দাদন ব্যবসায়ীদের উৎপাত ও হুমকির কারনে রাজশাহীর বাগমারায় পরিবার ও নিজের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় থানায় সাধারন ডাইরী করলেন গনিপুর গ্রামের দুলাল হোসেন (৩৮) নামের এক যুবক।
তিনি উপজেলার গনিপুর গ্রামের মৃত-ইউসুফ আলীর ছেলে। নিরাপত্তার কারনে তিনি ও পরিবারের সদস্যরা বাড়ির বাহিরে যেতে পারছেন না বলে তিনি সাধারন ডাইরীতে উল্লেখ করেছেন।
জানা যায়, উপজেলার গনিপুর গ্রামের দুলাল হোসেন গত ৭ জুন একই উপজেলার আক্কেলপুর, দক্ষিন দৌলতপুর গ্রামের ১৬ জন দাদন ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অবৈধ ভাবে লেনদেনের অভিযোগে রাজশাহী পুলিশ সুপার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
অভিযোগের বিষয়টি জানতে পেরে গত ২৩ জুন বিকেলে অভিযুক্ত দাদন ব্যবসায়ী আক্কেলপুর গ্রামের আমিনুল ইসলাম ও আব্দুল মান্নান তাদের ব্যবহৃত মুঠোফোন থেকে বাদী দুলাল হোসেনকে প্রান নাশের হুমকি দেন। এক পর্যায়ে অভিযুক্তরা দুলাল হোসেনকে হত্যা করে লাশ গুম করার ঘোষনা দেন। বর্তমানে তিনি পরিবার পরিজন নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছেন বলে জানা গেছে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, কয়েক বছর পূর্ব থেকে আক্কেলপুর ও দক্ষি দৌলতপুর গ্রামের ২০/২৫ জন প্রভাবশালী ব্যক্তিরা সংঘবদ্ধ হয়ে সমিতির নামে অবৈধ দাদন ব্যবসা চালিয়ে আসছেন। তাদের দাদনের ফাঁদে পড়ে শত শত পরিবার পথে বসে গেছে। এছাড়াও দাদনের টাকা দিতে ব্যর্থ হয়ে দৌলতপুর ও আক্কেলপুর গ্রামের দুই যুবক আত্মহত্যা করেছেন।
তাদের অত্যাচারে অতিষ্ট এলাকার সাধারন মানুষ। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু ষ্ট্যাম্প ও স্বাক্ষরিত সাদা ব্যাংকের চেক উদ্ধারের মাধ্যমে থানায় মামলা করেছেন। মামলার পর থেকেই ক্ষিপ্ত হয়েছেন দাদন ব্যবসায়ীরা। তারা সংঘবদ্ধ হয়ে এলাকায় আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন।
দাদন ব্যবসায়ীদের অভিযোগের সত্যতা যাচাই বাচাইয়ের জন্য রাজশাহীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবতি আক্কেলপুর আসলে দাদন ব্যবসায়ীরা অভিযোগকারীদের উপর হামলা চালায়। ওই সময় পুলিশ উদ্ধারে এগিয়ে গেলে দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ তিন অভিযোগকারীকে পিটিয়ে আহত করেন।
ওই হামলায় দুলাল উদ্দীন নামের এক যুবকের মটরসাইকেল ভাংচুর করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা না নেয়ায় বেপরোয়া হয়ে উঠে ওই এলাকার দাদন ব্যবসায়ীরা। তাদের অভিযোগ পুলিশের এক শীর্ষ কর্মকর্তার হস্তক্ষেপের কারনেই দাদন ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারছেন না আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা।
এ ব্যাপারে বাগমারা থানার ওসি মোস্তাক আহম্মেদ বলেন, দুলাল হোসেন নামের এক যুবকের লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিশের উবধর্তন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে ঘটনার সত্যতা যাচাই বাচাই করে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।