেয়ে বড় খেজুর গুড়ের হাট বসে পুঠিয়ার বানেশ্বর বাজারে। প্রতিদিন এ হাটে ৯০-১১০ টন এবং সপ্তাহে দুদিন বড় হাটে ১২০-১৫০ টন গুড় আমদানি হয়। এছাড়া চারঘাটের বাঁকড়া ও নন্দনগাছী, বাঘার বিনোদপুর, মনিগ্রাম ও আড়ানী এবং পুঠিয়ার ঝলমলিয়া হাটে শত শত টন গুড় বেচাকেনা হয়। প্রতিদিন ভোর থেকে ভ্যান, নসিমনসহ বিভিন্ন যানবাহনে আশপাশের এলাকা থেকে হাটে গুড় আসে।


রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, বর্তমানে চারঘাটে এক লাখ ৮৪ হাজার ২৭৫টি, পুঠিয়ায় পাঁচ লাখ ৭৭ হাজার ১২৫টি ও বাঘায় এক লাখ ২৩ হাজার ৫১২টি খেজুর গাছ রয়েছে। তবে প্রতিবছরই এসব উপজেলায় গড়ে ৫-৭ হাজার গাছ কমে যাচ্ছে।


সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, একটি খেজুর গাছ থেকে গড়ে চার কেজি গুড় উৎপাদন হয়। সে হিসেবে চারঘাটে ৭৩৭ টন, পুঠিয়ায় দুই হাজার ৩০৮ টন এবং বাঘায় প্রায় ৫০০ টন গুড় উৎপাদন হওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তবে তার চেয়েও কয়েকগুণ বেশি খেজুর গুড় আসছে বাজারে। যার বেশিরভাগ গুড়ই গাছিরা তৈরি করেন না, বরং গাছিদের রস কিনে নিয়ে কারখানায় আলাদাভাবে ভেজাল গুড় তৈরি করে বাজারে ছাড়া হচ্ছে।


খেজুর গুড় তৈরির কারিগরদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, খেজুর গাছ যা টিকে আছে, তাতে আগের মতো রস হয় না। ৮-১০টি গাছ মিলেও পর্যাপ্ত খেজুরের রস একদিনে পাওয়া যাচ্ছে না। রসের পরিমাণ কম হওয়ায় খাঁটি গুড় তৈরি করা কষ্টসাধ্য। গুড়ের পরিমাণ বাড়াতে অনেকে রসের সঙ্গে অর্ধেক পরিমাণ চিনি মিশিয়ে গুড় তৈরি করছেন। তাতে খেজুরের রসের ঘ্রাণ কিছুটা পাওয়া যায়। কিন্তু কিছু কারখানার মালিক গাছিদের কাছে থেকে নামমাত্র রস কিনে চিনি, আটা, কাপড়ের রং, চুন ও ফিটকিরি মিশিয়ে রাতের আঁধারে কয়েক মণ গুড় তৈরি করছেন। স্থানীয় হাট-বাজারে এসব গুড়ের সরবরাহ বেশি।


শেয়ার করুন