৩০ জানুয়ারী ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ০৮:২৯:০০ অপরাহ্ন
কাটছাঁট করে ৪১ পদ অনুমোদন
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৭-০১-২০২৫
কাটছাঁট করে ৪১ পদ অনুমোদন

জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদপ্তর গঠনে প্রস্তাবিত ৬৩টি পদ ও অন্য সুযোগ-সুবিধা কাটছাঁট করে অনুমোদন দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। ৪১টি পদ ও ৮টি যানবাহন বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিয়েছে মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে ৭টি পদে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে জনবল নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে। একইভাবে আকার ছোট করা হয়েছে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অনুবিভাগেও। 


প্রস্তাবিত ২৭টি পদের বিপরীতে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ১৩টি। দু-এক দিনের মধ্যে চূড়ান্ত সাংগঠনিক কাঠামো (অর্গানোগ্রাম) অর্থ বিভাগে পাঠানো হবে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে থেকে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠানো প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে।


৭ জানুয়ারি দুটি পৃথক অর্গানোগ্রামের মাধ্যমে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে জনবলের প্রস্তাব পাঠায় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। এর আগের দিন (৬ জানুয়ারি) মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের ‘এ্যালোকেশন অব বিজনেস’ সংশোধনের অনুমতি দেয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। ১২ জানুয়ারি মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের পাঠানো জনবলের প্রস্তাব নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠক করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এতে সভাপতিত্ব করেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. এরফানুল হক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হাসনা জাহান খানম, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (সওব্য-১ অধিশাখা) শাহীন আরা বেগম ও সহকারী সচিব মো. আব্দুর রশীদ। 


মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বীরপ্রতীক যুগান্তরকে বলেন, আমাদের প্রত্যাশিত জনবল কমানো হয়েছে। তবে শুরুটা হোক। এরপর প্রয়োজন মোতাবেক পরিধি বাড়ানো হবে। 


জানা গেছে, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদপ্তর’ গঠন করতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে ৬৩টি পদ ও ৮টি যানবাহন এবং ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অনুবিভাগ’র ২৭টি পদ ও ২টি যানবাহন সৃজনের প্রস্তাব করা হয়।


জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পর্যালোচনা বৈঠকে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদপ্তর’র জন্য পরিচালক, উপ-পরিচালক ও সহকারী পরিচালকের পদ সৃজন করা হলে সাংগঠনিক কাঠামোর ধাপ অনুসারে অতিরিক্ত মহাপরিচালক পদ সৃজনের প্রয়োজন নেই বলে সবাই মত দেন।


এ ছাড়া উপপরিচালকের (প্রশাসন ও অর্থ) অধীন সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ও সহকারী পরিচালক (অর্থ) আলাদা শাখা না করে ১টি শাখা এবং উপপরিচালক (কল্যাণ) ও উপপরিচালকের (পরিকল্পনা ও গবেষণা) জন্য আলাদা কোনো পদ সৃষ্টি না করে উপপরিচালকের ১টি পদ রাখা যেতে পারে বলে সিদ্ধান্ত হয়। আইসিটি সেলের জন্য প্রোগ্রামার ও সহকারী মেইনটেন্যান্স ইঞ্জিনিয়ারের পদ সৃষ্টি না করে ১টি সহকারী প্রোগ্রামার, ২টি কম্পিউটার অপারেটর ও ১টি অফিস সহায়কের পদের সুপারিশ করা হয়। প্রস্তাবে প্রেরিত খসড়া নিয়োগ বিধিমালা পর্যালোচনা করে সভাপতি বলেন, ১৪তম গ্রেডের উচ্চমান সহকারী পদ রয়েছে। তাদের পদোন্নতির সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে উপসহকারী পরিচালকের পদ সৃজন করা প্রয়োজন। এছাড়াও প্রস্তাবিত ৮টি যানবাহন টিওএন্ডইতে অন্তর্ভুক্তকরণে প্রাধিকার অনুসারে মহাপরিচালকের জন্য ১টি জিপ গাড়ি ও অন্য কর্মকর্তাদের জন্য ১টি মাইক্রোবাস টিওএন্ডইতে অন্তর্ভুক্ত করার মতো দেওয়া হয়। 


এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাংগঠনিক কাঠামোতে ২টি শাখা সৃষ্টির লক্ষ্যে সিনিয়র সহকারী সচিব/সহকারী সচিব ২টি ক্যাডার পদ স্থায়ী ও অস্থায়ী ১১টি সহায়ক পদসহ ১৩টি পদ রাজস্ব খাতে সৃজনে সুপারিশ গৃহীত হয়। আইসিটি সেলের জন্য প্রস্তাবিত সিনিয়র সিস্টেম অ্যানালিস্ট ও সহকারী প্রোগ্রামার পদ দুটি সৃজনের প্রয়োজনীয়তা নেই মর্মে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।


জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদপ্তর গঠনসহ প্রেষণে নিয়োগযোগ্য ৮টি পদসহ ৩৪টি পদ অস্থায়ীভাবে রাজস্ব খাতে ও আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগযোগ্য ৭টি পদসহ মোট ৪১টি পদ সৃজনে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সর্বসম্মতিক্রমে সুপারিশ প্রদান করে। 


জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদপ্তর গঠনে গুরুত্বারোপ করে অর্গানোগ্রামে জানানো হয়- ‘মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদপ্তরের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালিত হবে। এই গণ-অভ্যুত্থানে শহিদ ও আহত ছাত্র-জনতার তালিকা সংরক্ষণ এবং ডাটাবেজ রক্ষণাবেক্ষণ, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহিদ পরিবার ও আহত ছাত্র-জনতার কল্যাণ সাধন করবে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহিদ পরিবার ও আহত ছাত্র-জনতার গেজেট প্রকাশ ও গণকবর সংরক্ষণ, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ইতিহাস এবং স্মৃতি সংরক্ষণের জন্য গবেষণা, নীতিমালা প্রণয়ন ও এ সংক্রান্ত কার্যক্রম গ্রহণ করবে। প্রতিবছর ‘৫ আগস্ট’ জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস হিসাবে উদযাপিত হবে।’


জানা গেছে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহিদ পরিবার ও আহতদের ৬৩৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে পর্যায়ক্রমে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রতি শহিদ পরিবার ৩০ লাখ করে টাকা পাবে। এর মধ্যে ১০ লাখ টাকা এফডিআর। আহতদের সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা দেওয়া হবে। প্রতি মাসে শহিদ পরিবার ও আহতরা মাসিক ভাতা পাবেন। জানুয়ারি ২৩২ কোটি ৬০ লাখ টাকা দেওয়া হবে, যা আগামী সপ্তাহ থেকেই দেওয়া শুরু হবে। আগামী অর্থবছরের শুরুতে জুলাইয়ে বাকি ২০ লাখ টাকা দেওয়া হবে। আর এসব কর্মকাণ্ড পরিচালিত হবে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদপ্তর’র মাধ্যমে।


শেয়ার করুন