২৩ নভেম্বর ২০২৪, শনিবার, ০২:২৩:৩৩ অপরাহ্ন
শেখ হাসিনার নামে যত মামলা
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৪-০৮-২০২৪
শেখ হাসিনার নামে যত মামলা

গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নামে এখন পর্যন্ত তিনটি মামলা করা হয়েছে। এর মধ্যে দুটি হত্যা মামলা আর একটি অপহরণ মামলা। অন্যদিকে তার নামে গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেও একটি অভিযোগ এসেছে। 


জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতা গণ-আন্দোলনে রাজধানীর মিরপুরে কলেজছাত্র ফয়জুল হোসেন রাজন নিহতের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৪ জনের নামে হত্যা মামলা করা হয়েছে।


বুধবার (১৪ আগস্ট) ঢাকার সিএমএম আদালতে এ মামলাটি করা হয়।

এ মামলাটির অন্যতম আসামিদের মধ্যে নাম আছে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের। কাফরুল থানাকে মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।


এদিকে রাজধানীর উত্তরা থেকে ৯ বছর আগে গুম করার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে গুমের একটি মামলা করা হয়েছে।


ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা শাকিলা সুমু চৌধুরীর আদালতে এ আবেদন করেন ভুক্তভোগী সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সোহেল রানা। আদালত বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড করে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশকে মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।

এর আগে মঙ্গলবার সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক দুই মন্ত্রীসহ সাতজনের বিরুদ্ধে আরো একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে রাজধানীর একজন ব্যবসায়ী বাদী হয়ে এই মামলা করেন।


সেই মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে আছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক পুলিশের মহাপরিদর্শক আব্দুল্লাহ আল মামুন, যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার, সাবেক ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদ ও ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান। 


এদিকে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে একটি অভিযোগ করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার ধানমণ্ডিতে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় অভিযোগটি করেন সাভারে নিহত এক শিক্ষার্থীর বাবা। 


আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী এম এইচ তামিম জানান, নিয়ম অনুযায়ী এখন অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে সত্যতা যাচাই করবে তদন্ত সংস্থা। এরপর মামলার জন্য পাঠানো হবে ট্রাইব্যুনালে।


 

অভিযোগে বলা হয়, গত ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের সমূলে বা আংশিক নির্মূল করার লক্ষ্যে হত্যা করা হয়। এটি গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ হওয়ার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন অনুযায়ী এর বিচার হওয়া প্রয়োজন। 


আর এই মানবতাবিরোধী অপরাধের পরিকল্পনাকারী ও নির্দেশদাতা হিসেবে আসামি করা হয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। এতে তিনি ছাড়াও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ আল‌ মামুন, সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, র‍্যাবের সাবেক মহাপরিচালক হারুন অর রশিদকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি অপরাধী সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ যুবলীগেরও বিচার দাবি করা হয়েছে অভিযোগে। 


এদিকে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বুধবার সচিবালয়ে জানিয়েছেন, জুলাই হত্যাকাণ্ডকে মানবতাবিরোধী হিসেবে বিচারের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তিনি জানান, ১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন, ২০০৯ ও ২০১৩ সালে সংশোধিত হয়েছে। এই আইনে জুলাই ও আগস্টে গণ-আন্দোলনে নিহতের ঘটনার বিচার সম্ভব। গণহত্যার তদন্তে জাতিসংঘের সহযোগিতাও নেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি। 


শেয়ার করুন