২১ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৫:৫৯:০৯ অপরাহ্ন
কর্তৃপক্ষের অনিয়মে ‘আদুভাই’ শিক্ষার্থীরা
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৬-০৩-২০২৪
কর্তৃপক্ষের অনিয়মে ‘আদুভাই’ শিক্ষার্থীরা

ইশতিয়াকুল হাসান রাজশাহীর বেসরকারি শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজের ছাত্র। এমবিবিএস প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়েছেন ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে। প্রথম বর্ষ ও দ্বিতীয় বর্ষ শেষে গত বছরের ১৩ নভেম্বর ভিত্তিমূলক পরীক্ষায় বসার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু তা হয়নি। ওঠা হয়নি তৃতীয় বর্ষে। তিনি এখনো প্রথম বর্ষেই পড়ে আছেন।


ইশতিয়াকুলের মতো প্রতিষ্ঠানটির ৪২ শিক্ষার্থীর প্রথম বর্ষ আর শেষ হচ্ছে না। এর মধ্যে ৩৭ জন নবম ব্যাচের; তাঁরা ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হয়েছেন। অন্য পাঁচজন অষ্টম ব্যাচের, তাঁরা ভর্তি হয়েছেন ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে। শিক্ষার্থী ইশতিয়াকুল হাসান বলেন, ‘আমরা প্রত্যেক শিক্ষার্থী ইতিমধ্যে ১৪ থেকে ১৮ লাখ টাকা দিয়েছি কলেজ কর্তৃপক্ষকে। কিন্তু তারা আমাদের ভিত্তিমূলক পরীক্ষায় বসানোর ব্যবস্থা করতে পারেনি।’


শিক্ষার্থীরা জানান, প্রতিষ্ঠার পর এ পর্যন্ত ৯টি ব্যাচে শিক্ষার্থী ভর্তি করেছে শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ। কিন্তু প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ না করায় প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলে (বিএমডিসি) নিবন্ধিত হতে পারেনি। রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ও প্রতিষ্ঠানটিকে অধিভুক্ত করেনি। ফলে প্রথম থেকে সপ্তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা মাইগ্রেশন নিয়ে অন্য প্রতিষ্ঠানে চলে গেছেন।


পরে এই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান হিসেবে যোগ দেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব জিল্লার রহমান। পরে সব সমস্যা কেটে গেছে জানিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ অষ্টম ও নবম ব্যাচেও শিক্ষার্থী ভর্তি করে। কিন্তু এই কলেজ এখনো রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয়নি। তাই এই পরীক্ষায় বসতে পারেননি শিক্ষার্থীরা। ফলে এখনো প্রথম বর্ষেই পড়ে আছেন তাঁরা। এর মধ্যে ২২ শিক্ষার্থী কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে প্রতারণার ২২টি মামলা করেছেন। তাঁরা অন্য প্রতিষ্ঠানে মাইগ্রেশনের দাবি জানাচ্ছেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ সাড়া না দেওয়ায় তাঁরা আদুভাই হয়ে পড়ে আছেন বলে আক্ষেপ ঝাড়েন।


এদিকে মাইগ্রেশনের দাবিতে ৩০ শিক্ষার্থী ও তাঁদের অভিভাবকেরা গত মঙ্গলবার কলেজে অবস্থান ধর্মঘট করেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা কলেজের শিক্ষক ডা. ফাতেমা সিদ্দিকাকে অবরুদ্ধ করেন। পরে তিনি শিক্ষার্থীদের যেকোনো প্রয়োজনে পাশে থাকবেন বলে স্ট্যাম্পে লিখিত প্রতিশ্রুতি দেন।


ডা. ফাতেমা সিদ্দিকা এই কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন। জামায়াত-শিবিরকে অর্থায়নের অভিযোগে সম্প্রতি গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তখন কলেজ কর্তৃপক্ষ তাঁকে অধ্যক্ষের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়। তবে প্রতিষ্ঠানটিতে তিনি এখনো শিক্ষক হিসেবে রয়েছেন।


ডা. ফাতেমা সিদ্দিকা বলেন, ‘আমি যেহেতু অধ্যক্ষ ছিলাম, তাই শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনে আমাকে পাশে পাবে।’


বিষয়টি নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরুজ্জামান স্বাধীনকে ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।


শেয়ার করুন