২৮ এপ্রিল ২০২৪, রবিবার, ০৫:৪৯:৫৮ অপরাহ্ন
সুন্নতে খতনা করাতে গিয়ে এবার লাশ হয়ে ফিরল শিশু আহনাফ
  • আপডেট করা হয়েছে : ২১-০২-২০২৪
সুন্নতে খতনা করাতে গিয়ে এবার লাশ হয়ে ফিরল শিশু আহনাফ

সুন্নতে খতনা করতে গিয়ে আবারও রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে শিশুর মৃত্যু হয়েছে। স্বজনদের অভিযোগ, লোকাল এনেস্থেশিয়া না দিয়ে মাত্রাতিরিক্ত জেনারেল এনেস্থেশিয়া দেয়াতেই শিশুটির মারা গেছে। তবে মালিবাগের জেএস হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, শিশুটির রোগ সম্পর্কে স্বজনরা না জানানোয় ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় তার মৃত্যু হয়।

বুক চাপড়ে মা খাইরুন নাহারের আর্তনাদ। সুস্থ-সবল ছেলেকে হাসপাতালে নিয়ে এলেও ফিরতে হয় তার নিথর দেহ নিয়ে।



রাজধানীর মালিবাগের জেএস হাসপাতাতে মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যার পর দশ বছর বয়সী ছেলে আহনাফ তাহমিদকে সুন্নতে খতনা করতে নিয়ে আসেন বাবা ফখরুল আলম। পরিবারের অভিযোগ, আসার পরই হাসপাতাল পরিচালক ডা. এস এম মুক্তাদিরদের নেতৃত্বে তাহমিদকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যায় হাসপাতালে দায়িত্বরত ডা. মাহাবুব এবং ডা. ইশতিয়াক আজাদ।


এর ঠিক ২০ মিনিট পর আহনাফকে দেখতে চায় পরিবারের সদস্যরা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বাধা দিলে শুরু হয় হট্টগোল। এরপরই তাকে মৃত ঘোষণা করে তারা।


পরিবার বলছে, প্রথমে লোকাল এনেস্থেশিয়া প্রয়োগ করার কথা থাকলেও দেয়া হয় জেনারেল এনেস্থেশিয়া। অপারেশনের কিছুক্ষণ পর জ্ঞান ফিরলেও বমি করে ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে যায় তাহমিদ।


স্বজনরা বলছেন, তাহমিদ হেঁটে হেঁটে হাসপাতালে এসেছে। এরপর সাড়ে ৮টার দিকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যায়। ৯টার পর সে মারা যায়।


ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া মৃত্যু- মানছেন সবাই। কিন্তু হাসপাতালের দাবি, তার রোগ সম্পর্কে সব তথ্য না জানানোয় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। যদি পরিবার সব খোলাখোলি বলত, তাহলে তারা এসব ওষুধ প্রয়োগ করতো না।


এমন ঘটনার পরও দায় এড়াতে ব্যস্ত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। জেনারেল এনেস্থেশিয়া দেয়া হয়নি জানিয়ে তাদের দাবি, আগে থেকেই শারীরিক সমস্যা ছিল তাহমিদের। সে ব্যাপারে পরিবারের পক্ষ থেকে সঠিক তথ্য না দেয়াতেই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।


 


হাসপাতাল পরিচালক ডা. এস এম মুক্তাদির দাবি করেন, ছেলেটির ওজন বেশি ছিল। বয়সও ১০ বছর পেরিয়ে গেছে। ফুসফুসে সমস্যা ছিল। কিন্তু সব তথ্য পরিবার জানায়নি।


এঘটনার সঙ্গে জড়িত দুজনকে আটক করতে পারলেও অপারেশনের পরপরই পালিয়েছেন একজন।


হাতিরঝিল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. রুহুল আমিন জানান, হট্টগোলের খবর পেয়েই উপস্থিত হন তারা।


শিশু আহনাফ তাহমিদ মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ছিলো।

 

এর আগে গত ৩১ ডিসেম্বর খতনার জন্য আয়ানকে বাড্ডার ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সকাল ৯টার দিকে শিশুটিকে অ্যানেসথেসিয়া দেয়া হয়। পরে জ্ঞান না ফেরায় তাকে গুলশানে ইউনাইটেড হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানকার পিআইসিইউতে (শিশু নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। ৭ জানুয়ারি মধ্যরাতে শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

 

আয়ানের বাবা-মায়ের অভিযোগ, ইন্টার্ন চিকিৎসক দিয়ে সুন্নতে খতনার সময় অতিরিক্ত অ্যানেসথেশিয়া দেয়ায় ঘটেছে এমন ঘটনা।


শেয়ার করুন