১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ০২:০২:২৯ পূর্বাহ্ন
গাইবান্ধায় জনপ্রতিনিধির স্বজনদের ঘরে যাচ্ছে ত্রাণ
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৯-০৭-২০২৪
গাইবান্ধায় জনপ্রতিনিধির স্বজনদের ঘরে যাচ্ছে ত্রাণ

গাইবান্ধায় বন্যার পানি কমলেও পানিবন্দি মানুষজন চরম দুর্ভোগে বাস করছেন। ঘরে পানি থাকায় অনেকেই আশ্রয় শিবিরে ঠাঁই নিলেও তাদের কাছে কোনো ত্রাণের স্লিপ পৌঁছানো যাচ্ছে না। তাদের অভিযোগ আমরা উঁচু জায়গায় ভালোই আছি। যাদের ত্রাণের দরকার শুধু তাদেরকে বেছে বেছে ত্রাণের স্লিপ দেওয়া হচ্ছে বলে কামারজানির চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান জানান। তার বিরুদ্ধে ত্রাণ নিয়ে বিস্তর অভিযোগ, তিনি নাকি ওপারের চরাঞ্চলে বানভাসিদের কাছে এক ছটাক চালও পৌঁছে দেননি। ফলে দুর্গম চরাঞ্চলে যারা দীর্ঘদিন ধরে পানিবন্দি জীবনযাপন করছেন তাদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। সুন্দরগঞ্জের কেরানীঅর চরের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা রিলিফ চাই না। আমাদের বাড়িভিটা উঁচু করে দেওয়া হোক। আমরা দুর্যোগেও যেন গবাদি পশু নিয়ে নিরাপদে থাকতে পারি। স্থানীয় প্রশাসন থেকে বন্যার্তদের জন্য নগদ টাকা, জিআরএর চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বিতরণ করা হচ্ছে বিতরণকারীদের স্বজনদের মধ্যে। ফলে সাধারণ বানে ভাসা মানুষ রিলিফের স্লিপ পাচ্ছে না। কয়েকটি আশ্রয়ণ প্রকল্পের আশ্রিতদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল রিলিফের চাল তাদের ধারেকাছেও নেই। সুন্দরগঞ্জের কেরানির চরের অবস্থা আরও ভয়াবহ। একে তো নদী ভাঙনে ২শ পরিবার গৃহহারা। তারা কোথায় ঠাঁই নিয়েছে কেউ জানে না। সেখানে আর মাত্র ৫০টি পরিবার আছে। তাদের দিকে ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যদের কোনো নজর নেই। তারা নাকি ওমুকের লোক। তাই রিলিফের চাল তাদের জন্য নয়।


পোড়ার চরের বাসিন্দা রেজা মেম্বার জানান, আামি মেম্বার ছিলাম এটাই আমার অপরাধ। সেজন্য অন্য চেয়ারম্যান-মেম্বাররা পোড়ার চরের দুর্গতদের মধ্যে কোনো রিলিফ বা স্লিপ দেয়নি। এখানে অনেক দুর্যোগ তবু তারা এখানে দেয় না। তিনি বলেন, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি, সাঘাটা ও গাইবান্ধা সদর উপজেলার ১৬৫টি চরাঞ্চলে খাবার পানি ও ত্রাণের হাহাকার অবস্থা। যারা পাচ্ছে তারা সবার কাছ থেকেই পাচ্ছে। সরকারিভাবে যেসব ত্রাণ মানুষের মধ্যে বরাদ্দের জন্য জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে বিতরণ করা হচ্ছে তা যাচ্ছে তাদের স্বজনদের বাড়িতে। চেয়ারম্যান-মেম্বাররা প্রকৃত বন্যার্তদের মধ্যে বিতরণ করার সরকারি খাতাপত্রে লেখা থাকলেও বস্তায় বস্তায় মালামাল চলে যাচ্ছে একই গোষ্ঠী বা একই পরিবারের ৫ জনের কাছে। কাজেই প্রকৃত বন্যার্তরা ত্রাণ না পেয়ে হতাশ হয়েছেন। কয়েকদিনে আশ্রয় কেন্দ্রে ঘুরে ফুলমতি, আফরোজা, চুমকি, নাইমুল, আতোয়ার, সেরাজুলসহ বেশকিছু বন্যার্ত মানুষ বলেন, হামরা কোনো রিলিফ স্লিপ পাই নাই। আমরা গেলে বলে চাউল শেষ। তাদের দাবি সরকারি কর্মকর্তার তদারকিতে ত্রাণের চাল বিতরণ করা হোক বন্যার্তদের মধ্যে।


শেয়ার করুন