০১ জুলাই ২০২৫, মঙ্গলবার, ০৫:৫৫:৩৮ অপরাহ্ন
পদত্যাগ করলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের আহ্বায়ক রাশেদ খান
  • আপডেট করা হয়েছে : ০১-০৭-২০২৫
পদত্যাগ করলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের আহ্বায়ক রাশেদ খান

জুলাইয়ের প্রথম প্রহরে পদত্যাগ করলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোর জেলার আহ্বায়ক রাশেদ‌ খান। একইসঙ্গে নবগঠিত রাজনৈতিক দল এনসিপি এবং এর ছাত্র কিংবা যুব উইংয়ের সঙ্গেও তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে ঘোষণা দিয়েছেন।


জুলাইয়ের প্রথম প্রহরে (সোমবার রাত ২টায়) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তার অ্যাকাউন্টে এক স্ট্যাটাসে পদত্যাগের কথা জানান। 


ওই পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোর জেলার আহ্বায়ক পদ থেকে আমি স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নিচ্ছি।


একই সঙ্গে এনসিপি ও এর ছাত্র কিংবা যুব উইংয়ের সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই৷’ 

তার এ ঘোষণার পর মন্তব্য ঘরে অনেকে তার এ সিদ্ধান্তে হতবাক হয়েছেন। আবার অনেকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। কেউ কেউ সমালোচনা করেছেন। তার জবাবে রাশেদ খানও মন্তব্য করেছেন।


তিনি লিখেন- ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, যশোর জেলার আহ্বায়কের দায়িত্ব থেকে নিজেকে সরিয়ে নিচ্ছি। আমি সবসময় আমার শ্রম, মেধা, অর্থ, ধৈর্য ও সময় ব্যয় করে সাধ্যমত চেষ্টা করেছি সংগঠনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে; কতটা পেরেছি সেটা মূল্যায়ন করার দায়িত্ব আপনাদের। কিন্তু আমি আমার নিজেকে যদি মূল্যায়ন করি, সেক্ষেত্রে বলবো, আরও ভালোকিছু হওয়া উচিত ছিল।’


‘আমি একজন আর্টিস্ট, ব্যক্তিগতভাবে আমি দীর্ঘদিন যাবত পেশাগত কোনো কর্মে যুক্ত না থাকায় অর্থকষ্টে আছি।


আমার বিরুদ্ধে যেসব অর্থ বিষয়ক/ব্যাংক ব্যালেন্স বিষয়ক মুখরোচক গল্প উৎপাদন করা হয়, তা নিতান্তই কল্পনাপ্রসূত এবং রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত! কারণ আমার বাস্তবতা আমি নিজে ফেইস করি। তবু যদি কারো সন্দেহ থেকে থাকে, তাহলে গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে তদন্ত করে দেখার অনুরোধ রইলো। আমি এই চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয়ার জন্য সবসময় প্রস্তুত আছি। এতোটুকু বলতে পারি, জুলাই বিক্রি করিনি আমি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লিখিত কোনো রাজনৈতিক মতাদর্শ না থাকলেও আমার নিজস্ব রাজনৈতিক মতাদর্শ আছে, সেটা হয়তো অনেকের সাথে মিলবে না।

এই প্লাটফর্মে থেকে আমার সহযোদ্ধাদের সঙ্গে অসংখ্য ভালো কাজ করার সুযোগ হয়েছে, তার জন্য আমি গর্বিত। আমার শ্রেণির লড়াই, ন্যায্যতার লড়াই জারি থাকবে।’

তিনি লিখেন, ‘দীর্ঘদিন যাবত কেন্দ্রীয় কমিটির কোনো নির্দেশনা না থাকায়, সংগঠন সারা দেশেই স্তিমিত হয়ে গেছে। স্ব স্ব ইউনিট থেকে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে অনেকসময় কেন্দ্রীয় নেতাদের বাধার সম্মুখীন হতে হয়। একইসঙ্গে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ এনসিপি, যুবশক্তি, বাগছাস ইত্যাদি রাজনৈতিক প্লাটফর্মে যুক্ত হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন একটি কমন প্লাটফর্ম হলেও এর নবগঠিত কমিটি 'এনসিপি' দ্বারা প্রভাবিত একটি প্রহসনমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে গঠন করা হয়েছে, যা বিভিন্ন জেলার নেতৃবৃন্দের মাঝে অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে! তবু জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্লাটফর্ম হিসেবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতি সবসময় শুভকামনা থাকবে। গণমানুষের কল্যাণে তাদের নিবেদনকে আমি সবসময় শ্রদ্ধার চোখে দেখবো।’

 

প্রসঙ্গত, দুই দিন আগে গত ২৮ জুন রাতে রাশেদ খানের নেতৃত্বে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি অংশ যশোর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমম্বয়কারী জোনায়েদ সাকির সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকটি সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার দেননি সাকি।


শেয়ার করুন